ব্যক্তির পাশাপাশি সংগঠনের বিচারের জন্য তদন্ত চূড়ান্ত

    0
    261

    আমারসিলেট24ডটকম,২৫মার্চঃ ৭১’রের মানতাবিরোধী অপরাধের জন্য  ব্যক্তির পাশাপাশি এবার সংগঠনের বিচারের জন্য তদন্ত চূড়ান্ত করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।মুক্তিযুদ্ধকালে ‘অপরাধী সংগঠন’ হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন শিগগির প্রসিকিউশন বরাবর দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান।

    আজ মঙ্গলবার সকালে ধানমণ্ডিস্থ তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তদন্ত সংস্থার এ প্রধান সমন্বয়ক।তিনি বলেন, সংগঠন হিসেবে জামায়াতের বিরুদ্ধে তদন্ত চুড়ান্ত করা হয়েছে। শিগগির প্রসিকিউশন বরাবর প্রতিবেদনটি দাখিল করা হবে। এরপর প্রসিকিউটশন তা দেখে আদালতে দাখিল করবেন।

    তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সানাউল হক জানান, জামায়াতের বিরুদ্ধে একাত্তর সালের ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সমগ্র বাংলাদেশে সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ সব ধরনের মানবাতবিরোধী অপরাধের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।তিনি বলেন, সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামী (কেন্দ্র থেকে সব স্তরের নেতৃত্ব) অভিযুক্ত করা হয়েছে।
    তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে ৩৭৩ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদনসহ সাত খণ্ডে জব্দ তালিকা ও দালিলিক প্রমাণ এবং তিন হাজার ৭৬১ পৃষ্ঠার অন্যান্য ডকুমেন্ট তৈরি করা হয়েছে। ৭০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। সংগঠন হিসেবে দোষী সাব্যস্থ হলে তার শাস্তি কী হবে সে বিষয়ে আইনের অস্পষ্টতা রয়েছে।
    বিচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩ সংশোধন করে ব্যক্তির পাশাপাশি সংগঠনের বিচারের বিধান তৈরি করা হলেও অপরাধী সংগঠনের শাস্তি কী, তা আইনে উল্লেখ নেই। এ কারণে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। এ অবস্থায় রাষ্ট্রপক্ষকে শুধু জামায়াতের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করলেই হবে না, বিদ্যমান আইনেই যে সংগঠনটিকে শাস্তি দেয়া সম্ভব, তা-ও প্রমাণ করতে হবে।

    বিচারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ৪৪তম স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে জামায়াতের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হলে দেশের ইতিহাসে নতুন মাত্রা যোগ হবে। কারণ এটিই হবে বাংলাদেশে সংগঠন বা রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে বিচারের প্রক্রিয়া শুরুর প্রথম পদক্ষেপ।

    গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লাকে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২। এ রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনালের দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিলের বিধান রেখে সংশ্লিষ্ট আইনের সংশোধনী সংসদে পাস হয়। ওই সময় আইনের ৩ ধারা সংশোধন করে ব্যক্তির পাশাপাশি সংগঠনেরও বিচারের বিধান করা হয়। কিন্তু ২০ ধারায় দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তির সাজার পাশাপাশি সংগঠনের সাজা কী হবে, তা উল্লেখ করা হয়নি।

    গত বছরের ১৮ আগস্ট জামায়াতের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে তদন্ত সংস্থা। এরই মধ্যে ১ আগস্ট জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় হাইকোর্ট।সংবাদ সম্মেলনে প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ, তদন্তকারী কর্মকর্তা মতিউর রহমানসহ তদন্ত সংস্থার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।