রমজান মিয়া ভিক্ষা করতে চায় না তবুও

    0
    255

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১১জুলাই,জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া,সুনামগঞ্জ: আল্লাহর হস্তে ভিক্ষা দেন ভাই। কাম-কাজ করার ক্ষমতা নাই। হাত নাই,পায়ে জোড় পাই না,নেই কাজ করার ক্ষমতা জীবন সংসারে খাইয়া পইড়া বাচঁবার লাগি ভিক্ষা দেন ভাই। দেন না ভাই আল্লাহর হস্তে। প্রতিদিন এভাবেই ধারে ধারে ভিক্ষা করছে রমজান মিয়া। তার ডাকে সাড়া দিয়ে অনেকেই ১-২টাকা ৫টাকা দিচ্ছে। আবার অনেকেই না দিয়েই চলে যাচ্ছে কাছ দিয়েই।

    তার কাছে এমন অবস্থা জানতে চাইলেই বুক ভড়া র্দীঘশ্বাস নিয়ে জানায়,তার জীবনের এই করুন কাহিনী। জীবনের একটি দূঘটনা আমার সকল স্বপ্ন শেষ করে দিছে ভাই ভিক্ষা করতে চাই না,কি করমু এছাড়া ত আর কোন উপায় নাই। সুনামগঞ্জ জেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে ভিক্ষা করি। সবার কাছেই চাই সবাই কম বেশি দেয় আর যে যা দেয় সারাদিন শেষে ২৫০-৩০০টাকা হয়। আবার কোন দিন তার চেয়ে কম পাই। তাই নিয়ে রাতে দিরাই নিজ বাড়িতে গিয়ে মায়ের হাতে তুলে দেই আর মা এই টাকা দিয়ে কোন রখমে সংসার চালায়।

    সংসারে আমার মা,বাবা,আমার বৌ ও ছেলে নিয়ে ৫জনের কষ্টের জীবন পার করতাছি। আর কোন দিন শরীল খারাপ বা আবহাওয়া খারাপ থাকলে বাড়ি থেকে বের হই না তখন না খেয়ে থাকতে হয়। ভিক্ষা করতে মনে চায় না কিন্তু কোন উপায় নাই সংসার চালাতে এই পথে হাটতাছি। কথা গুলো বলছিল সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার বড়ারগাঁ গ্রামের মোহাম্মদ কদ্দুছ মিয়ার ছেলে রমজান মিয়া (২২)।

    কথা হয় সুনামগঞ্জের পুরাতন বাসষ্ট্যান্ডে রাতে ভিক্ষা করার সময়। আরো জানায়,১৪বছর বয়সে লেখাপড়া ছেড়ে আমি সংসার চালাবার জন্য রাজ মিস্ত্রির যোগালের কাজে যোগ দেই। দিরাই বাজারের একটি দু-তলা বিল্ডিংয়ে কাজের এক ফাকেঁ একটি রড তুলে অন্য জায়গায় সরানো সময় অজান্তেই কারেন্টের তারে লেগে যায় শরীলে। সাথে সাথেই কারেন্টে আমার শরীল জ্বালিয়ে দিছে। শরীল জ্বালাইছে না আমার জীবনটাই জ্বালিয়ে দিছে আর এই দশা হইছে। এর পর থেকে সংসার চালাতে ভিক্ষা শুরু করি। ভিক্ষা করতে চায় না ভাই যদি ব্যবসা করার টাকা পাইতাম তাহলে ব্যবসা করতাম। ভিক্ষা করা ছেড়ে দিতাম।

    রমাজান মিয়া আরো জানায়,সরকারী ভাবে পঙ্গু ভাতা দেয় তাও সঠিক ভাবে পাই না। ৬মাসের টাকা আইলে ২মাসের দেয় বাকিটা দেয় না। কিছু কইলে কয় টাকা আয় নাই। রমজান মিয়ার মা জানায় ছেলেটাই একমাত্র ভরসা আমার সংসারের। তার উপার্জিত টাকা দিয়েই কষ্টের সংসার চালাই। সবার কাছে আমার এই ছেলেটা ও সংসার চালাতে সবার সহযোগীতা চাই। সবাই সহযোগীতা করলে আমার ছেলেটা আর ভিক্ষা করত না।