মানবজমিন প্রতিনিধি ইদ্রিছ আলীর বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

    0
    323

    “সাংবাদিকতার আড়ালে শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের মত একটি পবিত্র স্থানকে রাষ্ট্র ও সমাজ বিরোধী কার্যক্রমে ব্যবহার করে আসছে দাবী করে দৈনিক মানবজমিন শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি এম ইদ্রিছ আলীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও অবস্থান কর্মসূচীতে তাকে শ্রীমঙ্গলে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করা হয়” 

    নিজস্ব প্রতিবেদকঃ  মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দৈনিক মানবজমিন এর শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি এম ইদ্রিছ আলীর রাষ্ট্র ও সমাজ বিরোধী কার্যক্রম এবং প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে প্রতিবাদ সভা ও অবস্থান কর্মসূচি করেছে শ্রীমঙ্গল আওয়ামী পরিবার।এসময় এম ইদ্রিস আলীকে প্রেসক্লাব থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কারের দাবী করা হয়।
    আজ রোববার (২১ জুন) দুপুরে শহরের কলেজ রোডস্থ প্রেসক্লাবের সামনে এ প্রতিবাদ সভা ও অবস্থান কর্মসূচী করা হয়। এসময় ইদ্রিছ আলীর বিরুদ্ধে ডজনের ও অধিক অভিযোগ তুলে বক্তারা পরে একই প্রেসক্লাবের সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ তুলে দেয় তারা।
    সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি জিল্লুল আনাম চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনাম হোসেন চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক বেলায়েত হোসেন, সালিক আহমেদ, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তহিরুল ইসলাম মিলন, উপজেলা যুব লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু তালেব বাদশা, পৌর যুব লীগের সভাপতি আকবর হোসেন শাহীন, সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ চৌধুরী, সহ সভাপতি কামরুল হাসান দুলন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন রাহিদ, সভাপতি মসুদুর রহমান মসুদ,সাধারণ সম্পাদক রাজু দেব রিটন, পৌর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খসরুল আলম সাধারণ সম্পাদক আবেদ হোসেন,কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুর রহমান সুজাত, সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল কান্তি দাস প্রমুখ।
    প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তরা বলেন, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম ইদ্রিছ আলী শ্রীমঙ্গলে রাষ্ট্র বিরোধীদের একত্রিত করে রাষ্ট্র বিরোধী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সাংবাদিকতাকে ব্যবহার করছেন। তিনি কৌশলে শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হয়ে একক আদিপত্য বিস্তারের লক্ষে প্রেসক্লাবকে ব্যবহার করে দেশ বিরোধী অপকর্মে লিপ্ত রয়েছেন। এম ইদ্রিছ আলী জামাত শিবিরের সাথে একাত্মতা করে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে গাড়িতে পেট্টোল বোমা নিক্ষেপসহ বিভিন্ন দাঙ্গা হাঙ্গামায় জড়িত থাকায় ইতিপূর্বে একাধিক মামালায় আসামী অর্ন্তভুক্ত রয়েছেন।

    প্রেসক্লাব থেকে স্থায়ী বহিস্কারের দাবী জানিয়ে লিখিত অভিযোগ সভাপতি বিশ্বজ্যোতি চৌধুরীর হাতে তুলে দেন তারা।

    বক্তারা আরও বলেন, “শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবকে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে হুমকি দামকি দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন, পতিতা ব্যবসা, বন বিভাগ, মদের ডিপো ও অবৈধ ইজিবাইক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির মতো অপকর্ম চালিয়ে আসছেন। এমনকি প্রকাশ্যে সমবায় সমিতির নামে সুদের ব্যবসা করে সাধারণ মানুষের সহায় সম্বল হাতিয়ে নিচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকার বিরোধী উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রকাশ করে তার অনুসারী বিভিন্ন সাংবাদিককে ই-মেইলে সরকার বিরোধী সাজানো ও বানোয়াট তথ্য এবং বিএনপির কার্যক্রম প্রকাশের জন্য প্রেরণ করে প্রচার করাতে বাধ্য করছেন।একই সাথে ধর্মীয় অনুভুতির উপর আঘাত আনার বিষয়ে প্রায়ই উস্কানি মুলক সংবাদ প্রকাশ করে শ্রীমঙ্গলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাচ্ছেন।”

    বক্তারা আরও দাবী করেন, তিনি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হয়ে প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সাংবাদিকদের কোনঠাসা ও বহিষ্কার করে প্রেসক্লাবকে দখলে নেয়।ইদ্রিস আলী শহরের এমন কোন খাত নেই যেখান থেকে চাঁদাবাজি করছে না। আর এসব কাজে তিনি শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবকে ব্যবহার করছেন। তার সাথে আছেন দৈনিক যুগান্তর শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি,দৈনিক করতোয়ার শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি ও এলিট সিকিউরিটি সুপারভাইজার শুক্কর আলী।

    বক্তাদের অনেকেই দাবী করেন, “সিকিউরিটি গার্ড শুক্কর আলী নামে এক লোক সাংবাদিকতার কার্ড ব্যবহার করে তার এলাকা শ্রীমঙ্গলের দিলবরনগরে বিভিন্ন মানুষকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে। তার গ্রামের কারোও সাথে পারিবারিক বা সামাজিক দন্ধ সংঘাতের মতো কিছু হলে সে তাদের উভয় পক্ষের মধ্যে বিভিন্ন ধরণের উস্কানি দিয়ে অশান্তি সৃষ্টি করে প্রশাসনকে বিভ্রান্তমূলক তথ্য দিয়ে ব্যবহার করে সাধারণ লোকদেরকে জিম্মি করে রেখেছে। এমনকি প্রশাসনের সাথে সখ্যতা তৈরি করে প্রতিদিনই থানাতে আড্ডা দিতে দেখা যায়,অথচ আওয়ামী পন্থি সাংবাদিকরা এখানে তুচ্ছ।”

    প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এম ইদ্রিস আলীকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন এবং সাংবাদিকতার মতো মহান পেশা ও ঐতিহ্যবাহী শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাব থেকে তাকে স্থায়ী বহিস্কারের জন্য দাবী জানিয়ে লিখিত অভিযোগ সংগঠনের সভাপতি বিশ্বজ্যোতি চৌধুরী হাতে তুলে দেন প্রতিবাদকারীরা।

    এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম ইদ্রিস আলী বলেন,”আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে এগুলো অপপ্রচার ও অসত্য। প্রেসক্লাবে আমরা সবাই দলমত নির্বিশেষে মানুষের কাজ করি। এখানে সরকার বিরোধী কোন কার্যক্রম হয় না। আমি সরকার বা রাষ্ট্রবিরোধী কোন কাজের সাথে সম্পৃক্ত নই।”

    অপরদিকে একই বিষয়ে শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সভাপতি বিশ্বজ্যোতি চৌধুরী বলেন, “শ্রীমঙ্গলের সাংবাদিকদের জন্য আজ কালোদিন।ব্যক্তিগতভাবে আমি চাঁদাবাজ পছন্দ করিনা।সাংবাদিকতার নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজদের কখনোই এই প্রেসক্লাব প্রশ্রয় দেবেনা। শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের একটি অতীত ঐতিহ্য আছে।এখানে দেশ বরেণ্য সাংবাদিকরা সাংবাদিকতা করে গেছেন।সেই অতীত ঐতিহ্য একজন ব্যক্তির জন্য ম্লান হয়ে গেলো।আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ এসেছে।আমরা প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটি বসে সীদ্ধান্ত নিবো।”