রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত সংস্থাগুলোকে সরকারের সতর্কতা

    0
    208

    কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত বেসরকারি সংস্থাগুলোর (এনজিও) সমন্বয়কারী প্ল্যাটফর্মকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনবিরোধী ভূমিকার বিষয়ে সতর্ক করেছে বাংলাদেশের সরকার।

    ‘এনজিও প্ল্যাটফর্ম কোঅর্ডিনেশন’-এর কান্ট্রি কোঅর্ডিনেটর ডমিনিকা আরসেনিক গতকাল বৃহস্পতিবার এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর কার্যালয়ে সংস্থার মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করতে গেলে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়। এ সময় সংস্থাগুলো দেশের প্রচলিত আইনবিরোধী কাজে লিপ্ত নয় বলেও তাদের পক্ষে জানানো হয়েছে।

    এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক কে এম আবদুস সালাম  সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত ‘এনজিও প্ল্যাটফর্ম কোঅর্ডিনেশন’ থেকে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এদিন তার কার্যালয়ে পূর্বনির্ধারিত বৈঠকে আসে। এ সময় তাদের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনবিরোধী ভূমিকার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। তারা এ ধরনের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত নয় বলে জানিয়েছে।

    তিনি আরও বলেন, কোনো এনজিও এ ধরনের কাজে জড়িত থাকলে তাদের বিষয়ে তথ্য দিতে স্থানীয় প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ রকম কোনো তালিকা পেলে তাৎক্ষণিক সংশ্নিষ্ট এনজিওর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    এনজিও ব্যুরোর রোহিঙ্গা সেলের আহ্বায়ক ও সংস্থার উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল খায়রুম  সাংবাদিকদের বলেন, ক্যাম্পে কর্মরত সব এনজিওর প্রতিনিধিদের নিয়ে ব্যুরোর সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তাব এসেছে এনজিও প্ল্যাটফর্ম থেকে। এ বৈঠকে স্থানীয় প্রশাসন এবং শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের প্রতিনিধিকেও রাখতে বলেছি।

    রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে গত ২১ আগস্ট বিবৃতি দিয়েছে ৬১টি সংস্থা। এ ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনের অধিকারের প্রতি সম্মান জানাতে তাগিদ দেওয়া হয়।

    মুক্তি এনজিওর ৬ প্রকল্প স্থগিত করেছে এনজিওবিষয়ক ব্যুরো: রোহিঙ্গাদের জন্য ‘ধারালো অস্ত্র’ তৈরির অভিযোগ ওঠায় মুক্তি কক্সবাজার নামে একটি এনজিওর ছয়টি প্রকল্প সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছে এনজিওবিষয়ক ব্যুরো। সম্প্রতি কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গাদের সমাবেশে তাদের হাতে ধারালো অস্ত্র দেখার পর আলোচনার মধ্যে এ পদক্ষেপ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্যুরোর মহাপরিচালক কে এম আবদুস সালাম।

    এনজিও ব্যুরোর অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার সিরাজুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত এক পত্রে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিতরণের জন্য এনজিও ব্যুরোর অনুমোদনহীন মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হাতিয়ার (ছয় হাজার নিড়ানি) তৈরির কারণে মুক্তি কক্সবাজারের চলমান প্রকল্পের সব কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।

    মুক্তি কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী বিমল চন্দ্র দে সরকার সাংবাদিকদের জানান, তাদের ৩০টি প্রকল্প চলমান। তার মধ্যে ছয়টির কার্যক্রম স্থগিত করতে বলা হয়েছে। অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে কৃষি উপকরণ হিসেবে নিড়ানি তৈরির অর্ডার দিয়েছিলাম। এ কাজ যাকে দেওয়া হয়েছিল, তিনি কোথায় বানাতে দিয়েছেন, জানি না। ওই লোক এখন বলেছে, উখিয়ায় এসব তৈরি করেছে। বিমল চন্দ্র দে বলেন, এসব নিড়ানি এখনও গ্রহণ করিনি, বিতরণও করা হয়নি। তিনি বলেন, এক বছরের জন্য ছয়টি প্রকল্পে তিন কোটি ৪০ লাখ টাকার কাজ করার কথা। দুই লাখ টাকায় এসব নিড়ানি তৈরি করা হচ্ছিল। তদন্ত করলেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। ঝুঁকিপূর্ণ হাতিয়ার বা অনুমোদনহীন কিছু বিতরণের প্রশ্নই ওঠে না।