মৌলভীবাজারে মেয়েকে খুন করে ফেঁসে গেলেন পিতা

    0
    203

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১১জুলাই,হাবিবুর রহমান খানঃ জেলার কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নের বাগৃহাল গ্রামে নিজের ঔরসজাত সন্তান রেহানা বেগমকে (১৭) কে ঘুমন্ত অবস্থায় হত্যা করে  মেয়ের প্রেমিকের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে ঘাতক পিতা  আকছর আলী (আছকির) (৪৮)। সোমবার বিকালে জেলার ৫ নম্বর আমলি আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তিনি  এ হত্যাকাণ্ডের দ্বায় স্বীকার করেছেন  বলে পুলিশ  সুত্রে জানা গেছে।

    প্রাপ্ত সুত্রে আদালতে ১৬৪ ধারার দেওয়া জবানবন্দিতে আকছর আলী হত্যাকাণ্ডের দ্বায় স্বীকার করে জানান, মেয়েকে হত্যার পর ব্লেড দিয়ে নিজের শরীরের বিভিন্ন অংশও রক্তাক্ত করেন তিনি। ওই দিন সন্ধ্যায় ঘাতক আছকর আলীকে মৌলভীবাজার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

    পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, রেহানা বেগম সেলাইয়ের কাজ করতেন সে সুবাধে পাশের আশ্রয় গ্রামের বাসিন্দা লাল মিয়ার (২২) সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। এ নিয়ে রেহানার বাবা আছকর তার মেয়েকে বিরক্ত করার অভিযোগ এনে লাল মিয়ার বিরুদ্ধে গত চার মাস আগে কুলাউড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। সম্প্রতি লাল মিয়া রেহানাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে উভয় পরিবারই এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। তবে লাল মিয়া ও রেহানার মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত ছিল।

    পুলিশ আরও জানায়, এর মধ্যে গত শুক্রবার বিকালে রেহানার মা শাহানা বেগম শিশু মেয়ে রোকসানাকে  নিয়ে পাশের এলাকা হাজীপুর ইউনিয়নের কটারকোনা গ্রামে বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান। পরের দিন শনিবার বিকালে বড় ছেলে আয়াত আলী (২২) তাদের আনতে ওই গ্রামে যায়। তখন ঘরে শুধু আছকর ও তার মেয়ে রেহানা ছিল (?)। পরে গত রবিবার সকালের দিকে পুলিশ বসতঘর থেকে গলাকাটা অবস্থায় রেহানার লাশ উদ্ধার করে।

    এরপর আছকর আলী পুলিশের কাছে দাবি করেন, শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে লাল মিয়ার নেতৃত্বে চার-পাঁচজন দুর্বৃত্ত ঘরে ঢুকে রেহানাকে জোর করে অপহরণের চেষ্টা চালায়। বাধা দেওয়ায় তারা আছকর ও রেহানাকে ছুরি দিয়ে কোপায়, এতে রেহানার মৃত্যু হয়। আছকরের দেওয়া বর্ণনা অনুযায়ী ওই দিন বিকালেই তার স্ত্রী শাহানা বেগম লাল মিয়াকে প্রধান আসামি করে তার কথিত সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

    কুলাউড়া থানার (ওসি তদন্ত) বিনয় ভূষণ রায় বলেন, হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে নিহতের বাবার কথাবার্তা অসংলগ্ন ও সন্দেহজনক হলে রোববার রাতে আছকরকে আটক করে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। হত্যার সময় ব্যবহৃত জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

    হত্যাকাণ্ডে স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় তার স্বামী আছকরকে গ্রেফতার দেখিয়ে ওই দিন সোমবার বিকালে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়। তবে রেহানার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের সত্যতা স্বীকার করেছেন লাল মিয়া। তিনি জানান ‘কুলাউড়া উপজেলার গাজীপুর এলাকায় চারদিন ধরে কাজে রয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাকে ফাঁসানোর কথা শুনে তিনি চোখে মুখে অন্ধকার দেখছে বলে আক্ষেপ করেন।”