শ্রীমঙ্গলে কল্পিত ৭পীরের মাজার পরিদর্শনে সহকারী পুলিশ সুপার

    0
    201

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৪মার্চ,নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সঙ্গবদ্ধ চক্রের পরিকল্পিত ৭ টি কবরাকৃতিতে ৭ পীরের মাজার নূরে দরবারিয়া নামে জৈনক মোতাহিরের তৈরীকৃত মাজার পরিদর্শন করলেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শ্রীমঙ্গল সার্কেল আশফাকুজ্জামান  খন্দকার।

    ৩ নং শ্রীমঙ্গল ইউপির লালবাগের (পুর্ব শ্রীমঙ্গল) মৃত নূর মিয়ার ছেলে মোতাহির মিয়ার দাবী তিনি ঐশী ইশারা পেয়ে নিজ বাড়িতে ৭ বছরে ৭ টি মাজার পেয়েছেন,যা নাম বিহীন  ৭ পীরের কল্পনায় ৭ টি কবর দিয়ে মাজারাকৃতি তৈরী করে ব্যবসা করে যাচ্ছেন।মোতাহির চক্র ওলি আওলিয়াদের নামে সাজানো মাজার তৈরী করে  পবিত্র মাজার ও ইসলাম ধর্মের  অবমাননা করে চলেছেন এমন অভিযোগ দীর্ঘ ৩/৪ বছরের।তিনি নিজেকে কল্পিত মাজারের খাদেম ও ঐশী ইঙ্গিতের বাহক হিসেবে দাবী করে কখনো জিনের বাদশা কখনো স্ব-ঘোষিত অলি বলে প্রচার করে বেরাচ্ছে এবং পুকুর ঘাঁটের পাথরে ভক্তদের চুমু দিতে উতসাহ যোগাচ্ছেন বলে স্থানীয়দের থেকে অভিযোগ উঠেছে। মোতাহির কর্তৃক ভূয়া ৭টি কবরস্থান বানিয়ে ৭ পীরের মাজার নাম ধারন করে জনগণের সাথে প্রতারনা করছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের   অভিযোগ। এই অভিযোগ এনে  প্রশাসনের কাছে গত ২২ ফেব্রুয়ারি সম্মিলিত এলাকাবাসি  ৭ পৃষ্ঠার স্বাক্ষর সম্বলিত একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

    এখানেই সাতটি কবরের আকৃতিতে কল্পিত সাত মাজার!ছবি আমার সিলেট

    এই অভিযোগের পরিপেক্ষিতে শুত্রুবার সকাল ১১ টায় ঘটনাস্থলে পুর্ব পরিকল্পিত ৭ পীরের তৈরী মাজার পরিদর্শন করতে আসেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শ্রীমঙ্গল সার্কেল আশফাকুজ্জামান খন্দকার,শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম নজরুল ইসলাম , শ্রীমঙ্গল থানার সেকেন্ড অফিসার এস আই সৈয়দ মাহবুবুর রহমান,এসময় উপস্থিত ছিলেন পূর্ব শ্রীমঙ্গল জামে মসজিদের ইমাম মাওঃ মো: জয়নুল আবেদীন,শ্রীমঙ্গল ৩ নং ইউপি চেয়ারম্যান ভানু লাল রায়,লাল বাগ এলাকার ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম রাজা,বিভিন্ন  মিডিয়ার সাংবাদিক এবং লালবাগ এলাকার গণ্যমান্য  মুরুব্বিসহ শতাধিক লোক।

