শার্শায় সুবিধা বঞ্চিতদের মাঝে বৃত্তিপ্রদান কর্মসূচীর উদ্বোধন

    0
    243

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৩মে,এম ওসমানঃ নিভৃত পল্লী যশোরের শার্শা উপজেলার বসতপুর। চারপাশে বিল বেষ্টিত এ গ্রামটি বোম্বে কলোনী নামেই অধিক পরিচিত ছিল। এ গ্রামের অনেক নারী এক সময় কাজের জন্যে পাড়ি দিতেন ভারতের বোম্বেসহ নানা স্থানে। ঝুকি আর ব না বিড়ম্বনা পূর্ণ জীবন ছিল তাদের। যে কারণে তাদের সন্তানদের শিক্ষা গ্রহণের বিষয়টি ছিল অবহেলিত।

    ওই গ্রামের মায়েদের উন্নয়নের পাশাপাশি সুবিধাবি ত শিশুদের শিক্ষা গ্রহণকে  সহজতর করতে আশার আলো জ্বলে উঠেছে। বৃহস্পতিবার ওই এলাকার শিশুদের শিক্ষার মান উন্নয়নে ৭০জন শিক্ষার্থীর মাঝে প্রদান করা হয়েছে বৃত্তি। যশোরের জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীর বসতপুর মহিলা ও শিশু উন্নয়ন সংস্থার কার্যালয়ে শিশুদের মাঝে এ বৃত্তি কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন।

    দি সিটি ব্যাংক এর সিএসআর কার্যক্রমের আওতায় ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (এমআরডিআই) তার স্থানীয় সহযোগী দৈনিক গ্রামের কাগজের সহায়তার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

    বসতপুর মহিলা ও শিশু উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি রোকেয়া বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীর বলেন, স্বপ্ন ছাড়া অগ্রগতি সম্ভব নয়। স্বপ্ন দেখা অপরাধ নয়। তাই প্রতিটি শিশুকে ভবিষ্যতের জন্য বড় বড় স্বপ্ন দেখাতে হবে। তিনি বলেন, পড়ালেখা, খেলাধুলা কোন ক্ষেত্রে থেমে থাকা যাবে না। এ মানসিকতা গড়ে তুলতে পারলে বড় হওয়া সম্ভব হবে।

    জেলা প্রশাসক আরো বলেন, নারীদের সম্মান করা পরিবার থেকে শুরু হওয়া উচিৎ। তারা পরিবারের জন্য অনেক কিছু করেন। সময় ও সুযোগ পেলে তারা নিজ কর্মগুনে স্বাবলম্বীও হতে পারেন। বসতপুরের নারীরা তা আবারো প্রমাণ করেছেন।

    অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, শার্শা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম শরিফুল আলম, যশোর জেলার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সকিনা খাতুন, দি সিটি ব্যাংক লিমিটেডের এফভিপি এন্ড হেড অফ প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম, এমআরডিআই এর নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান ও দৈনিক গ্রামের কাগজ সম্পাদক মবিনুল ইসলাম মবিন।

    অনুষ্ঠানে এমআরডিআই’র নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান বলেন, এই এলাকার শিক্ষার্থীদের জন্য গৃহীত বৃত্তি এবং কোচিং কার্যক্রম সিএসআর তহবিল ব্যবহারের মাধ্যমে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সক্ষম হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি প্রথম পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সফলতার উদাহরণ উল্লেখ করেন।

    প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে পরিচালিত বসতপুর মহিলা ও শিশু উন্নয়ন সংস্থার সদস্যদের সন্তানরা এ বৃত্তি কার্যক্রমের আওতাভুক্ত হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে প্রথম থেকে দশম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত মোট ৭০জন ছাত্র-ছাত্রী প্রথম কিস্তির (৬ মাসের) বৃত্তির টাকা গ্রহণ করে। এ কার্যক্রমটি আগামী পাঁচ বছরের জন্য পরিচালিত হবে।

    এ প্রকল্পের আওতায় প্রথম ও ২য় শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা মাসিক ২শ’৫০ টাকা, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা ৩শ’৫০ টাকা, ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা ৪শ’ টাকা, ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা ৫শ’৫০ টাকা, ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা ৬শ’ টাকা, ৯ম ও ১০ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা মাসিক ৭শ’৫০ টাকা হারে বৃত্তি পাবে।

    এছাড়া পিএসসি, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিনামূল্যে কোচিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে। এসএসসির ফরম পূরণের টাকারও যোগান দেয়া হবে এ প্রকল্প থেকে।