রোহিঙ্গা বোঝাই চারটি নৌকা ফেরত পাঠিয়েছে বিজিবি

    0
    333

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৬ডিসেম্বরঃ কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা বোঝাই চারটি নৌকা ফেরত পাঠিয়েছে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বর্ডার গার্ড (বিজিবি)। মঙ্গলবার ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত নাফ নদীর তিনটি পয়েন্ট দিয়ে তাদের ফেরত পাঠানো হয়।

    বিজিবির টেকনাফ-২-এর অধিনায়ক লে.কর্নেল আবুজার আল জাহিদ গণমাধ্যমকে বলেছেন, মিয়ানমারে সহিংসতার পর থেকে প্রতিদিনই নাফ নদী দিয়ে নৌকায় করে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। মঙ্গলবার সকালে নাফ নদীর তিনটি পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গা বোঝাই চারটি নৌকা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের  ফেরত পাঠানো হয়। প্রতিটি নৌকায় ১০ থেকে ১৫ জন রোহিঙ্গা ছিল।

    নতুন করে গত রোববার রাতে উত্তর মংডু’তে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) নারী শিশুসহ ১৫ জনেরও বেশি রোহিঙ্গাকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে রোহিঙ্গা ভিশন টেলিভিশন চ্যানেল।

    হতভাগা রোহিঙ্গাদের এই দলটি কয়েকটি নৌকায় করে বাংলাদেশের দিকে পালিয়ে আসতে চেয়েছিল। এ পর্যন্ত দুই শিশু এবং এক নারী রোহিঙ্গার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

    এছাড়াও এ ঘটনায় রোহিঙ্গা বোঝাই দুটি নৌকার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। নতুন করে বর্বরতার শিকার হওয়া এই রোহিঙ্গাদের অধিকাংশই উত্তর মংডুর রে টুইন চুং/ রায়াম্মাবিল গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

    এ প্রসঙ্গে সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের একজন বাসিন্দা রেডিও তেহরানকে জানান, গতকালও রোহিঙ্গা আশ্রয়প্রার্থীদের নিয়ে আসা একটি নৌকাকে  নাফ নদীতে ডুবিয়ে দিয়েছে  মিয়ানমারের সীমান্ত পুলিশ।

    তিনি মানবতার দোহাই দিয়ে অসহায় আশ্রয়প্রার্থী বিপন্ন রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার দাবি করেন।

    মিয়ানমার থেকে থেকে পাঁচদিন আগে পালিয়ে আসা একজন মহিলা জানালেন নির্যাতনের কথা। আশ্রয় নিয়েছেন রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে, সেখানে ঠাসাঠাসি করে মাটির ঘরে শীতে কষ্ট পাচ্ছেন, খাবার নেই, শিশুরা ডায়েরিয়া,  জ্বর , কফ , কাশিতে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। কেউ সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসছে না।

    অক্টোবর মাসের ৯ তারিখ থেকে নতুন করে শুরু হওয়া হত্যাযজ্ঞে এ পর্যন্ত মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, পুলিশ, সীমান্তরক্ষী আর স্থানীয় বৌদ্ধ সন্ত্রাসীদের হাতে কমপক্ষে ২৫০ জন রোহিঙ্গা খুন হয়েছেন। এদের অধিকাংশই নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে চেয়েছিল।

    এদিকে লন্ডনের  ইনডেপেন্ডেন্ট  পত্রিকা  আজ মঙ্গলবার খবর দিয়েছে  মিয়ানমারে  গনহত্যা থেকে রক্ষা পেতে  হাজার হাজার মুসলমান দেশত্যাগ করেছে।

    আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা, আই ও এমের বরাত দিয়ে খবরটিতে বলা হয়েছে আক্টোবর মাসের ৯ তারিখ থেকে চলতি ডিসেম্বরের ২ তারিখ পর্যন্ত  অন্তত একুশ হাজার রোহিঙ্গা  বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলা কক্সবাজারে  পালিয়ে এসেছে।

    সংস্থাটি বলছে, মিয়ানমার সরকার বিশ্বব্যাপী নিন্দা আমলে না নিয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনকে অস্বীকার করে যাচ্ছে।

    ওদিকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাক শুক্রবার এক গণপ্রতিবাদ সমাবেশে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পরিচালিত গণহত্যা বন্ধের জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

    এরআগে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নিধনকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে জানিয়েছে, দেশটির সরকার জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার কোনো সুপারিশ এখন পর্যন্ত গ্রহণ করে নি।ইরনা