মৌলভীবাজার হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের প্রচার মিছিল

    0
    258

    ২৯ সেপ্টেম্বর হোটেল শ্রমিক ফেডারেশনের সিলেট বিভাগীয় সমাবেশ

    বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণভাবে হোটেল সেক্টরে নি¤œতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ঘোষণা, হোটেল সেক্টরে সরকার ঘোষিত নি¤œতম মজুরি কার্যকর, ৮ ঘন্টা কর্ম দিবস, নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্রসহ শ্রম আইন বাস্তবায়ন, বর্তমান শ্রমআইনের সংশোধনী প্রস্তাবের ২৬ ধারাসহ সকল শ্রমিকস্বার্থ বিরোধী কালাকানুন বাতিল করে গণতান্ত্রিক শ্রমআইন প্রণয়ন, শ্রমিকদের জন্য রেশনিং চালু এবং সিলেটে স্থায়ী শ্রম আদালত স্থাপন করার দাবিতে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশন রেজিঃ বি-২০৩৭ এর সিলেট বিভাগীয় কমিটির উদ্যোগে সিলেট কোর্ট পয়েন্টে বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

    বিভাগীয় সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ ২৩০৫ এর উদ্যোগে ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় এক প্রচার মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। শ্রমিক ইউনিয়নের কোর্টরোডস্থ কার্যালয়ে জমায়েত হয়ে নেতাকর্মীরা মিছিল শুরু করে কোর্টরোড, চৌমুহনা, সেন্ট্রাল রোড, কুসুমবাগ এলাকা প্রদক্ষিণ করে কুসুমবাগ এলাকায় এসআর প্লাজার সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।

    জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশন রেজিঃ বি-২০৩৭ এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সম্পাদক মোঃ ছাদেক মিয়া এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস ও সিলেট জেলা কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক রমজান আলী পটু।

    মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ ২৩০৫ এর সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন মিয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ-১৯৩৩ এর সহ-সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী, মৌলভীবাজার জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ-২৪৫৩ এর সভাপতি মোঃ সোহেল আহমেদ, হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন কুলাউড়া উপজেলা কমিটির উপদেষ্ঠা মোঃ ছায়েদ মুন্সী ও আবুল কালাম, হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন শেরপুর আ লিক কমিটির সভাপতি শংকর দাশ প্রমূখ। সমাবেশে বক্তারা সরকারের শ্রমআইন সংশোধনের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে বলেন এ পর্যন্ত যতবার শ্রমআইন সংশোধন করা হয়েছে ততবারই শ্রমিকদের অধিকার কিছু না কিছু ক্ষুন্ন করা হয়েছে।

    আইএলওসহ সাম্রাজবাদী বিভিন্ন সংস্থার চাপে সম্প্রতি সরকার মন্ত্রীসভায় শ্রমআইনের যে সংশোধণী অনুমোদন করেছেন সেখানেও মালিকদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের বিভিন্ন শর্ত, বর্তমান শ্রম আইনের ২৬ ধারাসহ শ্রমিক স্বার্থবিরোধী বিভিন্ন বহাল রাখা এবং একজন শ্রমিকের মৃত্যুজনিত ক্ষতিপুরণ মাত্র ২ লাখ টাকার নির্ধারণ করার প্রস্তাব করেছেন।

    সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন ২০০৯ সালের পর সরকার নতুন করে গত ১ মার্চ ২০১৭ তারিখে হোটেল সেক্টরের শ্রমিকদের জন্য নি¤œতম মজুরির গেজেট(এসআরও নং ৩৮-আইন/২০১৭) প্রকাশ করেন, বর্তমান ঊর্দ্ধগতির বাজারদরে সরকার ঘোষিত মজুরিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে একজন শ্রমিক ১০ দিনও চলতে পারবে না। তারপরও মালিকরা সরকার ঘোষিত নি¤œতম মজুরি কার্যকর না করে বে-আইনীভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন।

    শ্রম আইনে স্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ ও বাসস্থানের বিধান থাকলেও আমরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করতে ও থাকতে হয়।  আমরা দৈনিক ১০/১২ ঘন্টা অমানবিক পরিশ্রম করে অর্ধাহারে-অনাহারে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হই।

    সমাবেশ থেকে আসন্ন দুর্গা পূজায় হিন্দু শ্রমিকদের মাসিক বেতনের সমপরিমান উৎসব বোনাস প্রদান, বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণ নি¤œতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ঘোষণা, হোটেল সেক্টরে সরকার ঘোষিত নি¤œতম মজুরি কার্যকর, ৮ ঘন্টা কর্মদিবস, নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্রসহ শ্রমআইন বাস্তবায়ন, চাল ডাল তেল লবনসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানো, দফায় দফায় গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির পরিকল্পনা বাতিল, সর্বস্তরে রেশনিং চালু, গণতান্ত্রিক শ্রমআইন প্রণয়ন, সিলেটে স্থায়ী শ্রম আদালত স্থাপন ও ৯০ দিনের মধ্যে শ্রমআদালতের সকল মামলা নিষ্পত্তি করার দাবি জানান।