শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেলে মালিকরা পথ খুঁজে পাবেন না

    0
    236

    আমারসিলেট 24ডটকম , ২১সেপ্টেম্বর  : আন্দোলন করেই শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি আট হাজার টাকা আদায় করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকরা। আজ বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গার্মেন্ট শ্রমিক মহাসমাবেশে গার্মেন্ট শ্রমিকনেতারা এ ঘোষণা দেন। ন্যূনতম মজুরি আট হাজার টাকা, জিএসপি সুবিধা পুর্নবহাল, নারীদের গৃহবন্দি করে রাখার ষড়যন্ত্রের বন্ধের দাবিতে গার্মেন্টস শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ আয়োজিত এই মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নৌপরিবহনমন্ত্রী ও গার্মেন্টস শ্রমিক সমণ্বয় পরিষদের আহ্বায়ক মো. শাহজাহান খান।
    সমাবেশে শাহজাহান খান বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিকরা এখন জীবন সন্ধিক্ষণে পৌঁছেছেন। শ্রমিকরা গার্মেন্টস মালিক ও বাড়ির মালিকদের নির্যাতন সহ্য করছেন। গার্মেন্টস আমাদের সম্পদ। ১২ বছর ২০০৬ সালে একবার মজুরি বাড়ানো হয়েছে। শেখ হাসিনা ২০১০ সালে আবারো মজুরি বাড়িয়েছেন। এবারো আমরা প্রধানমন্ত্রীর সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
    শ্রমিকনেতারা বলেন, আন্দোলন করেই শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি আট হাজার টাকা আদায় করতে হবে। এ দাবিতে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বড় বড় শহরে শ্রমিক মহাসমাবেশ করা হবে বলে জানান তারা। ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি পূরণে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও কামনা করেন শ্রমিকনেতারা। ন্যূনতম মজুরি নিয়ে কোনো প্রকার ছলচাতুরি বরদাশত্ করা হবে না বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
    শ্রমিকনেত্রী লাভলী ইয়াসমীন বলেন, আমাদের আজকের মহাসমাবেশে শ্রমিকদের যোগ দেওয়ার মানে হলো, শ্রমিকরা তাদের অধিকারের প্রতি সচেতন। ন্যূনতম মজুরির ইস্যুতে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না। যদি শ্রমিকদের বঞ্চিত করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে শ্রমিকরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে। আর এই মহাসমাবেশ তারই নমুনা।
    শ্রমিকনেতা নুরুল ইসলাম বলেন, ২০০৬ ও ২০১০ সালে আন্দোলন করেই ন্যূনতম মজুরি আদায় করেছি। এবারও আন্দোলন করেই ন্যূনতম মজুরি আট হাজার টাকা আদায় করতে হবে। অধিকার আদায়ে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকতে গার্মেন্ট শ্রমিকদের আহ্বান জানান তিনি।
    গার্মেন্ট শ্রমিকনেতা আবুল হোসেন বলেন, শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি আট হাজার টাকা নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র হলে তা রুখে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে সমগ্র শ্রমিক সমাজ ঐক্যবদ্ধভাবে ষড়যন্ত্রের দাঁত ভেঙ্গে দেবে। যেকোনো অবস্থায় শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকারও আহ্বান জানান তিনি।
    মাওলানা শফির তীব্র সমালোচনা করে শ্রমিকনেত্রী জাহানারা বেগম বলেন, মাওলানা শফি নারীদের ঘরে আটকে রাখার জন্য গার্মেন্ট শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। আমরা তার প্রতি ঘৃণা জানাই। আমরা গার্মেন্ট শ্রমিক নারী পুরুষরা দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে কাজ করি। আমাদের তিন বেলা খেয়ে বাঁচার জন্য আমাদের ন্যূনতম আট হাজার টাকা মজুরি দিতে হবে।
    গার্মেন্ট শ্রমিকনেতা অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইল বলেন, নারীদেরকে ঘরে আবদ্ধ রাখার জন্যে হেফাজতিরা যে ষড়যন্ত্র করছে, গার্মেন্টস শ্রমিকরা তা রুখে দেবেন।
    এছাড়াও অন্যান্য শ্রমিক নেতারা বলেন, ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকা নির্ধারণ এবং গার্মেন্টশ্রমিক নির্যাতন বন্ধ না করা হলে কঠোর আন্দোলনে যাবেন শ্রমিকরা। আর শ্রমিকরা যদি আন্দোলনে নামেন, তাহলে মালিকরা পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না।