যশোরে তিন কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় শাস্তি দাবি

    0
    258

    যশোরে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দোষিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠন ‘কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর’। শনিবার শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা এই সংগঠনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
    কেন্দ্রীয় খেলাঘরের সভাপতিম-লীর চেয়ারম্যান অধ্যাপিকা পান্না কায়সার ও সাধারণ সম্পাদক প্রণয় সাহা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পরিচালিত দেশের সকল ‘শিশু কিশোর/কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্র’ শিশুদের বেড়ে ওঠার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা সহ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার বিষয়ে আরো নজরদাড়ি বাড়ানোর তাগিদ দেয়া হয়।
    খেলাঘর নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারী নিয়ম অনুযায়ি ‘শিশু আইন ২০১৩ অনুযায়ী- আইনের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িত বা সংস্পর্শে আসা শিশু বা অভিবাবক কর্তৃক প্রেরীত শিশুদের উন্নয়ন ও স্বাভাবিক জীবনে একীভূত করার লক্ষ্যে শিশু (কিশোর/কিশোরী) উন্নয়ন কেন্দ্র পরিচারিত হচ্ছে। উন্নয়ন কেন্দ্রসমূহে স্বীকৃত পদ্ধতিতে আইনের সংস্পর্শে আসা শিশু ও অভিবাবক কর্তৃক প্রেরীত শিশুদের কেইস ওয়ার্ক, গাইডেন্স, কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে মানসিকতার উন্নয়ন, ডাইভারশন ইত্যাদি স্বীকৃত পদ্ধতিতে রক্ষণাবেক্ষণ, ভরণপোষন, প্রশিক্ষণ, দক্ষতা উন্নয়ন করে কর্মক্ষম ও উৎপাদনশীল নাগরিক হিসেবে সমাজে পুনর্বাসিত/আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা’র কথা।’
    শিশুদের সার্বিক উন্নয়নে দায়িত্বশীল সরকারী এই সংস্থার ভেতরে তিন কিশোরকে হত্যার ঘটনা গোটা জাতিকে রীতিমতো স্তম্বিত করেছে। এ ঘটনায় সবাই উদ্বিগ্ন। পৈশাচিক এই ঘটনা দেশের তিনটি ‘শিশু কিশোর/কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্র’ কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাশাপাশি এসব কেন্দ্রে শিশুদের বেড়ে ওঠার সুষ্ঠু পরিবেশ নেই তা আবারো চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। এই প্রেক্ষাপটে যশোরের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন কিশোর হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের ‘দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি’ নিশ্চিত করতে হবে। যেন ভবিষ্যতে শিশুদের জন্য ‘নিরাপদ’ এমন স্থানগুলোতে এ ধরণের অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটাতে নিরুৎসাহিত করবে।
    বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোর সদর উপজেলার পুলেরহাটে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন কিশোরের মৃত্যু হয়, আহত হয় আরও অন্তত ১৫ জন। এ ঘটনায় কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ও এক কিশোরসহ ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। ঘটনা তদন্তে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সমাজসেবা অধিদপ্তর।
    এর আগে শুক্রবার রাতে নিহত পারভেজ হাসানের বাবা রোকা মিয়া যশোর কোতয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনি অজ্ঞাত কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করেন বলে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা যশোরের চাঁচড়া ফাঁড়ি ইনচার্জ ইন্সপেক্টর রোকিবুজ্জামান জানান।
    শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ এ ঘটনা বন্দি কিশোরদের দুই দলের সংঘর্ষ বলছে। তবে আহত কিশোরদের ভাষ্য কেন্দ্রের প্রধান নিরাপত্তা কর্মীর সঙ্গে দ্বন্দের জেরে কেন্দ্র কর্মকর্তা, আনসার সদস্য ও তাদের ‘অনুগামী’ কয়েকজন কিশোরের মারপিটে এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এদিকে নিহতের মামলায় কেন্দ্রর কেন্দ্রের বরখাস্ত হওয়া সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাসুদসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।