রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার চিন্তাভাবনা

    0
    217

    আমারসিলেট24ডটকম,২১মার্চঃ গণভোটের রায়ের পর রাশিয়ার ওপর আরো নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে বিতর্কে লিপ্ত ইউরোপিয় ইউনিয়নের দেশগুলো। ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি রুশ নেতাদের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছে ইইউ।

    ইউরোপিয় ইউনিয়নের সম্মেলনের প্রথম দিনে গতকাল  বৃহস্পতিবার ন্যাটো প্রধান আন্ডার্স ফগ রাসমুসেন বলেছেন, শীতল যুদ্ধের পর ইউরোপের দেশগুলোর নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যকার বর্তমান পরিস্থিতি।

    জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে বলেন, সমস্যা যদি দীর্ঘায়িত হয় তবে ইউরোপিয় ইউনিয়নের উচিত ইউরোপের দেশগুলোতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা ব্যক্তিদের তালিকাটা বড় করা, তাদের অর্থ জব্দ এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা। আজ শুক্রবার শেষ হবে ইউরোপিয় ইউনিয়নের দুই দিনের সম্মেলন। এর মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন ম্যার্কেল। ম্যার্কেল আবারো বলেন, গণভোট আয়োজন আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি। ইউরোপের শক্তিধর অর্থনীতির দেশ জার্মানি এরই মধ্যে রাশিয়ার সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। জার্মানি রাশিয়ার প্রধান গ্যাস আমদানিকারী দেশ।
    অপরদিকে, ক্রেমলিন অনবরত সতর্ক করে দিয়ে বলছে, পশ্চিমা বিশ্বের অর্থনৈতিক নানা সেক্টর রাশিয়ার সন্দেহে জড়িত। ফলে রাশিয়ার ওপর কোনো ধরনের আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি হলে তারাও কোনরকম ছাড় দেবে না। রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ হুঁশিয়ার করে বলেছেন, যে কোনো ধরনের পরিস্থিতির জন্য তারা প্রস্তুত। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তাদের ইঙ্গিত, ইরানের পরমাণু ইস্যুতে আলোচনায় তাদের ট্রাম্প কার্ডটি তুলে ধরবে তারা।
    বুধবার ইউক্রেন ঘোষণা করেছে, মস্কো নেতৃত্বাধীন কমনওয়েলথ অফ ইনডেপেন্ডেন্ট স্টেটগুলোর জোটে থাকবে না তারা। ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তারা জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে ক্রাইমিয়াকে ‘ডিমিলিটারাইজড জোন’ বা অসামরিক এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে এবং রাশিয়া তাদের ২৫ হাজার সেনা সেখান থেকে নিজেদের ঘাঁটিতে ফিরিয়ে নেয়। সেইসঙ্গে ক্রাইমিয়ায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পশ্চিমা শক্তিগুলোর সহায়তা চেয়েছেন তারা।
    রাশিয়া ও ক্রাইমিয়ার কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। তাদের ভিসা শিথিলের ব্যাপারে রাশিয়ার সঙ্গে এরই মধ্যে আলোচনা প্রত্যাখ্যান করেছেন ইইউ নেতারা। ইইউ আপাতত রাশিয়ার ১৩ জন ও ক্রাইমিয়ার ৮ জন সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপের ঘোষণা করেছে, যারা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব খর্ব করে এই বিচ্ছিন্নতাবাদী উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কয়েকজন উপদেষ্টা, ক্রাইমিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতৃবৃন্দ এবং ইউক্রেনের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ তাদের মধ্যে রয়েছেন বলে জানা গেছে। এর ফলে তারা ইইউ দেশগুলোতে প্রবেশ করতে পারবেন না, সেখানে তাদের বিষয়-সম্পত্তিও তাদের নাগালের বাইরে চলে যাবে।
    এদিকে, আগামী সপ্তাহে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে ইউক্রেন নিয়ে আলোচনা করতে জি-৭ নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। রাশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে শিল্পোন্নত দেশগুলোর সংস্থা জি-৮ এর সদস্য হলেও ইউক্রেন সংক্রান্ত আলোচনায় দেশটিকে আমন্ত্রণ জানাননি ওবামা।সূত্রঃইন্টারনেট