ব্ল্যাকমেইলের চাপেই নাসিরনগরে অপুর আত্মহত্যা,আটক-৩

    0
    273

    হবিগঞ্জ প্রতিবেদকঃ  ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর থানায় মাসরুল হক অপুর আত্মহত্যার মামলায় ৩জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মাসরুল হক অপু উপজেলার ফান্দাউক গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে। ঘটনার পর আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে নাসিরনগর থানায়; লাখাই উপজেলার ফুলবাড়িয়ার মৃত সফর আলীর কন্যা নার্গিস আক্তার লুৎফা ও চুনারুঘাট উপজেলার নতুনব্রিজ এলাকার শিমুলতলা গ্রামের আ’লীগ নেতা আঃ মন্নানসহ ৬ জনের নামে এ মামলা করেন অপুর পিতা।

    মামলার অনান্য আসামীরা হলেন, হবিগঞ্জ জেলার ফুলবাড়িয়া গ্রামের মোঃ আসর আলী, ইকবাল মিয়া, সাজাহান মিয়া, জসিম মিয়া। মামলা রুজুর পর আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী ও উক্ত মামলার প্রধান আসামী নার্গিস ওরফে লুৎফাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নার্গিস আক্তার লুৎফা হবিগঞ্জেরে লাখাই উপজেলার ফুলবাড়ীয়া গ্রামের মৃত আশকর আলীর মেয়ে।

    মামলার বিবরণ ও নিহতের পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, অপু আত্মহত্যার মূল হোতা আব্দুল মন্নানের প্ররোচনায় প্রতারক নারী নার্গিস আক্তার লুৎফাসহ একটি চক্র তাকে দীর্ঘদিন যাবৎ ব্ল্যাকমেইল করে আসছিল। প্রতারক চক্রের মূল হোতা আব্দুল মন্নানের ছত্রছায়ায় প্রতারক নার্গিস তার বিভিন্ন কূট কৌশলের দ্বারা যুবকদের সাথে প্রতারণা করে অর্থ বানিজ্য ও অসামাজিক কার্যকলাপ করে আসছে । জানা গেছে, বিগত প্রায় ৩বছর পূর্বে প্রতারক নার্গিস কসমেটিকস ব্যবসায়ী অপুর দোকানে পন্য ক্রয় করার সুবাধে পরিচয় হয় অপুর সাথে। তার পর থেকে শুরু হয় প্রেম ভালবাসার সম্পর্ক।

    কিন্তু চলনাময়ী নার্গিস তার চক্রের মূল হোতা আব্দুল মন্নানের ছত্রছায়ায় অপুকে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে। একপর্যায়ে প্রতারক নারী চেতনা নাশক ঔষধ সেবন করিয়ে অচেতন করে অপুর সঙ্গে কিছু আপত্তিকর ছবি তোলে মোটা অংকের অর্থ দাবী করে। বিভিন্ন সময় ফাঁদে ফেলে অপুর নিকট থেকে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নেয় নার্গিস ও তার চক্র। এমনকি এক পর্যায়ে প্রতারক চক্রের মাধ্যমে হাত মিলিয়ে অপুকে শারিরিক ও মানসিক ভাবে আঘাত করে ।

    পরবর্তীতে মানসম্মানের ভয়ে নিজ এলাকা ছেড়ে আত্নসম্মান রক্ষার্থে হবিগঞ্জ জেলার অর্ন্তগত শায়েস্তাগঞ্জ ওলিপুর কোম্পানীতে চাকুরী নেয় অপু। কিন্তু সেখানেও রক্ষা পায়নি প্রতারক নারীর কবল থেকে। আত্নহত্যার পুর্বে অপুকে মানসিক চাপে ফেলে বড় অংকের অর্থ দাবী করে নার্গিস ও মন্নানের চক্র। অপুর পরিবার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে দেয়া ও হত্যার হুমকি দেয় নার্গীস ও মন্নানের চক্র ।

    এতে মানসিক চাপ সইতে না পেরে গত ১৪ এপ্রিল রাতে অপু তার বাড়ির পাশে জাম্বুরা গাছে গলায় রশি বেঁধে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করে। নিহতর পিতা মোজাম্মেল হক এই ভয়ংকর নারী ও চক্রের মুল হোতা আব্দুল মন্নানসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

    নাসিরনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজেদুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ইব্রাহিম আকন্দ জানান, এপর্যন্ত মুল আসামী নার্গিসসহ তিনজন গ্রেফতার হয়েছে। পলাতক আসামীদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।