রংপুরে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের “গণ অবস্থান কর্মসূচি”

    0
    222

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৬জানুয়ারীঃ   সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্মের সাঁওতাল আদিবাসী-বাঙ্গালিদের পৈত্রিক সম্পত্তি ফেরতের দাবিতে রংপুরে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের “গণ অবস্থান কর্মসূচি” অনুষ্ঠিত।
    “সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্মের সাঁওতাল আদিবাসী-বাঙ্গালিদের পৈত্রিক সম্পত্তি ফেরত দাও।” গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্মের নামে কেড়ে নেয়া বাপ-দাদার জমিতে আদিবাসী-বাঙ্গালিদের বসতির উপর ০৬ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে পুলিশের বর্বর গুলিতে শ্যামল হেমব্রম, মঙ্গল মার্ডী ও রমেশ টুডুকে হত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, আবাদি ফসল নষ্ট, ঘরবাড়ি ভাংচুর ও নির্যাতনের বিচার এবং ক্ষতিপূরণ সহ ৭ দফা দাবিতে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের প্রতি জেলায় জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে আজ ১৬ জানুয়ারি ২০১৮, মঙ্গলবার, সকাল ১১ টায় রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে গণ অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
    অবস্থান কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদ রংপুর জেলা শাখার সভাপতি এ্যাড. মনিলাল দাস। অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির রংপুর জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য অশোক সরকার, আদিবাসী ছাত্র পরিষদের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি বিভূতী ভূষণ মাহাতো, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর শাখার সাবেক সভাপতি পরিমল মাহাতো, সভাপতি রাজিব কুমার মাহাতো প্রমূখ।
    সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ রংপুর জেলা সমন্বয়ক আব্দুল কুদ্দুস, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ রংপুর মহানগর শাখার সভাপতি গৌতম রায়, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি রংপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক শাহিন রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রংপুর মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল, জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম টুটুল, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ রংপুর জেলা সভাপতি রথীশ চন্দ্র ভৌমিক, পীরগঞ্জ ভূমিহীন কল্যাণ সমিতির সভাপতি রোজিনা সরেন, সাধারণ সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট রংপুর জেলা কমিটির সদস্য প্রহল্লাদ রায়, আদিবাসী সাংস্কৃতিক সংঘ, শেখপাড়া, রংপুরের সভাপতি বুধু ধানোয়ার প্রমূখ।
    অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, অবিলম্বে সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্মের আদিবাসী-বাঙ্গালিদের ১৮৪২,৩০ একর সম্পত্তি ফেরত দিতে হবে। একইসাথে ০৬ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে হামলা করে তিনজন আদিবাসীকে হত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, নির্যাতনের সাথে জড়িত সকলের বিচার ও শাস্তির দাবি জানান। সেদিনের ঘটনার মূল মদদদাতা স্থানীয় এমপি আবুল কালাম আজাদ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুলের শাস্তির দাবি জানান বক্তারা। এছাড়াও বক্তারা সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্মের আদিবাসী-বাঙ্গালিদের ৭ দফা দাবির পূর্ণ সমর্থন জানান।
    ৭ দফা দাবিসমূহঃ
    ১। গোবিন্দঞ্জের সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম-এর বিক্যুইজিশন (জবয়ঁরংরঃরড়হ) করা ১৮৪২.৩০ একর সম্পত্তি আদিবাসী-বাঙ্গালিদের ফেরত দিতে হবে।
    ২। ১৯৪৮ সালের ঞযব ঊধংঃ ইবহমধষ (ঊসবৎমবহপু) জবয়ঁরংরঃরড়হ ড়ভ চৎড়ঢ়বৎঃু অপঃ ১৯৪৮ (ঘড়.ঠওওও ড়ভ ১৯৪৮) মোতাবেক যে কার্যের জন্য (ইক্ষুচাষ) গ্রহণ করা হয় তা না হলে খেসারতসহ পূর্বমালিক আদিবাসী-বাঙ্গালিদের ফেরত দিত হবে।
    ৩। আদিবাসীদের সম্পত্তি কোন সরকার/কর্তৃপক্ষ রিক্যুইজিশন (জবয়ঁরংরঃরড়হ) করা এখতিয়ার বহির্ভূত হওয়ায় এ ধরণের কার্য বাতিল ও পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করে আদিবাসীদের ফেরত দিতে হবে।
    ৪। ঘরবাড়িতে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং গুলি করে নিহত ও গুরুতর আহত করার সাথে জড়িত উস্কানিদাতা ও সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং নিহত ও আহতদের জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
    ৫। ৬ নভেম্বর ২০১৬ তারিখের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ আদিবসাী-বাঙ্গালিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। আদিবাসী-বাঙ্গালি নারী-পুরুষের উপর স্থানীয় সন্ত্রাসীদের জুলুম ও পুলিশী হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
    ৬। আদিবাসী সাঁওতালদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগকারী চিহ্নিত পুলিশ কর্মকর্তাসহ জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
    ৭। ২০০৪ সালের সুগার মিল বন্ধের পর প্রভাবশাীদের মাঝে লিজের নামে যে অর্থআত্মসাৎ ও দুর্নীতি হয়েছে সেই দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।প্রেস বিজ্ঞপ্তি