মানবতাবিরোধী অপরাধে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে যেকোনো দিন রায় ঘোষণা

    0
    247

    ঢাকা, ১৪ আগস্ট : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাংসদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে যেকোনো দিন রায় ঘোষণা করতে পারে।তার বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে জাড়িত থাকার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা পারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। আজ বুধবার মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষ হলে ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। বুধবার সকাল থেকে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে তার আইনজীবী এএইচএম আহসানুল হক হেনা ও ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম যুক্তি উপস্থাপন করেন।পক্ষান্তরে প্রসিকিউশনের পক্ষে প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন, ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ও জেয়াদ আল মালুম যুক্তি উপস্থাপন করেন।

    প্রসিকিউটররা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাকা চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন।১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে ২৩টি অভিযোগ আনে ট্রাইব্যুনাল। তার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ঘটনার এবং জব্দ তালিকার ৪১জন সাক্ষ্য প্রদান করেছেন আর তার পক্ষে সাক্ষ্য দেন ৪ জন। এছাড়া ট্রাইব্যুনালস আইনের ১৯ (২) ধারা মোতাবেক তদন্ত কর্মকর্তার নিকট দেয়া ৪ জনের জবানবন্দি সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করে ট্রাইব্যুনাল। এ ৪ জনের কেউ মারা গেছেন,  কেউ নিখোঁজ রয়েছেন।

    প্রায় সোয়া এক বছর বিচারিক কার‌্যক্রম শেষে আজ মামলাটির সমাপ্তি ঘটে। আর বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হওয়ায় যে কোনো দিন সাকা চৌধুরীর মামলার রায় দেয়ার জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) বলে রেখে দেন চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে  তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল। তবে তার পক্ষের আইনজীবীরা দাবি করছেন, প্রসিকিউশন তার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ এনেছে তা তারা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে সুতরাং তিনি এ মামলায় সম্পূর্ণ নির্দোষ প্রমাণিত হবেন। গত ২৮ জুলাই সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলায় প্রসিকিউশনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়।

    ৩১ জুলাই যুক্তিতর্ক উপস্থাপন প্রথম পর্যায়ে শেষ করে প্রসিকিউশন। এরপর ১ আগস্ট থেকে সালাহউদ্দিন কাদেরের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন তার আইনজীবী হেনা। গত ২৪ জুলাই সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলায় আসমিপক্ষের সাফাই সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। তার পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন তিনি নিজেসহ মোট চারজন। অন্য তিন সাফাই সাক্ষী হলেন তার কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বন্ধু নিজাম আহমেদ, এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কাইয়ুম রেজা চৌধুরী এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোমেন চৌধুরী।

    অবশ্য সাকা চৌধুরী এক হাজারের উপর সাফাই সাক্ষীর একটি তালিকা ট্রাইব্যুনালে জমা দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। এর আগে সালাহউদ্দিন কাদেরের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. নূরুল ইসলামসহ প্রসিকিউশনের মোট ৪১ জন সাক্ষী। আর চারজন সাক্ষীর তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া জবানবন্দি সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেছে ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া অন্য চার সাক্ষী মৃত জ্যোৎস্না পাল চৌধুরী, মৃত জানতি বালা চৌধুরী ও মৃত আবুল বশর এবং ভারতে থাকা বাদল বিশ্বাসের তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া জবানবন্দিকেই সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

    প্রসঙ্গত হরতালে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের একটি মামলায় ২০১০ সালের ১৬ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপির এমপি সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে। পরে ১৯ ডিসেম্বর তাকে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ৩০ ডিসেম্বর আদালতের নির্দেশে প্রথমবারের মতো আদালতে হাজির করা হয়।