মধ্যরাতের আদালতে রাজিবের ১৪দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

    0
    227

    সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও অবৈধ জমি দখলের অভিযোগে গ্রেফতার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজিবকে ১৪ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

    রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে ঢাকার বিশেষ আদালতে হাজির করে দুই মামলায় ১০ দিন করে মোট ২০ দিন রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করে ভাটারা থানা-পুলিশ। রাত ১২টা ১০ মিনিটে রিমান্ড আ‌বদ‌নের উপর শুনা‌নি শেষে অস্ত্র ও মাদক আইনের দুই মামলায় ৭ দিন করে মোট ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসমিন আরার বিশেষ আদালত।

    রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন খান শুনানির সময় আদালতকে বলেন, আসামি তারেকুজ্জামানের কাছ থেকে অবৈধ অস্ত্র, গুলি পাওয়া গেছে। আসামির বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজিসহ নানা ধরনের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। আসামির কাছ থেকে বিদেশি মদ পাওয়া গেছে। আসামির সহযোগীদের গ্রেফতার এবং মাদকের উৎস সম্পর্কে জানার জন্য এই আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।

    অপরদিকে আসামি তারেকুজ্জামানের আইনজীবীরা আদালতের কাছে দাবি করেন, তারেকুজ্জামান জনপ্রিয় একজন কাউন্সিলর। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে এই মামলা দেয়া হয়েছে। তিনি কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত নন। তাঁর কাছ থেকে পাওয়া গেছে মাত্র ৩৩ হাজার টাকা। তিনি মাদক ব্যবসায়ী নন।

    আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে তারেকুজ্জামানকে দুই মামলায় ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

    তারেকুজ্জামান রাজিব

    বেশ কিছুদিন ধরে আলোচনার মধ্যেই শনিবার (১৯অক্টোবর) দিনগত রাতে বন্ধুর বাসায় আত্মগোপনে থাকা রাজীবকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এসময় ওই বাসা থেকে সাতটি বিদেশি মদের বোতল, একটি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, তিন রাউন্ড গুলি, নগদ ৩৩ হাজার টাকা ও একটি পাসপোর্ট জব্দ করা হয়।পার্সটুডে

    র‌্যাব জানায়, সন্ত্রাসবাদ, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের মতো সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রাজীবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে তাকে সঙ্গে নিয়ে রাতভর মোহাম্মদপুরে তার বাসা ও কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়।

    অভিযান শেষে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, আমরা মোহাম্মদপুরে তার বাসা ও অফিসে তল্লাশি করেছি। সেখানে তেমন কিছু পাইনি। কারণ আমরা যা বুঝতে পেরেছি তার বাড়িতে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত যেসব ডকুমেন্ট ছিল সেগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে তারই একজন সহযোগীর আত্মীয় বাড়ি থেকে একটি চেকবই উদ্ধার করা হয়েছে। বইটিতে দেখা গেছে, ব্র্যাক ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্টে একদিনে (তিনটি চেকের মাধ্যমে) পাঁচ কোটি টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। আমরা এগুলো তদন্ত করে দেখছি কোথায় টাকা জমা দিয়েছেন, টাকাগুলো কোথায় গিয়েছে।

    ২০১৫ সালে কাউন্সিলর নির্বাচনে তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। দলীয় প্রার্থী ও মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি শেখ বজলুর রহমানকে হারিয়ে নির্বাচিত হন তিনি।

    মোহাম্মদপুর এলাকায় যুবলীগের রাজনীতি দিয়েই রাজীবের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু। অল্পদিনেই নেতাদের সান্নিধ্যে মোহাম্মদপুর থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক পদ বাগিয়ে নেন। যুবলীগের সাইনবোর্ড আর কাউন্সিলরের পদটি ব্যবহার করে এলাকায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা, ডিশ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন রাজীব। মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে তাঁকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে আবার ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন তিনি।