শিক্ষকরা ব্যক্তিগত কাজে লিপ্ত থাকায় কৈফিয়ত তলব

    0
    378

    “পীরগঞ্জ বনুয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগন স্কুল বন্ধ রেখে ব্যক্তিগত কাজে লিপ্ত থাকায় কৈফিয়ত তলবের চিঠিঃ ৩জন শিক্ষক দিয়ে ২৮জন শিক্ষার্থীর দ্বায়সারা পাঠদান,শিক্ষকের ব্যাপক অনিয়ম দূর্ণীতি”

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২২জানুয়ারী,গীতি গমন চন্দ্র রায়,পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ পীরগঞ্জ উপজেলার বনুয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়-১৫০০ প্রকল্প’র শিক্ষকগন শিক্ষার কার্যক্রম বন্ধ রেখে ব্যক্তিগত কাজে লিপ্ত থাকায় কৈফিয়ত তলবের চিঠি প্রদান করছেন উপজেলা শিক্ষা অধিদপ্তর। এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মাঝে। ২৮জন শিক্ষার্থী নিয়ে দ্বায়সারা পাঠদান করছে প্রতিষ্ঠানের নিয়োজিত শিক্ষকগন। সরকারি নিয়ম-নীতিমালা তোয়াক্কা না করে খেয়াল খুশিভাবে চালিয়ে আসছে পাঠদানের কাজ। ফলে সরকারের শিক্ষার কার্যক্রম ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা মনে করছেন সংশ্লিষ্ট সচেতন মহল। জানা যায় গত ২১ জানুয়ারী, ২০১৮ তারিখে উক্ত বনুয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৫০০ প্রকল্প’র প্রতিষ্ঠানটিতে দুপুর ২ঘটিকায় স্থানীয় ক’জন সাংবাদিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম সমূহ সরেজমিনে জানতে গেলে বিদ্যালয়টি বন্ধ পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ্ র’ নিকট দুপুর ২টায় বিদ্যালয় বন্ধ থাকার কথা মুঠো ফোনে জানালে তিনি বিষয়টিতে আচমকে উঠে বলেন একটু দেখার সময় দেন ।

    ঐ সময়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলামের নিকট বিষয়টি অবগত করা হলে তিনি হতবিবহল হয়ে পড়েন এবং তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান। এরপর ২.৫০মিনিটে প্রধান শিক্ষক বিপদভঞ্জন অধিকারী, সহকারী শিক্ষক বেলাল, সহকারী শিক্ষক তাপসী রাণী স্কুলে এসে দুঃখ প্রকাশ করে সাংবাদিক দ্বয়ের নিকট দুপুর ২টায় স্কুল বন্ধ রাখার ভূলের কথা স্বীকার করেন। এরপরই শুরু হয় বিভিন্ন ভাবে ভূলের তদবির সুধরানো। কিন্তু ঐ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর অভিভাবক ও স্থানীয় সংশ্লিষ্ট সচেতন মহল ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং এ প্রতিবেদককে জানান সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৯টা থেকে বৈকাল ৪.৩০মিনিট পর্যন্ত স্কুলর কার্যক্রম চালানোর কথা। অথচ শিক্ষকগন দুপুর ২টায় স্কুল বন্ধ রেখে তাদের ব্যাক্তিগত কাজে লিপ্ত রয়েছেন।

    এতে শিক্ষার মান ব্যাঘাত সহ সরকারের স্ব-প্রণোদিত শিক্ষার খাতে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করিয়েও কার্যক্রম ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা মনে করছেন। এ নিয়ে গত ২২ জানুয়ারী উপজেলা শিক্ষা অধিদপ্তর কার্যালয়ে শিক্ষা অফিসারের নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি অনুষ্ঠানে থাকায় সহকারী অফিসার (এটিও) শাহাজাহান আলী সাংবাদিকদের দেখে তিনি বলেন ঐ স্কুলটির শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ব্যবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কৈফিয়ত তলব প্রসঙ্গের স্বারক নং জাবর:ক্লা:/পীর/ঠাক/১৮/১ তারিখ:২২.০১.১৮ খ্রিঃ স্বাক্ষরিত পত্রটি ধরিয়ে দেন। কৈফিয়ত তলব পত্রে উল্লেখ করেছেন গত ২১.০১.১৮ খ্রিঃ তারিখে সাংবাদিক মারফত জানতে পারে বনুয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগন ২.১০মিনিটে শিক্ষার কার্যক্রম বন্ধ রেখে তাদের পারিবারিক কাজে চলে গেছেন যা চাকরী বিধির পরিপন্থি এবং অনিয়মের জন্য শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন ও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট কেন সুপারিশ করা হবে না তার সন্তোষজনক জবাব পত্র সাত কার্য দিবসের মধ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ শাহাজাহান আলীর নিকট দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হলো।

    এ প্রসঙ্গে অনুলিপি সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় কার্যার্থে উপজেলা সরকারী শিক্ষা অফিসার শাহাজাহান আলীর স্বাক্ষরিত স্বারক নম্বর জাবর:ক্লা:/পীর/ঠাক/কৈফিয়ত/১৮/১ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ঠাকুরগাঁও, উপজেলা শিক্ষা অফিসার পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, সভাপতি বনুয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পীরগঞ্জ ঠাকুরগাঁও বরাবরে কৈফিয়ত তলব প্রসঙ্গে অনুলিপি প্রেরণ করেছেন।

    উল্লেখ যে চলতি বছরে ঐ স্কুলে নিয়োজিত শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রথম শ্রেণীতে ২জন, দ্বিতীয় শ্রেণীতে ৭জন, তৃতীয় শ্রেণীতে ৩জন, চতুর্থ শ্রেণীতে ৬জন, পঞ্চম শ্রেণীতে ৮জন, ও প্রাকশিশু শ্রেণীতে ২জন সহ মোট ২৮জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এতে প্রধান শিক্ষক সহ সহকারী ২জন শিক্ষক সহ মোট ৩জন শিক্ষক নিয়োজিত থাকলেও তিনারা ডেপুটেশনে রয়েছেন বলে উপজেলা শিক্ষা অধিদপ্তর জানায়। তাছাড়া বিদ্যালয়টি ২০১২ সালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যয় বরাদ্দে ১৫০০ প্রকল্পটি’র একটি উন্নীত তিন তলা বিশিষ্ট সৌন্দর্য বিল্ডিং নির্মাণ হলেও শিক্ষার কার্যক্রমের মান নিয়ে সংশয় চলছে।

    এ দিকে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী গত ২২ জানুয়ারী,২০১৮ এক সেমিনারে বিবৃতি দিয়েছেন যে ঘুষ বা আইন বিরোধী কাজের সুযোগ নেই। শিক্ষার কার্যক্রমে ও শিক্ষামন্ত্রনালয়ে তবুও দূর্ণীতি হয়। তবে তিনি দূর্ণীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করেছেন। এরপরও চলছে ঘুষের কারবার।