মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ

0
729
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ

বেনাপোল প্রতিনিধি : যশোরের শার্শা সরকারী পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে নিয়োগ ও অনিয়ম দূর্নীতির মাধ্যমে বিদ্যালয়ের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাথের অভিযোগ উঠেছে।
অবৈধ ভাবে নিয়োগ প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বিদ্যালয় জাতীয় করণের পর থেকে সরকারী নিয়মনীতি না মেনে কাউকে কোন তোয়াক্কা না করে স্বেচ্ছারিতার মাধ্যমে বিদ্যালয়ের তহবিল তোসরুপ করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করছে।
একাধিক অভিবাবক ও শিক্ষকদের দাবি অবৈধ ভাবে নিয়োগ প্রাপ্ত এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় বহুবার লেখা লেখি হলেও সরকারী ভাবে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা নেওয়া হয়নি। যে কারণে প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম দফায় দফায় অনিয়ম দূর্নিতী করে পার পেয়ে যাচ্ছে। বিদ্যালয়টি সরকারী করণের পর থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করেন ম্যানেজিং কমিটি।
অথচ বিদ্যালয়ের অর্থ আয়-ব্যায় সম্পর্কে সভাপতি কিছুই জানে না। প্রধান শিক্ষক গত ২১/১১/১৯৯৯ ইং সালে ঝিকরগাছা উপজেলা নিশ্চিন্তপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (কৃষি) ও গত ৩১/০৩/২০০৮ সালে পার বাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একই বিষয়ে একই পদে যোগদান করেন।
শার্শা সরকারী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর নিয়োগ বিধি লঙ্ঘন করে ১১/২/২০১৩ সালে সহকারী শিক্ষক (কৃষি) নিয়োগ পেয়ে যায় প্রধান শিক্ষক হিসেবে সহকারী শিক্ষক পদে কর্মরত ইন্ডেক্স ধারী শিক্ষক প্রশাসনিক পদে আবেদন গ্রহণ যোগ্য নয়। দারুল এহসানের ভূয়া মাষ্টার্স পাস সনদ দেখিয়ে প্রধন শিক্ষক পদে আবেদন করেন এবং ডিগ্রী পাশ সনদ পত্র দিয়ে বেতন এমপিও করে যা সম্পূর্ণ বেআইনির এবং সাংঘর্ষিক।
নিয়োগ কমিটি কর্তৃক নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে ১/১/২০১৩ হতে ৩০/০৬/২০১৪ তারিখ পর্যন্ত ১২ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা ও বিদ্যালয় জাতীয় করণের পর ২৩/৯/২০১৮ হতে ৩০/৫/২০১৯ পর্যন্ত ৩লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ভূয়া ভাউচারের মাধ্যমে আত্মসাথ করেন। যা আভ্যন্তরিন অডিটের মাধ্যমে অনিয়ম দূর্নিতী উঠে আসে। এছাড়া ১/৭/২০১৪ হতে ২২/০৯/২০১৮ পর্যন্ত প্রায় ৪ বছর কোন অডিট হয়নি। দূর্নিতীবাজ শিক্ষক বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের রেজিঃ ফি বাবদ অতিরিক্ত ফিস আদায়, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নিকট থেকে সনদপত্র বিক্রয় ২০০/- থেকে ৫০০ টাকা হারে আদায় করে পকেটস্থ করেছেন। এভাবে দূর্নিতীর মাধ্যমে বিদ্যালয়ের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করে ঝিকরগাছা উপজেলার পার বাজারে জমি কিনেছে ২২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে এবং ২০২০ সালে শার্শা উপজেলার নাভারণ বাজারে বুরুজবাগান মৌজায় নির্মিয়মান ৫ তলা কনষ্টাকশন একটি বিল্ডিং খরিদ করেছেন ৪৫ লক্ষ টাকায়।
শার্শা সরকারী পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি চলছে অভিবাবকহীন ভাবে দেখার কেউ নেই। যে কর্মকর্তায় দেখুক মোটা অংকের বিনিময়ে ম্যানেজ এবং উপঢৌকন তো আছেই।
এ ব্যাপারে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে সিনিয়র সচিব মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ প্রদান, জেলা প্রশাষক যশোর, সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শার্শাকে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের অনাস্থা প্রাস্তাব। অতিরিক্ত জেলা প্রশাষক শিক্ষা ও আইসিটি যশোর গণকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও অদ্যবধি কোন ব্যাবস্থা গ্রহণ করেননি সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে জনৈক অভিভাবক ইয়াকুব আলী বলেন, আমি অডিটের সদস্য ছিলাম, এত অনিয়িম মেনে নেওয়া যায় না। স্কুলের আয়ের ১২ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা কোন হিসেব দিতে পারেনি প্রধান শিক্ষক।
সহকারী প্রধান শিক্ষক আমজাদ আলী এক স্বাক্ষাতকারে বলেন, মাষ্টার্স পাশ শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। অথচ ভূয়া মাষ্টার্স পাস সনদের কারণের ডিগ্রি পাশ সনদ পত্র দিয়ে তার বেতন এমপিও হয়। যে কারণে নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তি সাংঘর্ষিক।
এছাড়া একজন প্রধান শিক্ষক মোবাইল চুরি, খোয়া চুরি, প্রতিষ্ঠানের লক্ষ লক্ষ টাকা, তোসরুপ, নির্মাণাধীন ভবনের অতিরিক্ত রড, বাশ, কাঠ, দরজা-জানালা চুরিসহ ছাত্র মারপিট সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
এ ব‍্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর আলীফ রেজা এক স্বাক্ষাতকারে বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধ আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।