মনরে কৃষি কাজ জানো না,আবাদ করলে ফলতো সোনা !

    0
    286

    “মনরে কৃষি কাজ জানো না-

    মনরে কৃষি কাজ জানো না

    এমন সুন্দর মানব জমিন

    রইলো পতিত

    আবাদ করলে ফলতো সোনা

    মনরে কৃষি কাজ জানো না।”

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৯জানুয়ারী,মুন্সী গিয়াস উদ্দিনঃ   কবির এই আক্ষেপ যদিও আত্ম উপলব্ধির, আত্ম উন্নয়নের, আধ্যাত্মিকতার জন্য-কিন্ত বাস্তবেও বাংলাদেশের মাটি পতিত পড়ে রয়েছে। সোনার খনি বিধাতা দিয়েছেন, কিন্ত আমরা বড় অবহেলায় তা পতিত ফেলে রেখেছি। আপনি বলবেন- বিশ্বের আবাদযোগ্য জমির ব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশ একেবারে শীর্ষে আছে-তাহলে কীভাবে এ দেশের জমি পতিত পড়ে রইল? প্রায় ৩ কোটি একর জমিতে বছরে দু’একবার ধান চাষ করে প্রায় ৩.৫ কোটি টন ধান উৎপাদন করছি আমরা। বিশ্বে সবজী উৎপাদনে চতুর্থ, মাছ উৎপাদনে ৪র্থ, ইলিশ মাছ আহরণে শীর্ষে-তাহলে আর কী করলে আপনি বলবেন-আমাদের জমি কাজে লেগেছে? ১৭ কোটি জনতার দেশ হিসেবে আয়তনে ছোট হলেও আমাদের দেশের প্রায় পুরোটাই সমতল, কমবেশী চাষযোগ্য এবং মাটি অত্যন্ত উর্বর, আবহাওয়া বিশ্বের শীর্ষ চাহিদা সম্পন্ন কৃষি পণ্যের উৎপাদনের উপযোগী। অনেক সুপার ফুড উন্নত বিশ্বে হবেই না বৈরী আবহাওয়ার কারণে। এক একর জমিতে যে ধান আমরা পাই-তার তিন চতুর্থাংশ উৎপাদন ব্যয় হিসেবে খরচ হয়ে যায়। সাকুল্যে একরে ৩০-৪০ হাজার টাকার বেশী ধান চাষ থেকে আয় করা সম্ভব নয়।

    পক্ষান্তরে, ওই ১ একরে বছরে আপনি ধানের চেয়ে ৫০ গুণ বেশী মূল্যের ফসল উৎপাদন করতে পারবেন যার বাজারজাত করণের কোন ঝামেলা নেই, দেশে বিদেশে যার প্রচুর চাহিদা। ধান, পাট, আলু কিংবা অন্যান্য প্রচলিত কৃষি পণ্যের নানাবিধ সমস্যা আছে-বেশী ফলন হলে মূল্য পাওয়া যায় না, যেমন আলু উত্তর বঙ্গে ১.৫ টাকা কেজি দরে বিকিয়েছে এবার, কপি, টমেটো, মূলা, সিম ইত্যাদি সবজীর মৌসুমের শুরুতে কিছু মূল্য পাওয়া যায়, কিন্ত বাজারে পর্যাপ্ত যোগান শুরু হলে দাম একদমই পড়ে যায়। ৬ বছর আগে একবার ঝিনাইদহে বিস্তীর্ণ ক্ষেতের মধ্যে ফুল কপি , বাঁধাকপি অবহেলায় পড়ে থাকতে দেখেছি। দাম এতোটাই পড়ে গিয়েছিল যে, শ্রমিক নিয়োগ করে সেগুলো ক্ষেত থেকে তোলার মূল্যও পাওয়া যাচ্ছিল না। কৃষক সেই কপি গরুকে খাইয়েছে।

    তাছাড়া এ সমস্ত ফসল চাষে কৃষককে সারা বছর তার পুরো পরিবার নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়, তদুপরি বৈরী প্রকৃতি বাজার কিংবা নিম্নমানের সার, বীজ বা কীটনাশক ব্যবহারের কারণে ফসল পুরোপুরি মার যাবার ঘটনা অঞ্চলভেদে প্রায় ফি বছরই ঘটে। ২০১৬ সালে ভিয়েতনাম কৃষিজাত পন্য রপ্তানী করেছে ৩২ বিলিয়ন ডলারের। আর বাংলাদেশ ২০১৬ সালে মোট রপ্তানী থেকে আয় করেছে ৩৪ বিলিয়ন ডলার। যে সমস্ত কৃষিজাত পন্য ভিয়েতনাম রপ্তানী করেছে তার মধ্যে আছে কাঠ, সি ফুড, আর সব কৃষিজাত ফসল।

    এই সব ফসলের মধ্যে আছে কফি, কাজু বাদাম, গোলমরিচ, ফল ও সব্জী, চাউল, রাবার ইত্যাদি। এসবের থেকে আয় করেছে ১৬-১৮ বিলিয়ন ডলার। ভিয়েতনাম যে সমস্ত কৃষিজাত পন্য রপ্তানী করেছে, তার সবই বাংলাদেশে খুব সহজে উৎপন্ন করা যাবে। আর এসব পন্যের চাহিদা আমাদের দেশে ও বিদেশে প্রচুর, বলা যেতে পারে সীমাহীন। (আগামী পর্বে -ধানের চেয়ে ৫০ গুণ বেশী মূল্যের ফসল যা বাংলাদেশে চাষ করা সম্ভব)