শ্রীমঙ্গলের যতরপুর বিচ্ছিন্ন এক জনপদের নাম

    0
    265
    বিক্রমজিৎ বর্ধন ও হৃদয় দাশ শুভ,যতরপুর-শ্রীমঙ্গল থেকে ফিরেঃ এ যেন বিচ্ছিন্ন এক জনপদ যেখানে নেই বিদ্যুৎ, নেই রাস্তাঘাট। বছরের ১২টি মাসই এই গ্রামের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম নৌকা। আর গ্রামের এক প্রান্তে একটি মাত্র সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও রাস্তাঘাট না থাকায় অনেক স্কুল পড়ুয়া ছেলে মেয়ে রয়েছে শিক্ষার আলো থেকে দূরে।ইচ্ছে করলেই কোন জরুরী রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে প্রেরণ করার কোন সুযোগ নেই।অথচ গোপলা নদীর উপর একটি মাত্র  ব্রীজ এবং গ্রাম প্রতিরক্ষা বাঁধ মেরামত করে তা পাকা করা হলে পাল্টে যেতে পারে এই গ্রামের দৃশ্যপট।
    মৌলভীবাজার জেলা শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে শ্রীমঙ্গল উপজেলাধীন মির্জাপুর ইউনিয়নের পাঁচাউন বাজারের পূর্ব পাশে যতরপুর মোল্লাকান্দি গ্রাম। হাইল হাওরের বেশ কিছু অংশ এবং গোফলা নদীদ্বারা গ্রামটি বিভক্ত। শ্রীমঙ্গল উপজেলার প্রায় সব গ্রামেই প্রাইভেট গাড়ী নিয়ে যাতায়াত করতে পারলেও এই গ্রামে গাড়ী নিয়ে যাতায়াতের কোন সুযোগ নেই। গ্রামে পৌছায়নি বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। একটি প্রাইমারী স্কুল থাকলেও রাস্তাঘাট না থাকায় এক-দুই ক্লাস পড়ার পর বন্ধ হয়ে যায় লেখা পড়া। অথচ এই গ্রামের মানুষই জেলার কৃষি ও মৎস্য এই দুই চাহিদা পুরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলছেন।
    এদিকে এবারের দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় ও হাওরের ঢেউ তাদের পায়ে হাঁটার পথ মোল্লাকান্দি গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলা গ্রাম প্রতিরক্ষা বাঁধটিকে ভেঙ্গে তছনছ করে দিয়েছে। বর্তমানে ঝুঁকি পূর্ণবস্থায় রয়েছে বাঁধটি। আর এর ঠিকে থাকা জীর্ন অংশটি ভেঙ্গে গেলে এই গ্রামসহ তলিয়ে যাবে আসে পাশের আরও প্রায় ৮/১০টি গ্রাম বিনষ্ট হবে কৃষিজ ফসল।
    যতরপুর গ্রামের কয়েকজনের সাথে কথা বললে তারা জানান ” আমাদের গ্রামে রাস্তা নেই,বিদ্যুৎ নেই সৌরবিদ্যুৎ দিয়ে তো আর দৈনন্দিন কাজ চালানো যায় না ৷ একটা ষ্কুল আছে তবে যোগাযোগব্যবস্থা ভালো না থাকায় নিয়মিত পাঠদান হয় না ৷জরুরি কোন রোগী থাকলে হাসপাতালে নেয়ার আগেই অনেক রোগী মারা যায় ৷”
    আর এ বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করে গ্রামের মানুষ কয়েকবার মানববন্ধনও করেছে। এদিকে স্থানীয় চেয়ারম্যান জানান, একটি রাস্তা আর গোফলা নদীতে একটি ব্রীজ হলেই এই সকল প্রতিবন্ধকতা দূর হবে।
    এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা চেয়ারম্যান রনধীর কুমার দেব জানান, বাঁধটি দ্রুত মেরামতের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে তারা চিঠি দিয়েছেন।
    অন্ধকারাচ্ছন্ন গ্রামকে আলোয় আনতে সরকার তার উন্নয়ন হস্ত বাড়িয়ে দিবে এ আশায়ই বসে আছে এই গ্রামের তিন/চার হাজার নারী পুরুষ।