শ্রীমঙ্গলে রেলওয়ে জমি ব্যক্তিমালিকানা দাবী করে দখলের চেষ্টা

    0
    372

    জহিরুল ইসলাম,নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারে শ্রীমঙ্গলে রেলওয়ে জমি ব্যক্তিমালিকানা দাবি করে দখলের অপচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

    অভিযোগ থেকে জানা যায়, রেলওয়ে কতৃপক্ষের সুরমা ভ্যালি রেলওয়ের ব্রীজের শ্রীমঙ্গল সাতগাও মধ্যবর্তী ২৮৬/৯ থেকে ২৮৭/০ তে ব্রীজ নং ১৪৬ এর নিকট  জমিটি কৃষি শ্রেণীর নামে বন্দোবস্তর সূত্রে বিগত ২০ বছর ধরে গাজী আশরাফুল আলম এর পিতা মৃত মহুরুম গাজী আবুল কালাম রেলওয়ে আইনানুযায়ী ভোগ দখল করে আসছে। সম্প্রতি একটি পক্ষ জমিটি মালিকানাধীন দাবী করে জোর করে দখলের অপচেষ্টা করছে বলে গাজী আশরাফুল আলম অভিযোগ এনে শ্রীমঙ্গল থানা ও রেলওয়ে থানায় অভিযোগ করেছে জানান তিনি।

    মহুরুম গাজী আবুল কালাম এর ছেলে গাজী আশরাফুল আলম এর পরিবার লিজকৃত ২১ শতক জায়গা দীর্ঘ দিন থেকে ভোগদখল করে আসার এক পর্যায়ে গতকয়দিন পুর্বে হুট করে রাহেল মিয়া পিতা আবু সোবান এর ছেলে সরকারী লিজকৃত জায়গাঁটি নিজেদের মৌরুশি সম্পত্তি বলে দাবী করছেন এ নিয়ে দুই পক্ষ শ্রীমঙ্গল থানাতে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়ের করেছে। ঘটনার খবর পেয়ে রেলওয়ে জিআরপি থানার পুলিশের একটি টিম উল্লেখিত স্থানে গিয়ে রাহেল মিয়া,রউফ মিয়া ও তার বাহিনীকে জায়গা থেকে তাড়িয়ে দেয় এবং তাদের নিষেধ করে এ জায়গাতে কোন প্রকার লোক জমায়েত করা যাবে না। তারপরে তারা ঐ জায়গাতে গোপনে নিজেরা আমিন (সার্ভেয়ার) এনে খুটি গেড়েছে। প্রশাসনকে তারা মানছে না।

    গাজী আশরাফুল আলমের আরও অভিযোগ রউফ মিয়া নামে এক লোক পিছন থেকে সব কিছু করছে রাহেল মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে দিয়ে। রউফ সরকারী জায়গা দখল করতে সেখানে লাঠি সোটা ও দেশীয় অস্ত্র হাতে রেললাইনের আশ পাশের কিছু ছেলেদের বসিয়ে রাখে হামলা করার উদ্যেশে।

    এ ব্যাপারে রেলওয়ে জিআরপি থানার ওসি মো. আমলগীর হোসেন বলেন, আমার কাছে তারা আসার পরে বলেছি জায়গাটি রেলওয়ে থানার আওতার বাহিরে। আমি দুই পক্ষকে বেঙ্গল থানাতে যোগাযোগ করতে বলেছি। এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে উধ্বর্তন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) মনিরুজ্জামানের সাথে প্রথমে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি পরে কথা হলে তিনি বলেন, যে জমিটি দখল করার চেষ্টা করছে এটি রেলওয়ের জন্মলগ্ন থেকে রেলওয়ের সম্পত্তি হিসেবে চিহ্নিত। প্রায় ২০/২২ বছর আগে গাজী আবুল কালাম নামে এক ব্যক্তি ওই জমির লীজ নিয়েছে। যে পক্ষ বর্তমানে জোর করে দখল করার চেষ্টা করছে আমরা ওদের বাধা দিয়েছি পরে ওরা আমাদের এখানে এসেছিল আমরা ওদেরকে বলে দিয়েছি আপনারা যদি মৌরসী সম্পত্তি হিসেবে দাবি করেন তাহলে আপনাদেরকে রেলের উপরে মামলা করতে হবে। রেলের কাছ থেকে ক্লিয়ারেন্স না পাওয়া পর্যন্ত জোর করে সম্পত্তি দখল করা যাবেনা এটি আইনত অপরাধ । রেলের ব্রিজের পাশে অতিরিক্ত জমি থাকে যা নিজের প্রয়োজনে যেকোনো সময়ে এখানে ব্রিজের কাজে কন্টাকটার সহ কাজের লোকদের থাকার ব্যবস্থা করতে হয় সেজন্য প্রত্যেকটা ব্রিজ এর আশেপাশে জায়গার পরিমান বেশি থাকে। আমরা ওদেরকে বলে দিয়েছি যদি ওরা জমির মালিকানা দাবি করে তাহলে তাদেরকে রেলের সাথে আইনি প্রসেসে আগাতে হবে।

