মসজিদে কোরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে পিটিয়ে-জ্বালিয়ে হত্যা !

    0
    359

    লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে মসজিদে কোরআন শরীফ অবমাননার গুজুব ছড়িয়ে আবু ইউনুস মোহাম্মদ শহিদুন্নবী জুয়েল (৫০) নামের এক ধর্মপ্রাণ মানুষকে উগ্রমৌলবাদী চক্র ও বিক্ষুব্ধ জনতা নির্মম নির্যাতন ও বর্রবর পৈশাচিক ভাবে পিটিয়ে জ্বালিয়ে হত্যা করেছে।

    হত্যার পর নিথর দেহ ইউপি ভবনের বাহিরে রাস্তায় এনে গায়ে পেট্রোল ও খড়িতে আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ভস্মীভুত করে দেয়া হয়েছে নিথর দেহটিকে। এসময় নিহত ওই ব্যক্তি সাথে থাকা সতীর্থ সুলতান যোবাইর আব্দার (৫১) কে গণ পিটনি দেয়া হয়। তাঁকে পুলিশ উগ্রমৌলবাদী ও বিক্ষুদ্ধ জনতার হাত হতে ইউনিয়ন পরিষদের ভবনের একটি কক্ষ হতে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় উদ্ধার করেছে।

    তাঁরও অবস্থা আশংকাজনক। গুরুতর আহত আব্দার কে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় রাতভর বুড়িমারীতে পুলিশ, বিজিবি ও জনতার মধ্যে দফায় দফায় সংর্ঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

    এই ঘটনার পর রাতে উগ্রমৌলবাদী চক্র ও বিক্ষুদ্ধজনতা বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের ভবনটিতে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। তারা প্রয়োজনীয় নথিপত্র জ্বালিয়ে দেয়। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা হতে গভীর রাত পর্যন্ত।

    এই ঘটনায় আজ শুক্রবার বুড়িমারীতে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সেখানে পুলিশ পাহাড়ায় ঘটনাস্থলসহ সকল মসজিদে শুক্রবারের জুম্মার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে জুম্মার নামাজের খুৎবার আগে এই ঘটনাকে দূঃখজনক ও ইসলামের দৃষ্টিতে ঘৃণিত অপরাধ বলে ঈমামগণ প্রচার করেছেন। সেই সাথে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে শান্ত থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন। প্রকৃত ঘটনা তদন্তে জেলা পর্যয়ের চার সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তদন্ত টিমের নেতৃত্ব দেবেন এডিসি জেনারেল। তদন্ত টিম সকাল হতে তদন্ত কাজ শুরু করেছে। তদন্ত টিম তিন কার্যদিবসের মধ্যে কী কারণে এই জঘন্য ও পৈশাচিক ঘটনা ঘটেছে তাঁর প্রকৃত রহস্য উদঘাটন কওে রির্পোট জেলা প্রশাসকের নিকট জমা দিবেন। এদিকে এই ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি তুলেছেন সমাজ সচেতন ধর্মপ্রাণ মানুষ। তারা মনে করে কোন উগ্রমৌলবাদী চক্র সুকৌশলে দেশে ধর্মীয় উম্মাদনা ছড়িয়ে ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করতে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।

    থানা পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বজনদেও সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় বাজার মসজিদে আবু ইউনুস মোহাম্মদ শহিদুন্নবী জুয়েল (৫০) ও সুলতান যোবাইর আব্দার (৫১) নামের এই দুই ব্যক্তি বৃহস্পতিবার বিকালে বুড়িমারী বাজার জামে মসজিদে আছরের নামাজের আজান শুনে মসজিদ চত্বরে মোটর সাইকেল রেখে ওজু করে জামাতের সাথে নামাজ আদায় করতে মসজিদে প্রবেশ করেন।

    মসজিদে প্রবেশ করে ভদ্রতা দেখাতে নিহত আবু ইউনুস মোহাম্মদ শহিদুন্নবী জুয়েল (৫০) মসজিদের মুয়াজিম জোবেদ আলী (৫৮) ও মসজিদের ওয়াক্তি নামাজের ঈমাম শহীদ আলী (৫৩) সাথে হাত মোছাফা করেন। সেই সাথে তাদের সাথে কুশোলাদি জিজ্ঞাসা করেন। পরে মসজিদে নামাজ পড়তে আসা উপস্থিত মুসল্লিদের সাথে একই কাতারে জামাতে আছরের নামাজ আদায় করেন।

