মৌলভীবাজার মহিলা কলেজে ফলাফল খারাপ হওয়ার নেপথ্যে

    0
    159

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৮আগস্ট,আশরাফ আলী, মৌলভীবাজার: উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) পর্যায়ে মৌলভীবাজার সরকারি মহিলা কলেজে গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে ফলাফল খারাপ করছে বলে অভিযোগ করেছেন কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। ফলাফল খারাপ হওয়ার নেপথ্যে কারণগুলো কি? উঠে এসেছে অনুসন্ধানে।

    মৌলভীবাজার সরকারি মহিলা কলেজে ফলাফল খারাপ হওয়ার পেছনে যে কারণগুলো রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো শিক্ষকদের প্রাইভেট কোচিং বাণিজ্য। যার কারণে শিক্ষকরা ছাত্রীদের ক্লাসের প্রতি মনোযোগী হননা। শিক্ষকরা ছাত্রীদেরকে কোচিংয়ের প্রতি উদ্বুদ্ধ করেন। বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীরা প্রাইভেট কোচিংয়ের প্রতি মনোযোগী হয়। পরিপেক্ষিতে ছাত্রীরা ক্লাসের প্রতি হয়ে উঠে অমনোযোগী। আর ফলাফল গিয়ে পড়ে পরীক্ষায় ফেল।

    অনেকে মনে করেন শিক্ষার্থীদের ফেল করার পেছনে রয়েছে তাদের সঠিকমত ক্লাসে উপস্থিত না থাকা। ছাত্রীরা বাড়ী থেকে কলেজে ক্লাসের জন্য আসলেও আদৌ তারা ক্লাসে উপস্থিত হয় না। তারা ক্লাসে ফাঁকি দিয়ে ফুঁচকা, চটপটি খেতে চলে যায় বন্ধুদের নিয়ে। অনেক সময় দেখা যায় তারা মৌলভীবাজার পৌর পার্কে প্রেমিক নিয়ে ফুঁচকা, চটপটি খেতে।

    ছাত্রীরা সঠিকভাবে ক্লাসে উপস্থিত না হয়ে ক্লাসের সময় ফাঁকি দিয়ে তারা বিভিন্ন রেষ্টুরেন্টে ঘুরে বেড়ায়। আর ক্লাসে ও পড়ালেখায় অমনোযোগী হওয়ার কারণে মূলত পরীক্ষায় ফেল করে। এমনকি রয়েছে অভিবাবকদের অসচেতনতা। নিজের মেয়ে কলেজে সঠিকভাবে যাচ্ছে কিনা তার খবর না রাখা। অবাধে চলাফেরা করলে অভিবাববক তাদের খোঁজ-খবর না রাখা। যার পেক্ষিতে প্রতিনিয়ত ঘটছে অনাকাঙ্খিত ঘটনা। যার প্রভাব পড়ে পড়ালেখায়।

    চলতি বছর এই কলেজ থেকে ১৩৯১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়। এর মধ্যে পাস করে ৮৫৯ জন। অকৃতকার্য হয় ৫৩২ জন পরীক্ষার্থী। জিপিএ-৫ আসেনি একটিও।

    ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষে বিজ্ঞান বিভাগে কলেজ থেকে ২০১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। যার মধ্যে পাশ করে ১১৭ জন। পাশের হার ৬২.১৬%। সাধারণ বিভাগ থেকে ৮৩৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। যার মধ্যে পাশ করে ৫৬৯ জন। পাশের হার ৬৮.৭২%। ব্যবসায় বিভাগ থেকে ৩৫৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। যার মধ্যে পাশ করে ১৭৩ জন। পাশের হার ৪৮.৮৭%। কলেজে মোট পাশের হার ৫৯.৯১%।

    সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী সাবিহা আক্তারের সাথে কথা বললে জানা যায়, কলেজে সময়মত ক্লাসে শিক্ষকরা উপস্থিত হন না। ক্লাস করান না শিক্ষকরা। ছাত্রদেরকে প্রাইভেটের কথা বলেন। যার জন্য অনেক ছাত্রী প্রাইভেটের দিকে মনোযোগী হয়। কলেজের ক্লাসের প্রতি মনোযোগী হয় না। এর ফলে প্রতি বছর কলেজের ফলাফল খারাপ হয়।

    একজন অভিবাবকের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, কলেজে ক্লাসে ছাত্রীরা গেলে শিক্ষক প্রাইভেটের কথা বলেন। সময়মত ক্লাস করেন না শিক্ষকরা।

    এব্যাপারে সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো: আজিজুর রহমান সাথে কথা বললে তিনি জানান, সিলেট বিভাগে শিক্ষার হার এমনিতেই কম। হাওর অ ল হওয়ার কারণে অভিবাবক সচেতনতা কম। এমনকি শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় কোচিং করতে পারে না। মেধাবী শিক্ষার্থীও কলেজে কম ভর্তি হয়। মেধাবীরা পাশ্ববর্তী সরকারি কলেজে চলে যায়। শিক্ষক সংকট থাকার কারণে কলেজে ক্লাস নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। রয়েছে শ্রেণীকক্ষের সংকট। কলেজ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে গড়ে উঠেনি নতুন কোন বিল্ডিং। জাতীয় ভার্সিটির পরীক্ষা কেন্দ্র হওয়ার কারণে ক্লাস হয় না। যার ফলে কলেজে পাশের হার কম।