ভবিষ্যতে ‘বিচার’ করার হুমকি দিয়েছেন কামাল

    0
    259

    সরকার সাত দফা দাবি মেনে না নিলে ভবিষ্যতে ‘বিচার’ করার হুমকি দিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা কামাল হোসেন।

    শনিবার চট্টগ্রামে এই নতুন জোটের দ্বিতীয় জনসভায় তিনি বলেছেন, ‘আজকে জনগণ ৭ দফার পক্ষে হাত উঠিয়ে গণরায় দিয়েছে। সিলেটেও গণরায় দিয়েছে। সরকারকে বলব, সময় থাকতে ৭ দফা দাবি মেনে নিন। অন্যথায় এটা অমান্য করার জন্য বিচার হবে।’

    নির্বাচন সামনে রেখে গত ১৩ অক্টোবর কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপিকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়, যার সঙ্গে আছে আসম আবদুর রবের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি এবং মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য।

    সংসদ ভেঙে, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে ‘নিরপেক্ষ’ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি রয়েছে এই সাত দফার মধ্যে, যার একটিও মানা হবে না বলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সাফ জানিয়ে দিয়েছে।

    নবগঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা

    # অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, আলোচনা করে নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।

    # গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।

    # বাক, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সকল রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা এবং নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।

    # কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সাংবাদিকদের আন্দোলন এবং সামাজিক গণমাধ্যমে স্বাধীন মত প্রকাশের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির নিশ্চয়তা দিতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সকল কালো আইন বাতিল করতে হবে।

    # নির্বাচনের ১০ দিন পূর্ব থেকে নির্বাচনের পর সরকার গঠন পর্য্ন্ত বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োজিত ও নিয়ন্ত্রণের পূর্ণ ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত করতে হবে।

    # নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে ভোট কেন্দ্র, পোলিং বুথ, ভোট গণনাস্থল ও কন্ট্রোল রুমে তাদের প্রবেশের ওপর ওপর কোনো ধরনের বিধি-নিষেধ আরোপ না করা এবং নির্বাচনকালীন সময়ে গণমাধ্যমকর্মীদের উপর যে কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করতে হবে।

    # তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা এবং নতুন কোনো মামলা না দেওয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে।

    এই সাত দফার পক্ষে জনমত গঠনে সিলেটের পর শনিবার বন্দরনগরী চট্টগ্রামে এই জনসভা হয়। লালদীঘি মাঠের অনুমতি না পেয়ে নূর আহমেদ সড়কে বিএনপির কার্যালয় নাসিমন ভবনের সামনে এই জনসভার আয়োজন হয়।

    বিএনপির চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি ডা. শাহাদাaত হোসেনের সভাপতিত্বে এ জনসভার গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেন ছিলেন প্রধান অতিথি। আর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছিলেন জনসভার প্রধান বক্তা।

    নাসিমন ভবনের সামনে উত্তর-দক্ষিণমুখে নির্মিত মঞ্চের ব্যানারে অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তিসহ সাত দফা দাবির কথা লেখা দেখা যায়।

    খালেদা জিয়া এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর মুক্তির পাশাপাশি তারেক রহমানের সাজার রায় বাতিলের দাবি সম্বলিত দুটি ডিজিটাল ব্যানারও টানানো হয় জনসভাস্থলে।

    জনসভায় আসা নেতা-কর্মীদের জাতীয় পতাকার পাশাপাশি খালেদা জিয়ার আলোকচিত্র সম্বলিত ব্যানার-প্ল্যাকার্ড বহন করতে দেখা যায়।

    এই কর্মসূচি ঘিরে নগরীর বিভিন্ন স্থানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।