ভারত থেকে চাল আমদানি:ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের কৃষকরা

    0
    312

    বাংলাদেশের কৃষকরা ধানের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে যখন তাদের ক্ষেতেই পাকা ধানে আগুন ধরিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন ঠিক সেসময় ভারত থেকে হাজার হাজার টন চাল আমদানি করা হচ্ছে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এতে আমদানিকারক ও ভারতীয় কৃষকরা লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশের কৃষকরা। সরকারের মন্ত্রীরা যখন বিদেশে চাল রফতানির কথা বলছে ঠিক সে সময় হাজার হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানিকে অনেকে হাস্যকর বলছেন।

    দেশের অন্যতম বৃহৎ স্থলবন্দর দিনাজপুরের হিলিতে পণ্য খালাসকারীদের উদ্ধৃত করে খবরে বলা হয়েছে এ স্থলবন্দর দিয়ে গত দেড় মাসে ভারত থেকে ১৫ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০০ মেট্রিক টন চাল ঢুকছে হিলি বন্দর দিয়ে।

    হিলি স্থলবন্দর আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন-অর রশিদ হারুন গণমাধ্যমকে বলেছেন, ভারত থেকে এখন যে চাল আসছে তা আতপ চাল। প্রতি কেজি ভারতীয় চালের দাম পড়ছে ২২ টাকা। এ অবস্থায় সরকার কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সংগ্রহ অভিযানে চালের মূল্য ঠিক করেছে ৩৬ টাকা।

    ‘উদ্বৃত্ত ধানের এলাকা’ বলে পরিচিত দিনাজপুরে এখন বোরো ধান বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ৫০০-৫৫০ টাকায়। কৃষকরা বলছে, এই দামে ধান বিক্রি করে লাভ তো দূরের কথা উৎপাদন খরচও উঠছে না। অনেকে বাধ্য হয়ে লোকসানেই ধান বিক্রি করছেন। কারণ প্রতিবিঘায় ধানের উৎপাদন খরচ পড়েছে ১৮-১৯ হাজার টাকা। সেখানে ধান হয়েছে ৩৪ মণ। এক বিঘা জমির ধান বিক্রি করে কৃষক পাচ্ছে ১৭ হাজার টাকার মতো। ফলে চলতি বোরো মৌসুমে কৃষকরা চরম লোকসানের মুখে পড়েছে। লাভ তো দূরের কথা, উৎপাদন খরচও পাচ্ছে না কৃষক।

    ধানের বাজার নিয়ে একই অভিযোগ সিলেটের হাওর অঞ্চল বা ফেনীর গ্রাম থেকে দেশের অন্যান্য এলাকার কৃষকদের।

    কৃষি অর্থনীতিবাদরা বলছেন, এ বছর বাংলাদেশে ধান উৎপাদন বাড়লেও ব্যাপক হারে চাল আমদানি হওয়ায় বাজারে ধানের দাম বাড়ছে না। বোরো ধানের এ ভরা মৌসুমে চাল আমদানি করায় কৃষকরা তাদের ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। এতে কৃষকরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এখুনি আমদানি বন্ধ না হলে কৃষকরা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এভাবে কৃষক ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।পার্সটুডে