ভিটে থেকে উচ্ছেদ আতঙ্কে শ্রীমঙ্গলের ৫০ পরিবার !

    0
    221

    উচ্ছেদ আতঙ্কিত পরিবার গুলো প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,৩০আগস্ট,নিজস্ব প্রতিনিধিঃ শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের পাহাড় ঘেরা প্রত্যন্ত গ্রাম ববানপুর। ১৯৫২ সালে ছরিম উল্ল্যা নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ১৫ একর জমি ক্রয় করে বসতি গড়ে তোলেন ২৪টি পরিবার। পরবর্তীকালে পরিবারগলো সেই জমির খাজনা দিয়ে বংশানুক্রমে অদ্যাবধি তারা এই গ্রামে বসবাস করে  আসছে। ১৯৬৫ সালে এই গ্রামের পাশের একটি চা বাগান গড়ে উঠলে ২০০৭ সালে হঠাৎ করে বাগান  কর্তৃপক্ষ ভূমিটির মালিকানা দাবী করে ৫৫ বছরের পুরনো গ্রামটি দখলে নিতে গ্রামবাসীকে উচ্ছেদ নোটিশ দেয়। দেশের বিশিষ্ট সমাজসেবক লায়লা কবিরের মালিকানাধিন দিনারপুর টি এস্টেট নামে এই  বাগান কর্তৃপক্ষ দাবী করছে- বাগান সম্প্রসারণ লক্ষে তারা বিবাদমান জমিটিসহ কিছু ভূমি সরকার থেকে ৩৬ বছরের লীজ বন্দোবস্তর নিয়েছে।এ নিয়ে গ্রামবাসীর পক্ষে ছতির মিয়া গং আদালতে মামলা করে পরে হেরে যায়। এরপর গ্রামবাসীরা আপিল করলে এ পর্যন্ত মামলাটি স্থিত অবস্থায় রয়ে যায়।

     এ  অবস্থায় দিনারপুর টি এস্টেট কর্তৃপক্ষ মামলার রায়ের জোরে গ্রামটি উচ্ছেদে চেষ্টা করায় এই ৫০টি  পরিবারের ৪ শতাধিক মানুষ চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। গতকাল সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে এলাকার অবাল বৃদ্ধ নারী পুরুষ সাংবাদিকদের ঘিরে ধরেন।চোখে মুখে অনিশ্চয়তার ছাপ নিয়ে ৭৫ বছর বয়সী খোদেজা বিবি বলেন, প্রায় ৬০ বছর আগে সে এই গ্রামে  এসেছিলেন নববধূর পোষাকে। এরপর একে একে শ্বশুর, শাশুড়ি, স্বামী মারা গেছেন এখানেই। এই গ্রামের বেশির ভাগই পরিবার হত দরিদ্র। গ্রামের ৫০টি  পরিবারের সবগুলি ঘরই মাটির তৈরী। বিদ্যুতের আলোহীন গ্রামে নেই কোন কৃষি জমি। উঠানে সবজি,বাঁশ চাষাবাদ ও দিনমজুরী গ্রামবাসীদের আয়ের উৎস।

    ৬৫ বছর বয়সী গ্রামের আব্রু মিয়া বলেন, চা  বাগান মালিকদের টাকা আছে। আমরা দরিদ্র মানুষ। এ ভিটে নিয়ে আমরা খুব দুশ্চিন্তাায় আছি। ওরা  আমাদের গ্রাম থেকে উচ্ছেদ করলে কোথায় যাব, আমাদের তো যাবার কোন জায়গা নেই। মোছদ্দর  আলী বলেন, ওরা জোর করে উচ্ছেদ করতে বাগান কর্তৃপক্ষ তাদের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে হুমকি  দিয়ে বেড়াচ্ছে।

    এ ব্যাপারে উচ্ছেদ আতঙ্কিত পরিবার গুলো প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

    স্থানীয় মির্জাপুর ইউনিয়নের সদস্য লুৎফুর রহমান বলেন, “একদিকে উচ্ছেদ অন্যদিকে সন্ত্রাসী হামলার আশংকায় গ্রামের দরিদ্র মানুষরা তাদের নারী ও শিশুদের নিয়ে চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।” যোগাযোগ করা হলে দিনারপুর চা বাগানের ম্যানেজার মিজানুর রহমান জানান, “জোর করে গ্রামবাসীদের উচ্ছেদ করার অভিযোগ সত্য নয়। বিবাদমান ভূমির মালিকানা প্রশ্নে কোর্ট বাগানের পক্ষে যে রায় দিয়েছে তার প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। কোর্ট আবার যদি গ্রামবাসীদের পক্ষে রায় দেয় তবে তারা থাকবে।সন্ত্রাসী ভাড়াটে দিয়ে গ্রামবাসীদের উচ্ছেদের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন-আদালতের রায় পাওয়ার পর সন্ত্রাসী দিয়ে ভূমি দখল নেয়ার কোন প্রয়োজন পরেনা।”