    নামাজ শেষে মোনাজাতের পর এই সীমান্ত গ্রামের বাজারে উগ্রমৌলবাদী বা জঙ্গীবাদের কার্যক্রম আছে কিনা জিজ্ঞাসা করেন। এক পর্যায়ে মসজিদে অস্ত্র আছে কিনা জানতে চান বলে মোয়াজ্জিন জানান। পরে তিনি দাঁড়িয়ে মসজিদের বুকসেলফের তাকে রাখা কুরআন ও হাদিসের বইয়ে হাত রাখতে যান।

    তখন অসাবধানতাবশত একটি বই পড়ে যায়। সেটা কুরআন ছিল না হাদিসের বই ছিল নিশ্চিত হয়ে কেউ বলতে পারেনি। মাটিতে পড়ে যাওয়া বইটি আদবের সাথে তুলে নিয়ে চুম্বুন করে তাঁকে রাখতে যান। এই সময় উপস্থিত মুসল্লিদের মধ্যে থাকা বুড়িমারী বাজারের ডেকোরেটর ব্যবসায়ী হোসেন আলী (৪৫) তাঁকে ধমক দেন।

    তাঁর সাথে ধর্মীয় কুরআন অবমাননার অপবাদ দিয়ে চড়থাপ্পর দিতে থাকেন। মসজিদের ভিতরে হৈ চৈ শুনে স্থানীয় বাজারে থাকা ইউপি সদস্য হাফিজ রহমান বাকবিতন্ডা থামাতে মসজিদে এসে নিহত জুয়েল ও আহত আব্দার কে মসজিদ হতে বাহির করে ইউনিয়ন পরিষদের চত্বরে নিয়ে গিয়ে ইউপি ভবনের একটি অফিস কক্ষে নিরাপদে রাখেন।

    সেই সাথে ইউপি চেয়ারম্যান নিয়াজ আহম্মেদ নিশাদ কে ও থানা পুলিশকে খবর দেয়। এরমধ্যে হোসেন আলী বাজারে ছড়িয়ে দেয় কুরআন শরিফের ওপর পা রেখে দুই ব্যক্তি মসজিদে জঙ্গিদের অবৈধ অস্ত্র আছে বলে খোঁজেছে। তাঁরা পবিত্র কোরআনে পা রেখেছে। মুহুর্তে বাজারের লোকজনের মধ্যে ধর্মীয় উম্মাদনা সৃষ্টি করে ক্ষেপিয়ে তুলে।

    এমন কী মসজিদের মাইক ব্যাবহার করে প্রচার করা হয়। দুই ব্যক্তি কোরআন শরিফে ওপর পা রেখে চড়েছে। কুরআন অবমাননা করেছে। আপনারা এগিয়ে এসে বিচার করুণ। তাঁকে চেয়ারম্যান ও মেম্বার ইউপি অফিস চত্বরে আটক করে রেখেছে।

    তবে মসজিদেও মুয়াজিম জানান, আগুন্তক ব্যক্তি কোন ধরণের কোরআন অবমাননা করেনি। বরং কোরআন কি আদিসের বই নিচে পড়ে যাওয়ায় তিনি বইটি বুকে তুলে নিয়ে সালাম করে চুম্বুন করেছেন। তাঁকে মিথ্যা গুজুব ছড়িয়ে পিটিয়ে ও জ্বালিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

    এদিকে চেয়াম্যান নিয়াজ আহম্মেদ নিশাদ জানান, তাঁর নির্বাচনি এলাকায় প্রতিপক্ষরা সবসময় তাঁকে হেয় করতে চায়। সামনে যেহেতু ইউপি নির্বাচন। তাই তাঁকে হেয় করতে ও ধর্মীয় উম্মাদনা ছড়িয়ে উগ্রমৌলবাদী চক্র এখানে আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করতে সব সময় ষড়যন্ত্র করে। তাঁরা এখানে সরকার কে ও দেশের ভাবমূর্তি সংকটে ফেলতে এই জঘন্য ও ঘৃর্নিত অপরাধ করেছে। তিনি বিচার বিভাগীয় তদন্ত চান। সেই সাথে যারা ধর্মীয় উম্মাদনা ও মিথ্যা গুজুব ছড়িয়ে এই তান্ডব চালিয়েছে তাঁর বিচার চান। সেই সাথে নিহতের পরিবারকে ক্ষতি পূরন দেয়ার দাবি তুলেন।

