আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৩মার্চ,নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত মাজদিহি পাহাড় এলাকায় বসবাসকারী জনগণের উদ্যোগে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় মাজদিহি পাহাড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়।এতে সহস্রাধিক নারী পুরুষ জমায়েত হয়ে তাদের একমাত্র বাসস্থান ও আবাদকৃত ভূমি রক্ষার্থে প্রধান মন্ত্রীর প্রতি আকুল আবেদন জানিয়েছেন।
বসতভিটা নিজের নামে কিংবা বন্দোবস্ত পাওয়ার দাবীতে ও প্রধান মন্ত্রীর প্রতি আবেদন জানিয়ে প্রতিবাদ কারীরা বলেন “৪৫ বছর ধরে তিলে তিলে গড়া এ ভুমি থেকে আমরা যাবো কোথায় ?মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর কৃপা ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় নাই” বলে বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল মাজদিহি পাহাড়ের খাস জমিতে বসবাসকারী সহস্রাধিক মানুষ।
প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ফিরোজ মিয়া, কাজী আব্দুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা রফিক মিয়া, ইলিয়াছ মিয়া, দিলারা বেগম, ছালিক মিয়া, রিফাত মিয়া, সত্য নারায়ন গোয়ালা, দেলোয়ার গাজী ও সোহরাব মিয়া প্রমূখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, ৭১ এর স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় থেকে প্রায় ৪৫ বছর ধরে তারা এই দুর্গম পাহারের জঙ্গলকেটে তিলে তিলে পরিস্কার করে এখানে বসবাস করে আসছেন।পরিবেশ রক্ষায় ও নিজেদের আর্থিক স্বাবলম্বী করতে বিভিন্ন ফলের বাগান,লেবুর বাগান,আনারসের বাগান,কাঠালের বাগানসহ বর্তমানে এই খাস জমিতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার ভোটারসহ প্রায় ৫ হাজারের ও অধিক অধিবাসির সহস্রাধিক পরিবার বসবাস করে আসছেন। এ ছাড়া প্রায় ৫ শতাধিক প্রাইমারীর শিক্ষার্থি ও রয়েছে সেখানে।
এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা রফিক মিয়া জানান, এটি সরকারী খাস জমি হলেও এখানে জনবসতি দীর্ঘ দিন ধরে। সরকার এই পাহারে সরকারী স্কুল, মাদ্রাসা,রাস্তা, কালভার্ট,বিদ্যুৎ সুবিধা দিয়েছে।রয়েছে ৪/৫টি মসজিদও ৫/৬ টি কবরস্থান যেখানে আমাদের আপনজনেরা ঘুমিয়ে আছে। এখানে জমি ধরে রাখতে তারা প্রয়োজনে পূর্বের মতো কঠোর আন্দোলন করবেন। ইতি পূর্বে কয়েকবার প্রভাবশালীরা এ ভূমি দখলের পায়তারা করে এবং তাদের আন্দোলনের মূখে পিছু হটে যান বলে তারা জানান।বর্তমানেও তারা খবর পেয়েছেন এখানে সেনাবাহিনীর কোন স্থাপনা হবে, ইতিমধ্যে সেনাবাহিনী তাদের গ্রামে জমি মাপঝোকও করেছে। তাই তারা পুনরায় আন্দোলনে নেমেছেন।প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন বঙ্গবন্ধুর কন্যার কাছে আমাদের আবেদন “তিনি যেন আমাদের তিলে তিলে গড়া জমিতে থাকার ব্যবস্থা করে দেন।”
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মোবাশশেরুল ইসলাম জানান, “মাজদিহি পাহাড়ে সরকারী খাস জমিতে বেশ কিছু অবৈধ দখলদার রয়েছেন। কিছু রয়েছেন বন্দোবস্ত নিয়ে। সরকারের উর্ধতনমহল থেকে এই জমি কি অবস্থায় আছে তা জানাতে নির্দেশ এসেছে। বর্তমানে এই তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।
তিনি জানান, এখানে বিশাল এলাকা জুড়ে জনপ্রতি কয়েক একর করে জমি দখল করে ভোগ দখল করে আসছেন। সরকার যদি এখানে কোন স্থাপনা করেন তাহলে তো জনগণের স্বার্থেই করবেন। এলাকার উন্নয়নে তা কাজে লাগবে। আর এখানে যদি প্রকৃত ভুমিহীন থেকে থাকেন এ বিষয়টিও তিনি সরকাররে নজরে আনবেন।”