    অভিযুক্ত রউফ মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন,আমি পাড়া প্রতিবেশী ও গরীব মানুষ হিসেবে তাকে সহযোগীতা করছি। সে গরীব হিসেবে তার পূর্ব পুরুষের জায়গা দখল হয়ে যাচ্ছে এটা মানা যায় না। জায়গার দাবীদার রাহেল মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,জায়গাটি আমাদের মৌরুশি সম্পত্তি। গাজী আশরাফুজ্জামানের পাশে জায়গা থাকার কারনে তারা জায়গার দাবী করছেন।সকল রেকর্ড অনুযায়ী জায়গাটি আমাদের।

    লিজকৃত জায়গার মালিক মহুরুম গাজী আবুল কালাম এর ছেলে গাজী আশরাফুজ্জামান আলম জানান,আমার মহুরুম পিতা এই জায়গাটি অনুমান প্রায় ২০/২১ বছর আগে রেলওয়ে থেকে কৃষি জমি হিসেবে লিজ নেন ৯৯ বছরের জন্য। কিন্তু হুট করে আজ এত বছর পরে রাহেল মিয়া এই জায়গার দাবী করে।রাহেল মিয়া তার মদদদাতাদের নিয়ে দখল করতে এসেছে।সরকারী জায়গা দখল করতে তারা কিভাবে আসেন।এর পিছনে যারা জড়িত আছে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।আমি লিখিতভাবে রেলওয়েতে,বেঙ্গল থানা,জিআরপি থানাতে জানিয়েছি।আমরা আগামি ২১ সাল পর্যন্ত এই জায়গার খাজনা পরিশোধ করেছি।এই জায়গা দখলের পিছনে রাহেল মিয়ারা একটা  সিন্ডিকেট তৈরী করেছে। তিনি  আরও বলেন, যদি জায়গা রেলওয়ে হয় আর আমি এই জায়গার বৈধ লীজের মালিক হয়ে থাকি তাহলে কোন ছাড় দিবো না। আর যদি জায়গা তাদের হয় এই জায়গার প্রতি আমার কোন দাবী নেই।

    এদিকে  রেলওয়ে ঢাকা অফিস থেকে বলছেন জায়গাটি মৃত গাজী আবুল কালামের নামে লিজের রেকর্ড আছে যার লাইন্সেন নং ১৪১০/ নবায়ন সাল ১৯৯৮,জায়গার পরিমান ২১ শতক। জায়গাটির কাগজ হারিয়ে যাওয়াতে রেলওেয়ের পথ বিভাগকে অবগত করলে তারা আগামী ৬ জুলাই এর ভিতরে সকল কাগজপত্র বুঝিয়ে দিবেন বলেন জানা গেছে।

    শ্রীমঙ্গল থানার ওসি (তদন্ত) সোহেল রানা বলেন,আমরা দুই পক্ষেরই পাল্টাপাটি অভিযোগ পেয়েছি।আমরা দুই পক্ষকে পরামর্শ দিয়েছি যেহেতু এটি রেলওয়ের জায়গা সুতরাং রেলওয়ে ও ভূমি অফিসে যোগাযোগ করতে তাদের পরামর্শ দিয়েছি।আপডেট