রাজশাহীতে ২ সাংবাদিককে অপহরনের পর হত্যার চেষ্টা !

    0
    275

    “সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ১২ দিনেও মামলা নেয়নি পুলিশ,ভুক্তভোগীরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন”

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,৩০আগস্ট,রাজশাহী থেকেঃ রাজশাহীর টপ সিক্রেট টেরর হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামী আনোয়ার হোসেন রাজা বাহিনীর নির্মম নির্যাতনে মৃত্যুর প্রহর গুণছে দৈনিক বিজয় পত্রিকার রাজশাহী ব্যুরো প্রধাণ মোস্তাফিজুর রহমান শ্রাবন ও ক্রাইম রিপোর্টার মঞ্জুর হোসেন রাসেল। সাংবাদিক শ্রাবন ও রাসেলকে অপহরণের পর হত্যার চেষ্টার ইতোমধ্যে ১২দিন অতিবাহিত হলেও সন্ত্রাসী রাজার বিরুদ্ধে থানায় মামলা নিচ্ছেনা পুলিশ। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা না নেয়ায় নিরীহ শ্রাবণ-রাসেলের পরিবারে অজানা সংশয় বিরাজ করছে।

    এদিকে সন্ত্রাসী রাজা বাহিনীর অস্ত্রাঘাতে আহতদের মধ্যে রাসেল স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করলেও শ্রাবণকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় গোটা রাজশাহীসহ সারা দেশের সাংবাদিক মহলে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার করছে।সর্বস্তরের সাংবাদিক মহল সাংবাদিক শ্রাবন ও রাসেলের উপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহনসহ গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
    সূত্র মতে,রাজশাহীর এক সময়কার ক্রস ফায়ারের আসামী তালিকাভূক্ত সন্ত্রাসী আনোয়ার হোসেন রাজা সরকার দলীয় রাজনৈতিক নেতাদের ছত্র-ছায়ায় দীর্ঘ দিন ধরে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আসছিল। মহানগরীর আবাসিক হোটেল,মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে রেলওয়েসহ অন্যান্য সেক্টরে অনৈতিকভাবে আধিপত্য বিস্তার করে আসছে।

    এসব কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে দৈনিক বিজয় পত্রিকার রাজশাহী ব্যুরো প্রধাণ মোস্তাফিজুর রহমান শ্রাবণ ও ক্রাইম রিপোর্টার রাসেল ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল স্থানীয় প্রশাসন ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তা বন্ধ করে দেয়। সাংবাদিক শ্রাবন-রাসেলের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের প্রেক্ষিতে সন্ত্রাসী রাজার আয়ের উৎস্য একের পর এক বন্ধ করে দেয়ায় রাজা ক্ষিপ্ত হয়ে এর জের ধরে গত ১৬ আগষ্ট রাত সাড়ে ৯টায় সন্ত্রাসী,চাঁদাবাজ, খুনী আনোয়ার হোসেন রাজা তার বাহিনীসহ হাদির মোড় এলাকা থেকে দৈনিক বিজয় পত্রিকার ব্যুরো প্রধাণ মোস্তাফিজুর রহমান শ্রাবণকে কিডন্যাপ করে নিয়ে যায় রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন এর উত্তর দক্ষিন কোনে অবস্থিত রেলওয়ে মাঠে। সেখানে তাকে রাজার টোকাই বাহিনী প্রায় একঘন্টা আটকে রাখে।
    আর সেই সময়টুকু সেখানে অনুপস্থিত থাকে রাজা। একঘন্টা পরে রাজা সেখানে উপস্থিত হয়ে প্রথমে নিজে ও পরে তার টোকাই বাহিনী দিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান শ্রাবণকে শারীরিক নির্যাতন করে অচেতন অবস্থায় ফেলে রাখে। পরবর্তিতে রাত অনুমান ১ টায় আনোয়ার হোসেন রাজা ও তার টোকাই বাহিনী শ্রাবণকে রেললাইনের উপরে নিয়ে এসে বিবস্ত্র করে মোবাইলে ভিডিও চিত্র ধারন ও ছবি উঠায় অতঃপর তাকে দ্বিতীয় দফা শারীরিক নির্যাতন করে এবং সেখান থেকে শ্রাবণকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের ওভার ব্রিজের দক্ষিন পাশে রাজার বাড়ির সামনে সেখানে তাকে তৃতীয় দফা শারীরিক নির্যাতন করা হয় এবং তার বাম কানের ভেতরে গরম চা ঢেলে দেয়া হয়।
    রাত আনুমানিক ৩টায় রাজার নির্দেশে তার সন্ত্রাসী বাহিনী শ্রাবণের বাসায় গিয়ে দৈনিক বিজয় পত্রিকার ক্রাইম রিপোর্টার মঞ্জুর হোসেন রাসেলকে কিডন্যাপ করে নগদ ৩৫ হাজার টাকাসহ শ্রাবণের বাসার সমস্ত মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। সেখানে মঞ্জুর হোসেন রাসেলকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করা হয় ও পুর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী শ্রাবণ ও রাসেলকে ভুয়া সাংবাদিক আখ্যায়িত করে ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করার জন্য ইয়াবার ডিলার টোটন ও সফি বেশ কিছু পরিমান ইয়াবা নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়। সেইসাথে ইয়াবা ডিলার মিলন ও রেজাউলকে রাজা ফোন দিয়ে স্পটে ডেকে নিয়ে শ্রাবণকে আরেক দফা শারীরিক নির্যাতন করা হয়।
    ভোর ৬টায় মালোপাড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ নাসির সেখানে উপস্থিত হয়ে দৈনিক বিজয় পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক এর সাথে মোবাইলে কথা বলেন উপস্থিত সাংবাদিক এম এ হাবিব জুয়েল ও মোবাইল ফোনে কথা বলেন নির্বাহী সম্পাদকের সাথে। অতঃপর সাংবাদিক জুয়েল,নবী,ও মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাসিরের উপস্থিতিতে দৈনিক বিজয় পত্রিকার রাজশাহী বিভাগীয় ব্যুরো অফিস ও মিডিয়া ভিশন কালচারাল একাডেমীর রাজশাহী বিভাগীয় শাখা অফিসে তল্লাশী চালায় ইয়াবা সম্রাট মিলন ও রেজাউল। ওরা দু’জন এমনভাবে তল্লাশী করে তাতে বোঝা যায় যেন পুলিশ প্রশাসনের কোন কর্মকতা।

    নাসিরের সামনেই অফিসে নিজ হাতে তালা দেয় মিলন এবং অফিসের চাবি মালোপাড়া ফাড়ির ইনচার্জ এর কাছে হস্তান্তর করার কথা হলেও তিনি চাবি হস্তান্তর না করে নিজের কাছেই রেখে দেন। এদিকে দৈনিক বিজয় পত্রিকা ও মিডিয়া ভিশন কালাচারাল একাডেমী রাজশাহী বিভাগীয় শাখার অফিসের মালামাল সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে উদ্ধারের কথা বললে মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ দৈনিক বিজয় পত্রিকার প্রতিনিধিকে মোবাইল ফোনে জানান, তার কাছে মিলন বা রেজাউল চাবি জমা দেননি। তবে তিনি বিষয়টি দেখবেন ও চাবি উদ্ধার করে দৈনিক বিজয় প্রতিনিধির উপস্থিতিতে সকল মালামাল বুঝিয়ে দেবেন বলে আশ্বাস দেন। সেই সাথে শ্রাবণকে উদ্ধার করে প্রথমে ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।

    তখন ফাঁড়ির ইনচার্জ নাসিরের সাথে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক এম এ হাবিব জুয়েল, নবী, রাজ্জাক ও ইয়াবা সম্রাট মিলন ও রেজাউল। পরে শ্রাবণকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে শ্রাবনের কাছ থেকে ক্যানন ডিএসএলআর,৭০০ডি মডেলের ক্যামেরা, রেজাউলের কাছে ৮হাজার টাকায় বিক্রি মর্মে একটি কাগজে লিখিত নিয়ে ক্যামেরাটি মিলন ও রেজাউল নিয়ে নেয় সেই সাথে শ্রাবনকে মিলন হুমকি প্রদান করে বলে এসব পুলিশের কাছে কিছু বললে তাকে জানে মেরে ফেলা হবে এভাবে সারাদিন থানায় বসিয়ে রেখে সন্ধার আগে থানার গেটে রিক্সার তুলে শ্রাবনকে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
    এদিকে খবর পেয়ে রাসেলের মা-ভাই রাসেলকে ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। কয়েকদিন পর রাসেল কিছুটা সুস্থ্য হলে তাকে বাসায় আনা হয়। কিন্তু বাসায় আনার একদিন পর তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
    এদিকে শ্রাবন থানার সামনে থেকে রিক্সা থেকে একটি চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার পর পারিবারিক সহযোগিতায় ঢাকায় অদ্যাবধি চিকিৎসাধীন রয়েছে। আর রাজা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যসহ তার ছোটভাই রাসেল ও মাসুম ঝিন্টু, রেন্টু, নয়ন, শুভ, শামীম,রাব্বী,রোকন,মিন্টু, সুজন, কাউসার রকি,রাজন লিটো,আনোয়ার, রাহাত, সুমন,আকাশ,রাজু,সিবলি,রেজাউল এবং ইয়াবা সম্রাট সফি,টোটন,মিলন,ও রেজাউল (২) বহাল তবিয়তে রাজশাহী মহানগরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের ভয়ে বর্তমানে শ্রাবণ ও রাসেলের পরিবারে চরম শংকা বিরাজ করছে।ভুক্তভোগীরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রধাণমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছে।