মানবতাবিরোধী অপরাধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোবারক হোসেনের বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল

    0
    441

    ঢাকা, ২৩ এপ্রিল : একাত্তরে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোবারক হোসেনের বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। আগামী ১৬ মে রাষ্ট্রপক্ষের সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে ওই দিনের মধ্যে আসামিপক্ষকে তাদের ডকুমেন্ট ও সাক্ষীদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
    মোবারকের বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে ৩৩ জনকে গণহত্যা, তিনজনকে হত্যা এবং দুজনকে অপহরণ করে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়।
    মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে গঠিত পাঁচটি অভিযোগ হলো- একাত্তরের ২৩ আগস্ট ৩৩ জন নিরস্ত্র মানুষকে বাছাই করে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে তুলে দেওয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আনন্দময়ী কালীবাড়ি দখল ও আশুরঞ্জন দেবকে হত্যা, ছাতিয়ান গ্রামের আবদুল খালেককে অপহরণের পর হত্যা, খড়মপুর গ্রামের খাদেম হোসেনকে অপহরণ এবং খড়মপুর গ্রামের আবদুল মালেক ও আমিরপুর গ্রামের মো. সিরাজকে অপহরণের পর নির্যাতন চালিয়ে হত্যা।
    প্রসিকিউশনের তদন্ত সংস্থা বলছে, আখাউড়ার নয়াদিল গ্রামের মোবারক একাত্তরে স্থানীয় রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের তৈরি রাজাকারের তালিকায়ও তার নাম রয়েছে।
    একাত্তর-পরবর্তী সময়ে জামায়াতের রাজনীতি করলেও পরে তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন এবং এক পর্যায়ে আখাউড়ার মোগড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হন। দুই বছর আগে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
    একাত্তরে একটি হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে ২০০৯ সালের ৩ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মোবারকের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। তখন হাইকোর্ট থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন নেন তিনি। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর তার মামলা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। গত বছর ১৫ জুলাই মোবারক হোসেনকে দুই মাসের জামিন দেয় ট্রাইব্যুনাল।এরপর কয়েক দফায় তার জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ১২ মাচ অভিযোগ আমলে নিয়ে জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যনাল। গত বছরের ১৬ জুলাই থেকে গত ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে তদন্ত চালায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।