শায়েস্তাগঞ্জে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষ:গ্রেফতার-১৩,সিএনজি আটক-২৭

    0
    479

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৯এপ্রিল,হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নছরতপুর নাম স্থানে সিএনজি (অটোরিক্সা) আটক করাকে কেন্দ্র করে থানা পুলিশের সংঙ্গে অটো রিক্সা চালকদের সংঘর্ষে ঘটনায় গত শনিবার (২৮ এপ্রিল) ৮৮ জনের নাম উলে¬খসহ অজ্ঞাত ৬শত থেকে ৭শত জনকে আসামী করে পুলিশ এসল্ট মামলা করেছে।

    সরকারী কাজে বাধা ও পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে শায়েস্তাগঞ্জ থানার উপপরির্দশক এস, আই আব্দুল ওয়াদুদ বাদী হয়ে এসল্ট মামলাটি করেন। এঘটনায় পুলিশ গত (২৮ এপ্রিল) ১০ জন এবং ২৯ এপ্রিল ৩ জন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। এদিকে ঢাকা সিলেট মহাসড়কে দীর্ঘ দিন যাবত অবৈধ ভাবে অটো রিক্সা সিএনজি চলাচলের দায়ে গত ২৬ এপ্রিল হতে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত ২৭টি অটো রিক্সা সিএনজি আটক করে হাইওয়ে থানা পুলিশ।

    শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশ গত বৃহস্পতিবার ২৬ এপ্লিল শায়েস্তাগঞ্জ মহাসড়ক থেকে ৫টি অটো রিক্সা আটক করে। এর প্রতিবাদে গত শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) বেলা ১০টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নছরতপুর নাম স্থানে বিক্ষোভ ও অবরোধ করেন এক দল সিএনজি ও অটো রিক্সা শ্রমিক ও মালিকরা। খবর পেয়ে শায়েস্তাগঞ্জ থানা ও হাইওয়ে থানা একদল পুলিশ নিয়ে মহাসড়ক থেকে সিএজি শ্রমিকদের সড়ে যেতে অনুরোধ করে।

    এ সময় পুলিশের সংঙ্গে বাক-বিতন্ডার এক পর্যায়ে শ্রমিক ও মালিকরা পুলিশকে গিরে ফেলেন এবং সড়কে বিভিন্ন যাত্রীবাহী আটক হওয়ার পর কিছু গাড়ীর গ্লাস ভাঙ্গচুর করে। তখন পুলিশ কে লক্ষ করে শ্রমিকরা ধারালো অস্ত্র, লাঠি নিয়ে এলো পাথারি ভাবে পুলিশের উপর আক্রমণ ও রেল এর পাথর দিয়ে ঢিল নিক্ষেপ করে। শায়েস্তাগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনিসুর রহমান সহ ১৫ জন পুলিশ সদস্য সহ অর্ধশতাধিক আহত হন। পাশাপাশি দু’ঘন্টা সংঘষে উভয় পক্ষ আহত হন।

    শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি মোঃ আনিসুর রহমান এ ঘটনায় তার গত ২৮ ও ২৯ এপ্রিল রাতে বিভিন্ন এলাকা থেকে এসল্ট মামলায় অভিযোক্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদেরকে গত শনিবার ও গত কাল রবিবার দিন আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। দায়ের কৃত এসল্ট মামলার আসামীরা হলেন শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সিতার মিয়া, দুলাল মিয়া, রুবেল মিয়া, কিম্মত আলী, সাবাজ মিয়া সহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে।

    এদিকে এ মামলার গ্রেপ্তার হওয়ার বয়ে সিএনজি শ্রমিকরা বাড়ি ছেড়েছেন। শায়েস্তাগঞ্জ এলাকায় এখন সিএনজি অটো রিক্সা শূণ্য। হবিগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম জানান, পুলিশ শ্রমিক সংঘর্ষের ঘটনার মামলায় ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

    এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন খন্দকার জানান, ঢাকা সিলেট মহাসড়কে সিএনজি অটোরিক্সা চলাচল করলে গত বৃহস্পতিবার (২৬ এপ্রিল) ৫টি গাড়ি আটক করে হাইওয়ে পুলিশ। পরে সিএনজি শ্রমিক ও মালিকদের পক্ষ থেকে সিএনজিগুলো ছেড়ে দেওয়ার জন্য দাবি করা হয় এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার তদবির ও মোবাইল ফোনে হুমকি দিলে শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশ ১০ টি জিডি এন্টি করে।  পুলিশ সিএনজি ছেড়ে না দেওয়ায় গত শুক্রবার (২৭ এপ্রিল)  সকালে শ্রমিকরা শায়েস্তাগঞ্জ নছরতপুর মোড়ে মহাসড়কে অবরোধ করলে পুলিশ বাধা দেয়।

    এর জের ধরে শ্রমিকরা পুলিশের উপর হামলা করে। উল্লেখ্য, এর আগে হবিগঞ্জের ঢাকা-সিলেটে মহাসড়কে সিএনজি চলাচল করলে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় পুলিশ। এর প্রতিবাদে শুক্রবার সিএনজি সংগঠনের শ্রমিকরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে মহাসড়কে আন্দোলনে নামে। এ সময় পুলিশ তাদেরকে সড়িয়ে দিতে চাইলে দু’পক্ষের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

    এতে আহত পুলিশ সদস্যরা হল, এসআই দেলোয়ার হোসেন, এএসআই আব্দুল ওয়াদুদ, কনস্টেবল সুবিত, আকাশ, মশিউর রহমান, প্রণব, আশরাফ, জহিরুল ইসলাম, সুবির, ওয়াকিব মিয়া, রোমান আহমেদ, আব্দুল খালেক, রকিব আহমেদ, মকবুল হোসেন। এছাড়াও আহত শ্রমিক ও পুলিশদের হবিগঞ্জ সহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে।