রাজশাহীতে আ.লীগ নেতা শহিদুল ও শিক্ষক মাইনুলের রগ কর্তন

    1
    665

    রাজশাহী মহানগরের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামের (৩৭) বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাঁর দুই পায়ের রগ কেটে দিয়েছে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। গত রোববার রাতে নগরের বিনোদপুর এলাকায় এ হামলার সময় শহিদুল ইসলামের বাড়িতে থাকা মির্জাপুর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক মাইনুল ইসলাম (৩৫) ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী রুহুল আমিনকেও (৩০) কুপিয়ে জখম করেন জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। এঁদের মধ্যে মাইনুলের বাঁ হাতের রগ কেটে দেওয়া হয়েছে। তাঁর মাথাও কুপিয়ে জখম করেছেন জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা।
    আহত ব্যক্তিদের রাতেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে সেখান থেকে শহিদুল ইসলামকে স্থানান্তর করা হয় ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে।
    জামায়াত-শিবিরের এ হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তাঁরা রাতেই মির্জাপুর মহল্লার জামায়াতের কর্মী মুক্তার আলীর বাড়িতে হামলা চালান। এতে মুক্তার আলী (৫০), তাঁর স্ত্রী সুজফা বেগম (৪৫) ও ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩০) আহত হন। হামলায় সুজফা বেগমের হাতের কয়েকটি আঙুল কেটে পড়ে যায়। তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একই সময় জামায়াত কর্মী ওমর আলী ও নূরজাহান বেগমের বাড়িতেও হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। নগরের লক্ষ্মীপুর এলাকায় অবস্থিত ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের ওষুধের দোকানে আগুন ধরিয়ে দেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা।
    নূরজাহান বেগমের দুই ছেলে শিবিরের কর্মী। তাঁর দুই ছেলে এখন হাজতে রয়েছেন।
    শহিদুল ইসলামের স্ত্রী সাবিনা খাতুন জানান, রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাঁর স্বামী ঘরে বসে শিক্ষক মাইনুল ইসলাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী রুহুল আমিনের সঙ্গে গল্প করছিলেন। হঠাৎ ২০ থেকে ২৫ জন তাঁদের বাসায় হামলা চালান। তাঁরা তাঁর স্বামীকে পা ধরে টেনেহিঁচড়ে নিচে নামান এবং কুপিয়ে জখম করেন। হামলাকারীরা অধিকাংশ জামায়াত-শিবিরের কর্মী।
    শহিদুলের ভাই রবিউল ইসলাম বলেন, হামলার সময় তিনি বাইরে ছিলেন। পরে গিয়ে দেখেন, তাঁর ভাই বাঁচার জন্য দৌড়ে বাড়ির পেছনের দিকে যান। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। সেখানে মাটিতে ফেলে তাঁর ভাইকে কুপিয়ে জখম করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য তাঁর পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। রবিউল জানান, একই স্থানে অচেতন অবস্থায় মাইনুল ও রুহুল আমিনও পড়ে ছিলেন। পরে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
    রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের প্রধান বি কে দাম বলেন, শহিদুল ইসলামের দুই পায়ের শিরা কেটে গেছে। তাঁর শিরা-উপশিরা এমনভাবে কেটে নষ্ট করা হয়েছে যে ভাসকুলার সার্জন ছাড়া অস্ত্রোপচার সম্ভব নয়। তিনি বলেন, তাঁকে ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অস্ত্রোপচার সফল না হলে তাঁর পা কেটে ফেলে দিতে হতে পারে। তিনি আরও বলেন, মাইনুলের বাঁ হাতের শিরা কেটে গেছে। তবে এর চেয়ে ভয়ানক অবস্থা হচ্ছে তাঁর মাথার আঘাত। তাঁর মাথার হাড় পর্যন্ত কেটে গেছে।

    শহিদুল ইসলামের ভাই রবিউল জানান, তাঁরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

    মতিহার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল মজিদ জানান, শহিদুল ইসলামের বাড়িতে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরাই হামলা করেছেন। পরিবারের লোকজন তাঁদের কয়েকজনকে চিনতে পেরেছেন।