“বিভিন্ন দেশের ১ হাজার ৩৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫১৫ জনই বাংলাদেশি শ্রমিক।আটকদের মধ্যে ১০১ জন নারী ও তিনটি শিশুও রয়েছে।”
আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০২জুলাই,ডেস্ক নিউজঃ মালয়েশিয়ায় অবৈধ বিদেশি শ্রমিকদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানের প্রথম দিন বিভিন্ন দেশের ১ হাজার ৩৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫১৫ জনই বাংলাদেশি শ্রমিক।
কর্তৃপক্ষ বলছে, এদের কাছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের দেয়া এনফোর্সমেন্ট কার্ড (ই-কার্ড) বা সাময়িক অবস্থানের অনুমতিপত্র পাওয়া যায়নি।শনিবার মালয়েশিয়ার নিউ স্ট্রেইটস টাইমস অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।আটকদের মধ্যে ১০১ জন নারী ও তিনটি শিশুও রয়েছে।
অপরদিকে মুস্তাফার আলী জানান, নিয়ম ভেঙে অবৈধ অভিবাসীদের কাজে রাখায় ১৬ জন চাকরিদাতাকেও তারা আটক করেছেন।
মহাপরিচালককে উদ্ধৃত করে মালয়েশিয়ার সান ডেইলি লিখেছে, আটকরা ই-কার্ডের জন্য আবেদন না করার বিভিন্ন রকম কারণ দেখিয়েছেন। কেউ কেউ বলেছেন, তারা আবেদনের সময়সীমা জানতেন না। আবার কেউ বলেছেন, ওই সময়সীমা বাড়ানো হবে বলে চাকরিদাতারা তাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন।
মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বৈধ কাগজপত্রহীন শ্রমিকদের বৈধভাবে পুনঃনিয়োগের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত চার মাস ধরে ই-কার্ডের আবেদন নেওয়া হয়, যার সময় শেষ হয় ৩০ জুন।
ইমিগ্রেশন দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ২৬ হাজার ৯৫৭টি কোম্পানির মোট একলাখ ৫৫ হাজার ৬৮০ জন কর্মী ই-কার্ডের আবেদন করেন, যারা ১৫টি দেশের নাগরিক।
আবেদনকারীর মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যা ৭১ হাজার ৯০৩; এর পরেই রয়েছে ইন্দোনেশিয়া (২৬ হাজার ৭৬৪) ও মিয়ানমারের (১১ হাজার ৮২৫) নাগরিকরা।
বাংলাদেশ হাই কমিশনের শ্রম কাউন্সিলর সায়েদুল ইসলাম জানান, এই ই-কার্ডের মেয়াদ আগামী বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
ওই সময়ের মধ্যে তাদের নিজ নিজ দূতাবাস থেকে পাসপোর্ট ও ট্র্যাভেল ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে নতুন করে ওয়ার্ক পারমিট নিতে হবে।
তা না হলে নির্ধারিত সময়ের পর তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে হুঁশিয়ার করেছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ।
সান ডেইলি লিখেছে, মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যা ছয় লাখের বেশি। সেই হিসেবে অবৈধ শ্রমিকদের মাত্র ২৩ শতাংশ ই-কার্ড সংগ্রহ করেছে।
এদিকে, রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে কুয়ালালামপুরের জালান তুন রাজ্জাক এলাকায় ইমিগ্রেশন পুলিশ সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে।
এ সাঁড়াশি অভিযানের ফলে বৈধ-অবৈধ বিদেশি শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকেই অভিযানের ভয়ে জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ পরিস্থিতিতে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির বিভিন্ন কমিউনিটির নেতারা।
দ্য মাস্টার বিল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন মালয়েশিয়া (এমবিএএম) কর্তৃপক্ষ দেশটির সরকারের কাছে ই-কার্ড করার জন্য আগামী বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বৃদ্ধির আবেদন করেছে।
এমবিএএম জানিয়েছে, বিদ্যমান সমস্যার সমাধান এবং ধীরগতি প্রক্রিয়া থেকে বের হয়ে সহজে ও দ্রুত ই-কার্ড করতে ইমিগ্রেশন বিভাগকে সহায়তা দেবে তারা।
চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় মালয়েশিয়ায় বসবাসরত অবৈধ বিদেশি শ্রমিকদের বৈধকরণ ই-কার্ড প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়ার মেয়াদ ৩০ জুন শেষ হওয়ার পর বিদ্যমান অবৈধ শ্রমিক ধরতে দেশব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়।