শেষ পর্যন্ত ইতিহাস গড়া ড্র করল বাংলাদেশ

    0
    349

    আমার সিলেট  24 ডটকম,অক্টোবরচট্টগ্রাম টেস্টে শেষ পর্যন্ত ইতিহাস গড়া ড্র করল বাংলাদেশ।অর্জনের এই ম্যাচের শেষ দিনে ৩ উইকেটে ১৭৩ রান সংগ্রহ করে মাঠ ছাড়ে টাইগাররা। জয়ের জন্য ৪৮ ওভারে মুশফিকদের তুলতে হতো ২৫৬ রান।তবে,শেষ পর্যন্ত ধীরে-সুস্থে খেলে কল্পিত পাণ্ডুলিপিতেই জয়কে সীমাবদ্ধ রাখল ব্যাটসম্যানরা। রক্ষণশীলভাবে শুরু করা ইনিংসে সাকিব আল হাসানের শেষ মুহূর্তের অর্ধশতক মাতিয়ে তোলে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের দর্শকদের। জয় না পেলেও ক্রিকেট ইতিহাসে রেকর্ড যোগ করে ড্র মেনে নেয় স্বাগতিকরা। প্রাপ্তির তালিকায় সবার শেষে সাকিবের অর্ধশতক যুক্ত হওয়ার পরেই ম্যাচের ড্র মেনে নেয় দুদল। দিনের খেলায় অবশ্য তখনও চার বল বাকি ছিল। সাকিব আল হাসান ৫০ ও মমিনুল হক ২২ রানে অপরাজিত ছিলেন। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল করেছিলেন ৪৬ রান। ম্যাচের সেরা খেলোয়ার নির্বাচিত হন বিশ্বরেকর্ড গড়া সোহাগ গাজী। চট্টগ্রাম টেস্টে প্রাণ ফেরানোর কৃতিত্বটাও তার। নিজের পারফর্ম্যান্স সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি এমন কীর্তি করবো সেটা কখনো ভাবিনি। আমার স্বাভাবিক খেলাটা খেলেছি, সাফল্য পেয়েছি। হ্যাট্রিক বলটি কররা সময় ভেবেছি এই বলটিতে একটা কিছু হবে। এর আগে ১৩৬ বছরের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে এক টেস্টে অনবদ্য সেঞ্চুরির পর হ্যাট্রিকসহ ৬ উইকেট নিয়ে অনন্য এক বিশ্বরেকর্ড গড়েন বরিশালের এই অলরাউন্ডার। এছাড়া চতুর্থ বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে দেড়শতক ছোঁয়া মমিনুল হকের সাথে সাকিব ও মুশফিক দুই হাজার রানের মাইলফলকে পৌঁছান এই ম্যাচে। কয়েকটি বড় পার্টনারশীপের রেকর্ড মিলিয়ে ম্যাচটি ছিল শুধুই অর্জনের।
    বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে পঞ্চম দিনের মন্থর ও নিচু উইকেটে ৪৮ ওভারে ২৫৬ রান করাটা ছিল কঠিন। তবে সে চেষ্টায় আর যায়নি বাংলাদেশ। যতটা সম্ভব ব্যাটিং অনুশীলনের চেষ্টা করেন স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা। তাতেও খুব একটা সফল বলা যাবে না। প্রথম ইনিংসে ৩ রান করা এনামুল হক দ্বিতীয় ইনিংসে বাজে শট খেলে বিদায় নেয়ার আগে করেন ১৮ রান। ৩০ ও ৪০ রানে দুবার জীবন পাওয়া তামিম ইকবালের ব্যাট থেকে আসে ৪৬ রান। ৮টি চার হাঁকালেও স্বভাবসুলভ ব্যাটিং করেননি প্রথম ইনিংসে রান না পাওয়া এই ব্যাটসম্যান। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও সেট হয়ে আউট হয়েছেন অভিষিক্ত মার্শাল আইয়ুব। ৬৫ বলে ১টি করে ছক্কা ও চারের সাহায্যে ৩১ রান করেন তিনি। প্রথম ইনিংসে শতকের দেখা পাওয়া মমিনুল হককে (অপরাজিত ২২) নিয়ে দিনের বাকি সময়টুকু নিরাপদেই কাটিয়ে দেন সাকিব আল হাসান। প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ সাকিব অপরাজিত থাকেন ৫০ রানে। কিউইদের পক্ষে এই ইনিংসে ব্রুস মর্টিন নিয়েছেন দুটি উইকেট। অন্য উইকেটটি নিয়েছেন সোদি। এর আগে পঞ্চম দিনের দ্বিতীয় সেশনে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ উইকেটে ২৮৭ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেন কিউই অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে উইলিয়ামসন ৭৪, পিটার ফুলটন ৫৯ ও রস টেইলর ৫৪ রান করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে সফরকারীদের পতন হওয়া ৭ উইকেটের ৬টিই নিয়েছেন বাংলাদেশি অফ স্পিনার সোহাগ গাজী। এই ৬ উইকেট শিকার করতে গিয়ে তিনি পূর্ণ করেছেন ক্যারিয়ারের প্রথম হ্যাটট্রিকও। এর আগে এই টেস্টের প্রথম ইনিংসে ক্যারিয়ারের প্রথম শতকও তুলে নেন সোহাগ গাজী। অপরাজিত শতক ও হ্যাটট্রিকসহ ৬ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন তিনি।
    সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট আগামী ২১ অক্টোবর মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হবে শুরু হবে। এছাড়া টাইগারদের সঙ্গে ৩টি এক দিনের ম্যাচেও মুখোমুখি হবে সফরকারি নিউজিল্যান্ড। খেলাগুলো হবে ২৯ ও ৩১ অক্টোবর এবং ৩ নভেম্বর মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। আর সিলেট স্টেডিয়ামে ৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের একমাত্র টি২০ ম্যাচটি।