মিয়ানমার বাহিনীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে নদীতে ১৯ লাশ

    0
    196

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,৩১আগস্ট,ডেস্ক নিউজঃ   মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে প্রাণ বাঁচাতে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের প্রবেশের সময় রোহিঙ্গা মুসলমানদের বহনকারী আরও দুটি নৌকা ডুবে গেছে। এতে এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

    কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. নুরুল আমিন জানান, গতকাল (বুধবার) দিবাগত রাত দেড়টা ও আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাতটার দিকে নাফ নদীর জলসীমানা অতিক্রম করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় এই নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। বেশির ভাগ শিশু ও নারী সাঁতরে কূলে উঠতে না পারায় ডুবে মারা যায়।

    আজ সকাল ৮টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ১৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ওই নৌকা দু’টিতে ধারণ ক্ষমতার চেয়েও ২২ থেকে ২৫ জন যাত্রী বেশি ছিল।

    নিহত ব্যক্তিরা মিয়ানমারের মংডু শহরের দংখালী ও ফাতংজা এলাকার বাসিন্দা বলে জীবিত উদ্ধার হওয়া লোকজনের কাছ থেকে জানা গেছে।

    কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরজুল হক টুটুল জানান, ‘আজ ভোররাত পর্যন্ত নাফ নদীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৯ নারী-শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে ১০টি শিশু ও ৯ জন নারী রয়েছে।

    এর আগে গতকাল বুধবার সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আরও তিনটি নৌকাডুবির ঘটনায় ছয়জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত ওই ছয়জনের মধ্যে তিনজন নারী ও তিনজন শিশু।

    মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে ২৪টি পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে ‘সন্ত্রাসী’ হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর ‘সন্ত্রাসীদের’ সঙ্গে দেশটির নিরাপত্তাকর্মীদের সংঘর্ষে প্রায় একশজন নিহত হন। এর মধ্যে ১২ নিরাপত্তাকর্মী ও বাকিদের ‘সন্ত্রাসী’ বলে দাবি করেছে মিয়ানমারে রাষ্ট্রীয় পরামর্শদাতার কার্যালয়। এর পর থেকেই জীবন বাঁচাতে হাজার হাজার মানুষ মিয়ানমার থেকে নদী, সমুদ্র ও স্থলপথে বাংলাদেশে আসা শুরু করে।

    আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) হিসাব অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে প্রায় ১৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। যদিও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সীমান্ত দিয়ে কাউকে অনুপ্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।

    ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে দেশটির উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। জাতিগতভাবে নির্মূল করতে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের গ্রামে আগুন দিয়ে বসতবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়াসহ গণহত্যা ও গণধর্ষণ চালায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা।সহিংসতার শিকার হয়ে গত বছরের অক্টোবর থেকে এক পর্যন্ত ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।পার্সটুডে