    কে এই ধর্মীয় উম্মাদনার শিকার নিরীহ আবু ইউনুস মোহাম্মদ শহিদুন্নবী জুয়েল (৫০) । তিনি রংপুর জেলা শহরের শালবনের মৃত ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। রংপুর ক্যান্টপাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের প্রাত্তন লাইব্রেরিয়ান। তাঁর স্ত্রী, উচ্চ মাধ্যমিক পড়–য়া একটি মেয়ে ও এক শিশু পুত্র সন্তান রয়েছে। তিনি ছিলেন, সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। স্ত্রী, সন্তান ও স্বজনরা তাঁকে হারিয়ে নির্বাক হয়ে গেছেন। তাঁরা এই ঘটনাকে সুপরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলছেন। তাঁরা বিষ্ময় প্রকাশ করে বলেন, তিনি কেন মোটরসাইকেল নিয়ে সেখানে গেলেন। তাঁকে কে নিয়ে গেল। কি উদ্দিশ্যে গেল। যিনি প্রানে বেঁচে গেছেন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সকল প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে। নিহত জুয়েল বছর খানেক আগে রংপুর ক্যান্টপাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ হতে ষড়যন্ত্রের কবলে পড়ে চাকরি হারান। তাঁকে কলেজ কতৃপক্ষ সেচ্ছায় অবসর যাওয়ার সুযোগ করে দেন। চাকুরি হারিয়ে কিছুটা মানুষিক বিষœতায় তাঁকে পেয়ে বসে ছিল। তিনি অত্যন্ত ধর্মভীরু ছিলেন। অবসর জীবনে যাওয়ার পর ঢাকায় এক বন্ধুর সাথে যৌথভাবে একটি ইংরেজি মিডিয়ামের কিন্ডারগার্ডেন্ট স্কুল খুলে ছিলেন। সেই বন্ধুও তার সাথে প্রতারণা করেন। ফলে তিনি ঢাকা হতে পুনরায় রংপুরে ফিরে আসেন। সেই ছাত্র জীবন হতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেন। মসজিদে নামাজ পড়ার সময় মুয়াজিন বা ঈমাম সুরা ভুল ভাল উচ্চারণ করলে ভুল ধরতেন। তাহা শুধরে দেয়ার চেষ্টা করতেন। সেখানে এমন ঘটনা ঘটেছে কিনা স্বজনরা খতিয়ে দেখতে বলেছেন। জুয়েলের বন্ধু বান্ধব ও প্রতিবেশী জনকন্ঠের সাংবাদিক আব্দুর রউফ বলেন, সে তাঁর প্রতিবেশী । তিনি অত্যন্ত নিরীহ হোচের মানুষ ছিলেন। খুবই ধর্মপ্রাণ মানুষ ছিলেন। তবে বন্ধুসুলভব আচরণ করতেন সকলের সাথে। একটু কথা বলতে বেশি। ধর্ম সম্পর্কে অগাদ জ্ঞান রাখতেন। ১৯৮৬ সালে রংপুর জেলা স্কুল হতে এসএসসি পাশ করেন। পরে লাইব্রেরিয়ান সাইন্সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে অনার্স মাষ্টাস করেন। ছাত্র জীবনে কোন দিন তাঁকে কেউ কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকার তথ্য দিতে পারেনি। তারমানে তিনি কোন রাজনৈতিক মর্তাদশের সাথে জড়িত ছিলেন না।

    সম্প্রতি তিনি জেলা স্কুলের এালামনিয়া এ্যাসোসিয়েশনের মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন। সব সময় অরাজনৈতিক নানা সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত রাখতে পছন্দ করতেন। তাঁকে পৈশাচিক ভাবে পুড়িয়ে মারা ঘটনাতে বন্দুমহল সহ সকল মহলে নিন্দার ঝড় উঠেছে। তাকে তারা পরিকল্পিত হত্যা করেছে বলে মনে করছে। ওই পৈশাচিক ঘটনায় উগ্রমৌলবাদী ও বিক্ষুদ্ধ জনতার হাত হতে উদ্ধারকৃত ব্যক্তি সুলতান যোবাইর আব্দার (৫১)। তাঁর বাড়িও রংপুর শহরের মুন্সিপাড়ায়। পিতা মৃত শেখ আব্বাস আলী। তিনি তাঁর সাথে মোটরসাইকেলে গিয়ে ছিলেন। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, তারপর লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে পরে উন্নত চিকিৎসা এবং নিরাপত্তাজর্নিত কারনে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। সেখানে পুলিশ পাহাড়ায় তাঁর চিকিৎসা চলছে। সে সুস্থ্য না হওয়া পর্যন্ত ঠিক ভাবে কোন কিছু বলতে পারছেন না।

