রাজপথে নামছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা

    0
    200

    আমারসিলেট24ডটকম,২১ডিসেম্বরঃ সরকারের ক্ষমতা হস্তান্তর দাবি আদায়ে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮দলীয় জোটের চলমান আন্দোলনকে সফল করতে এবার রাজপথে নামতে যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আন্দোলনের মাঠে তৃণমূল নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ততায় সন্তুষ্ট হলেও ঢাকায় জোটের শীর্ষ নেতাদের গরহাজিরে ক্ষুব্ধ আছেন তিনি। এ অবস্থায় দল ও জোটের শীর্ষ নেতাদের দিকে না তাকিয়ে আন্দোলনকে সফল করতে বেগম খালেদা জিয়া নিজেই আগামীতে যে কোনোদিন রাজপথে নেমে আসতে পারেন। রাজপথে অবস্থান করে তিনি আন্দোলন পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে ১৮দলীয় জোটের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।
    এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আসন্ন ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে প্রয়োজনে একাদশ সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগ সরকারকে আর সময় দিতে রাজি নয় বেগম খালেদা জিয়া। এ কারণে ২৫ ডিসেম্বর খ্রিস্টান স¤প্রদায়ের বড়দিন শেষে যে কোনো সময় রাজপথে নেমে আন্দোলনে অবস্থান নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। আজ শনিবার সকাল ৬টা থেকে বিরোধী জোটের ৫ম দফা ৮৩ ঘন্টা অবরোধ শুরু হয়েছে। ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠায় প্রায় ২ বছর দরে আন্দোলন করছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮দলীয় জোট।
    আন্দোলন প্রসঙ্গে বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, সময় খুবই কম। এসময়ের মধ্যে গণতন্ত্র বহাল রেখে সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তা নাহলে বেগম জিয়া নিজেই নির্দলীয় সরকারের আন্দোলনে রাস্তায় অবস্থান নেবেন। আর তিনি রাস্তায় নেমে এলে গোটা দেশ জ্বলবে। তখন সরকারের পতন সুনিশ্চিত। এ অবস্থায় সরকারের উচিত সময় থাকতে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে ঘোষিত তফসিল স্থগিত করে সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।
    বিএনপি নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ক্ষমতায় এসে অনেক খেলা খেলেছেন, অনেক চমক দেখিয়েছেন। একের পর এক ইস্যু সৃষ্টি করে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিতে সরাতে চেয়েছেন। কিন্তু আর কোনো ইস্যু পাবেন না। এবার সরকারের বিদায় খুব নিকটে। একাদশ নির্বাচনের কথা তো দূরের কথা, সরকার ১০ম সংসদ নির্বাচনই করতে পারে কিনা তা-ই ভেবে দেখুন। একাদশ নির্বাচনের জন্য যদি সমঝোতায় আসা যায় তাহলে ১০ম নির্বাচন নিয়ে কেন সম্ভব নয়? দাবি আদায়ে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বিরোধী জোটের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। সমঝোতার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী আন্তরিক নয় বলেই দেশে একতরফা প্রহসনের নির্বাচন হতে যাচ্ছে।
    অন্যদিকে গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর একটি গোপন স্থানে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুস সালাম মহানগর বিএনপির সকল থানা ও ওয়ার্ডের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের সাথে সভা করে দাবি আদায়ে বিরোধী জোটের আন্দোলনকে সফল করতে রাস্তায় নামার নির্দেশ দেন। ওই সভায় যারা আন্দোলনে নিজেদের সম্পৃক্ত করবে না তাদেরকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কারেরও ঘোষণা দেয়া হয়। কিন্তু তারপরও ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের রাজধানীতে আন্দোলনে অংশ নিতে দেখা যায়নি। এ কারণে ক্ষুব্ধ খালেদা জিয়া ঢাকা মহানগর বিএনপির সকল প্রকার কার্যক্রম, কমিটি স্থগিত এমনকি বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন বলেএকটি সুত্র থেকে জানা যায়।

    ইতিমধ্যে খালেদা জিয়া ঢাকা মহানগর বিএনপির সার্বিক দায়িত্ব নিজের হাতে নিয়ে নিয়েছেন।বিএনপি সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতার লক্ষ্যে তিনবার সভা হলেও নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা কোনো সমাধানে পৌঁছানো যায়নি। ক্রমান্বয়ে ওই সমাধানের পথ ক্ষীণ হয়ে আসছে। এ অবস্থায় বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমেই সমস্যার সমাধানে জোর দিচ্ছেন। কারণ নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বর্তমান অবস্থানেই অনড় সরকার।