শ্রীমঙ্গলে কল্পিত সাত মাজার সম্পর্কে গোয়েন্দা রিপোর্ট

    0
    245

    “আল্লাহর অলিগণের নামে ছলচাতুরীকারি প্রতারক মুতাহিরচক্রের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে ভুয়া ও কাল্পনিক মাজারের কারনে প্রকৃত মাজারের সম্মান হুমকির মুখে পরবে এবং সরলমনা মাজারভক্তরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে।”

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৬আগস্ট,নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার পূর্র্ব শ্রীমঙ্গল (লালবাগ) গ্রামের মনাইউল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুরের পশ্চিম পাশের বাড়ির মৃত নূর মিয়ার ছেলে বিদেশ ফেরত “মোতাহির” একটি অপরাধীচক্র নিয়ে পরিকল্পিতভাবে তার নিজের বসত ভিটায়  স্থানীয় ও বহিরাগত রাজ মিস্ত্রিদের দিয়ে দিনে ও রাতে কাজ করে পুর্ব পশ্চিম ও উত্তর দক্ষিন বিভিন্ন মুখী ৭টি কবরাকৃতি বানিয়ে তার পিতার নামানুসারে নূরে দরবারিয়া সাইন বোর্ড টাঙ্গিয়ে কল্পিত ৭ পীরের মাজার নাম ধারণ করে কথিত মাজার  ব্যবসা গড়ে তুলে অর্থ আত্মসাৎসহ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে স্থানীয় সচেতনমহলের অভিযোগ উঠে।

    পরে স্থানীয় সচেতনমহল চলতি বছরের গত ২২ ফেব্রয়ারী পুর্ব শ্রীমঙ্গল (লালবাগ) এলাকাবাসীর স্বাক্ষরিত ৭ পৃষ্ঠা সম্বলিত ভূয়া মাজার ও ভন্ড পীরের নানান কু-কর্মের বিরুদ্ধে এবং ভূয়া মাজার উচ্ছেদের জন্য মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক,জেলা পুলিশ সুপার,শ্রীমঙ্গলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা,উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, কমান্ডিং অফিসার শ্রীমঙ্গল র‌্যাব ৯, শ্রীমঙ্গল থানা অফিসার ইনর্চাজ ও ৩নং ইউপি চেয়ারম্যান বরাবরে পৃথক পৃথক অভিযোগ পত্র দাখিল করা হয়েছিল।

    এলাকাবাসির অভিযোগে জানা যায় যে, শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৩ নং শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নের পূর্ব শ্রীমঙ্গল (লালবাগ) গ্রামের মৃত নূর মিয়ার ছেলে মোতাহির ৪/৫ বছর আগ থেকে তার বসত ভিটায় কপ্লিত ৭টি কবরস্থান বানিয়ে ৭ পীরের মাজার নাম ধারণ করে একটি মিথ্যা ও ভূয়া মাজার রাতের আধাঁরে তৈরী করে।লোকমুখে প্রচার চালিয়ে মানুষের মধ্যে এই ভূয়া মাজারের আকর্ষণ সৃষ্টি করে উক্ত মাজারের কবর গুলো পীরের বংশধর ও জ্বীনের বাদশা হিসেবে নিজেকে জাহির  করছে। পূর্ব শ্রীমঙ্গল এলাকার মৃত নূর মিয়ার ৩য় ছেলে মতাহির মিয়া পূর্ব পরিকল্পীত প্ল্যান বাস্তবায়নের লক্ষে একটি মিথ্যা ভূয়া মাজার তৈরী করে লোকমুখে প্রচার করে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে অবৈধভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা।

    ভন্ড মোতাহিরের পূর্ব পরিকল্পীত পরিকল্পনা অনুযায়ী মাজার নামধারী ভূয়া মাজারকে ৭ পীরের মাজার হিসেবে আখ্যায়িত করে ইসলাম ধর্মের নামে প্রতারণা করছে। ভন্ড মোতাহির ভূয়া মাজারে ৪/৫ টি কুকুর লালন পালন করে । আর এই কুকুর গুলো তার কল্পিত মাজারের ভিতরে বাহিরে অবস্থান করে,দুরদূরান্ত থেকে কল্পিত মাজারে আসা বিভিন্ন প্রকার শিন্নী কুকুর গুলোকে আগে দেন তার পরে ভক্তদের দেওয়া হয় বলে জানা যায়।

    এলাকার বিশিষ্ট মুরব্বি মকবুল মিয়া জানান,৫/৭ বছর আগে ভন্ড পীর নামক মোতাহিরের একটি টং দোকান ছিল আর এই টং দোকানে বসেই সে আমাদের এলাকার অনেকের সাথে বেশি কামাইয়ের (রুজি) পরামর্শ করত। বলতো তার কু-বুদ্ধিমত্তার কথা। বিদেশে গিয়েও কিছু না করার ব্যর্থতার কথা। তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পায়তারায় বারবার চাপ প্রয়োগ করেন অন্য ভাইদের। তড়িৎ গতিতে পিতৃ সম্পদ ভাগ বাটোয়ারা করার জন্য। তার চাপের কারনে বিগত ৫/৭ বছর আগে তাদের পিতৃ সম্পদ ভাইদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করা হয়। আর তখন থেকেই জিনের বাদশা ভন্ডপীর মোতাহিরের নানান রূপ প্রচার পেতে থাকে।

    এই বছরের ফেব্রয়ারী থেকে শ্রীমঙ্গলে কল্পিত ৭ পীরের ভূয়া মাজার নিয়ে এলাকাবাসির মাঝে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। এলাকাবাসির পক্ষ থেকে মানববন্ধনসহ নানান কর্মসূচি পালন করা হয়েছিল। তখন এ ঘটনার খবর পেয়ে গত ২৬ ফেব্রয়ারী রবিবার ৪.৩০ মিনিটে তাদের চক্রের একজনের আমন্ত্রণে সংবাদ সংগ্রহের জন্য  গেলে আলাপচারিতায় কল্পিত ভূয়া ৭ পীরের মাজারের প্রমান মিলে,এক পর্যায়ে আরও তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করতে গেলে আমার সিলেট টোয়েন্টিফোর ডটকম এর সম্পাদক মোহাম্মদ আনিছুল ইসলাম আশরাফী,জাতীয় দৈনিক আমার বার্তা শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি ও আমার সিলেট টোয়েন্টিফোর ডটকম’র নিজস্ব প্রতিবেদক মো: জহিরুল ইসলাম এবং আমার সিলেট টোয়েন্টিফোর ডটকম’র নিজস্ব প্রতিবেদক কাজল শীল প্রমুখ হেনস্তার শিকার হন।

    পরে স্থানীয়রা ও প্রশাসন খবর পেয়ে অবরুদ্ধ সাংবাদিকদের ক্যামেরাসহ উদ্ধার করেন। উদ্ধার হওয়ার পর ঐ দিন রাতে সাংবাদিকরা ঘটনার বিবরণ দিয়ে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হলে অভিযোগটি পুলিশ আমলে নিলেও তখনকার দায়িত্বরত তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগের বিষয়ে কোন প্রকার আইনী ব্যবস্থা আজও গ্রহণ করেনি। বরং উল্টো মাজারের পক্ষে নানান ভূমিকা নিয়েছিল প্রশাসনের কিছু লোক।

    অপরদিকে ভন্ড মোতাহির তার সঙ্গবদ্ধ অসাধু চক্র ও অবৈধ সুবিধাভোগিদের যোগসাজশে কল্পিত ৭ মাজারের পক্ষে সাফাইনামা তৈরী করে ২৭ ফেব্রয়ারী স্থানীয় একটি প্রেসক্লাবে মিথ্যা,ভিত্তিহীন ও সাজানো তথ্য তুলে তাদেরই আমন্ত্রনে  সংবাদ সংগ্রহকারীদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন।

    এদিকে ঘটনার দীর্ঘ পাঁচমাস অতিবাহিত হওয়ার পর  ৫ আগষ্ট শনিবার বিকেলে শ্রীমঙ্গল থানার এস আই ফজলে রাব্বি,এ এস আই নূরে আলমসহ তিন সদস্যের একটি দল কল্পিত ৭  মাজার পরিদর্শন করেন। ভুয়া মাজার পরিদর্শনকালে পুলিশের সাথে ভন্ড মোতাহিরের মাজার বন্ধের বিষয়ে কথা হয় বলে এস আই রাব্বি জানান,এসময় উল্টো পুলিশকে  মুতাহির তার হাতের আঙ্গূল উপর দিকে তাক করে জানান সব তিনি জানেন?

    পরিশর্দন শেষে সাংবাদিকদের  প্রশ্নের জবাবে  ওই তদন্ত কর্মকর্তা জানান,”বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় অতীতে পূর্ব শ্রীমঙ্গলে কোন ৭ পীরের মাজারের অস্তিত্ব ছিল না এটি একটি কল্পিত ও ভূয়া মাজার। এর কার্যক্রম বন্ধের নিদের্শে রয়েছে। তাই  পুলিশ হেডকোয়ার্টারের নির্দেশে কল্পিতমাজার বন্ধের বিষয়টি মোতাহিরসহ তার অনুসারীদের  জানাতে এসেছি।”

    এলাবাসির দাবী এই ভন্ড মোহাতির ও তার কল্পিত ভূয়া ৭ পীরের মাজারে সাথে যারা জড়িত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাদেরকে গ্রেফতার করতে হবে।এবং অবিলম্বে কল্পিত সাজানো ৭ পীরের মাজার উচ্ছেদ করে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

    এ ব্যাপারে প্রকৃত মাজার ভক্তদের দাবী “আল্লাহর অলিগণের নামে ছলচাতুরীকারি প্রতারক মুতাহিরচক্রের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে ভুয়া ও কাল্পনিক মাজারের কারনে প্রকৃত মাজারের সম্মান হুমকির মুখে পরবে এবং সরলমনা মাজারভক্তরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে।”আপডেট

    পূর্বের একটি সংবাদ  নিম্নে দেখুন-

    শ্রীমঙ্গলে কল্পিত সাত মাজার বানিয়ে অর্থআত্মসাতের অভিযোগ