    জেলা পর্যয়ে তদন্ত কমিটিঃ

    এই পৈশাসিক ও জ্বালিয়ে মারার ঘটনায় জেলা প্রশাসন গতকাল রাত হতেই গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। জেলা প্রশাসক এডিসি জেনারেলের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করে দিয়েছেন। নেতৃত্বে আছেন এডিসি( রেনারেল), এডিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও পাটগ্রামের ইউএনও। তদন্ত কমিটি তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে জেলা প্রশাসককের কাছে তদন্ত রির্পোট জমা দিবেন।

    মামলা দায়ের ও রাবার বুলেট নিক্ষেপঃ

    এই পৈশাসিক ও মির্মম ঘটনায় পাটগ্রাম থানা পুলিশ পৃথক পৃথক পাঁচটি মামলা দায়ের করেছেন। এসব মামলায় কয়েক শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামী করা হয়েছে। থানা পুলিশ জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ১৭ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছেন। বিষয়টি পাটগ্রাম থানার ওসি অপারেশন সুমন মোহন্ত মন্ডল নিশ্চিত করেছেন।

    পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনেঃ

    বুড়িমারী ইউনিয়নের নিরীহ জনগণ এই পরিস্থিতি সামাল দিতে এসপি আবিদা সুলতানার ভুয়সী প্রশংসা করেন। তিনি দক্ষ হাতে রাত জেগে নিজেই মাঠ পর্যায়ে সহকর্মীদের সাথে থেকে ঘটনা নিয়ন্ত্রনে কাজ করেছেন। এখনো মাঠে রয়েছেন। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রনে। তবে কিছুটা আতস্কে রয়েছেন। শুক্রবার মসজিদে মসজিদে মসজিদে নিহেতের বিদায় আতœার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ও ধর্মীয় ইম্মাদনা না ছড়াতে মুসল্লিদের আহবান করা হয়েছে। এখানে কোরআন অবমাননা হয়নি বলে মুসল্লিদের জানানো হচ্ছে। লালমনিরহাট জেলার পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা জানান, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রনে ও ধীওে ধীওে স্বাবাবিক হচ্ছে। সেখানে আর কোন বির্তরকিত ঘটনা ঘটতে দেয়া হবে না। পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। কেউ কোন কিছু করার চেষ্টা করা হলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলে জানান। কিতি আরো জানান, সেখানে গুজুব ছড়িয়ে নিরীহ ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিটিকে হত্যা করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত কালে কোরআন পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোনআন শরিফ অবমাননার কোন ধরণের ঘটনার সম্পিক্ততা পাওয়া যায়নি। কি কারণে কিভাবে ঘটনাটি ঘটলো তদন্ত কওে খোঁজা হচ্ছে। এ তদন্ত কাজে মিডিয়া কর্মীদেও সহতা চান তিনি।

    পাটগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ রুহল আমীন বাবুল জানান, বুড়িমারী ইউনিয়নটি উগ্রমৌলবাদী অধুষিত । এখানে ২০১৪ সালে ধর্মীয় উম্মাদনা ছড়িয়ে পুলিশের ওপর হামলা, মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়ে ছিল। এমন কি জনৈক আওয়ামীলীগের কর্মীও সেই সময় মাগরিবের নামাজ আদায় করা অবস্থায় উগ্রমৌলবাদীরা তাঁকে মসজিদের বারান্ধায় পিটিয়ে হত্যা করে ছিল। তাঁর লাশটিও পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়ে ছিল। তিনি এই ঘটনাকে সুপরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, তিনি ও ইউএনও খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটেযান, সেখানে তাঁদের কেউ অবরুদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়। তাদের ওপরও হামলা করার চেষ্টা করা হয়। তারা অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পায়। সারারাত ধরে উগ্রবাদীরা পুলিশের সাথে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া করে। পুলিশ ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এতে প্রায় রাত দুইটায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়। তিনি ঘটনাটির সুষ্ঠ তদন্ত করে দায়ি ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। সেই সাথে তিনি বলেন, ২০১৪ সালের মামলা গুলোর দ্রুত বিচার করা গেলে এমন ঘটনার পূনরাবৃত্তি ঘটতো না বলে জানান। এখানে উগ্র মৌলবাদী চক্র দেশের ও সরকারের ভাবমূর্তি সংকটে ফেলতে এটা করেছে বলে জানান। মানুষ পুড়িয়ে মেরেও তাঁরা উম্মাদনা ও পৈশাচিক উল্লাস প্রকাশ করেছে। জনকণ্ঠ থেকে