    এ সময় সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শ্রীমঙ্গল সার্কেল আশফাকুজ্জামান  খন্দকার কথিত ৭ পীরের নূরে দরবারিয়া মাজারের প্রতিষ্ঠিাতা মোতাহিরকে কথিত মাজার ও ৭ পীরের  ৭টি কবর সম্পর্কে  বেশ কিছু প্রশ্ন করেন। কিন্ত  প্রশ্নের উত্তর পাশ কাটিয়ে স্ব ঘোষিত মাজার প্রতিষ্ঠাতা  মোতাহির উপরের দিকে ঈঙ্গিত করে বলেন তিনি জানেন(মানে আল্লাহ জানেন) “?” । অপর এক প্রশ্নের জবাবে মোতাহির তার পিতার নাম ছাড়া আর কিছুই বলতে পারেননি এসময় মোতাহির তার চোখ বন্ধ করে আধ্যাত্মিক ভাব দেখিয়ে কথা বলেন। সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার তিনি এলাকাবাসিকে বলেন “আমরা দুই পক্ষকে থানাতে ডেকে বসে বিষয়টার সমাধান করবো।এ বিষয়ে  কেহ যেন  আইন শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করেন তিনি অনুরোধ করেন ।

    পরে শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম নজরুল ইসলাম এলাকাবাসিকে উদ্দেশ্য করে শৃঙ্খলা রক্ষার ব্যাপারে বলেন, “কেউ মাজার নিয়ে বিশৃঙ্খলা করলে আমি যদি এই চেয়ারে বসা থাকি তাহলে তার মাঝা ভেঙ্গে দেবো, সে যেই হউক।তিনি আরোও বলেন ,দু-পক্ষের লোকজন নিয়ে শান্তি পূর্ণ ভাবে এই সমস্যার সমাধান আমরা করবো।কিছু দিন পুর্বে নাসির নগর এলাকার উদাহরন টেনে তিনি বলেন কোন সমস্যা তৈরি হলে কারো জন্যে সুফল হবেনা।”

    এ সময় স্থানীয় চেয়ারম্যান ভানু লাল রায় বলেন-মন্দির বা মাজার তৈরির পদ্ধতি আছে আমি হয়তো জানিনা,যে কোন ধর্মে নিয়মের বাইরে কিছু করলে অন্যরা অসন্তুষ্ট থাকবে তাই আমরা এক স্থানে বসলে  ঘটনাটা পরিস্কার হবে।পরে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা প্রশাসন গ্রহন করবে।

    এসময় এলাকাবাসি সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শ্রীমঙ্গল সার্কেলকে জানায় , আমরা কথিত ৭ পীরের মাজার তৈরীকারী মোতাহির ও তার সহযেগীদের আইনী শাস্তি চাই। কথিত মাজার তৈরীকারীর বাড়ির সামনে আজ থেকে ৪/৫ বছর আগে যে জায়গাতে ৭ পীরের মাজার তৈরী করেছে মোতাহির এর বাড়ির সামনে অতীতে গোবরের গর্ত ছিল এবং গোবরের গর্তের সামনে একটি টং দোকান ছিল।

    এসময় পূর্ব শ্রীমঙ্গল জামে মসজিদের ইমাম মো: জয়নুল আবেদীন জানান. এখানে অতীতে কোন কারো কবর ছিল না । সে নিজের মনগড়া রাতের আধাঁরে ভূয়া মাজার তৈরী করে। তাকে অনেক বার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে যে এই জায়গাতে কাদের কবর রয়েছে ? এবং এই ৭ পীরের নাম কি ? মোতাহির কথিত ৭ পীরের নাম বলতে নারাজ । তার সকল উত্তর সব কিছু আল্লাহ জানেন বলে ইশারা দেন। তিনি কোন পীরের মুরিদ সে নিজেও জানে না,মাজার সম্পর্কে তার কোন ধারণা নাই এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ,ভূয়া নিজের মনগড়া। ভূয়া মাজার  তৈরী করে ধর্মের নামে সাধারণ ওলি মনা মানুষকে ঠকাচ্ছে । আমরা এলাকাবাসি ওলি আওলিয়া ও মাজার ভক্ত কিন্ত এধরণের মিথ্যা ভূয়া মাজারের নামে প্রতারণা কখনোও মেনে নিতে পারি না । তাই প্রসাশনের প্রতি আমাদের এলাকাবাসির দাবী বিষয়টির সুষ্ট তদন্ত সাপেক্ষে অবিলম্বে কথিত মাজার ভন্ড পীরের মাজার উচ্ছেদ পূর্বক মোতাহিরের শাস্তি চাই ।