শার্শায় যৌতুকের দাবীতে স্ত্রীকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখে স্বামী

    0
    373

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২০এপ্রিল,বেনাপোল থেকে এম ওসমান:   যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়ায় যৌতুকের দাবিতে নিজ স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা করে লাশ ঘরের আঁড়ার সাথে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে পাষন্ড স্বামী রিপন হোসেন (৩৮) এর বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকেই ঘাতক রিপন তার পরিবারের লোকেরা বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে।
    নিহত স্ত্রীর নাম জোহরা খাতুন (৩৪)। সে বেনাপোল পোর্ট থানার বালুন্ডা গ্রামের নুর ইসলামের মেয়ে। ঘাতক রিপন হোসেন শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া সাতভাই পাড়া এলাকার মোসলেম গাজীর ছেলে।
    প্রতিবেশিরা ও নিহত জোহরার স্বজনেরা জানায়, ১৭ বছর আগে রিপনের সঙ্গে জোহরা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী রিপন যৌতুকের দাবিতে ব্যাপক নির্যাতন করতে থাকে। প্রায়শই রিপনের চাহিদামত যৌতুক মেটাতে হতো জোহরার পিতার বাড়ি থেকে। যৌতুক না পেলে রিপন ক্ষিপ্ত হতো এবং স্ত্রী জোহরার উপর অমানুষিক নির্যাতন করতো। এনিয়ে পারিবারিক ভাবে ও গ্রাম্য শালিসে অনেকবার মিমাংসা করা হয়েছে। এর মধ্যে জোহরা একটি পুত্র সন্তানের মা হলে তার উপর নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। বাচ্চার মুখের দিকে তাকিয়ে জোহরার পিতার বাড়ির লোকজন অনেক টাকা খরচ করে রিপনকে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়। সেখান থেকে দুই বছর আগে বাড়ি এসে আবারো স্ত্রী জোহরার উপর যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করতে থাকে। জোহরা মারধোর সহ্য করতে না পেরে কয়েকবার পিতার বাড়িতে চলে যায়। রিপন আবার কুটকৌশল করে নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে আনে। কিন্তু কয়েকদিন ভালো থাকার পর আবার শুরু হয় নির্যাতন। এর মধ্যে এক বছর আগে তাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু দিন দিন যৌতুকের দাবিতে রিপনের নির্যাতন বাড়তে থাকে।
    বৃহস্পতিবার রাতে ও শুক্রবার সকালে জোহরাকে ব্যাপক মারপিট করে স্বামী রিপন। মারপিটের এক পর্যায়ে সে মারা যায়। মৃত্যকে আত্মহত্যা বলে প্রচার করার জন্য ঘরের আড়ার সাথে উড়না দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়। সকালে বাড়িতে কান্নাকাটি দেখে আশেপাশের লোকজন এসে লাশ উদ্ধার করে।
    নিহত জোহরার ছেলে হৃদয় (১৩) জানান, কাল রাতে আব্বা আমার মাকে খুব মেরেছে।
    নিহত জোহরার পিতা নুর ইসলাম ও মা মেহেরুন জানান, আমাদের বড় মেয়ের জন্য অনেক টাকা, জিনিসপত্র জামাইকে দেওয়ার পরও আমার মেয়ের উপর যৌতুকের জন্য ব্যাপক নির্যাতন করে হত্যা করে লাশ ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রেখেছে। আমরা উপযুক্ত বিচার চাই।
    এ ব্যাপারে বাগআঁচড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এস আই সাজ্জাদুর রহমান বলেন, সুরতহাল রিপোর্টে নিহতের শরীরে অসংখ্যা আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্যে যশোর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে শার্শা থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই ঘাতক রিপন তার পরিবারের লোকজন বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে।