ব্যক্তিখাতের করমুক্ত আয়ের সীমা দুই লাখ ৪০ হাজার টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব এফবিসিসিআইর

    0
    437

    ॥ মকবুল হাসান ইমরান ॥ Tax free income

    আগামী ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তি খাতের করমুক্ত আয়ের সীমা ৪০ হাজার টাকা বাড়িয়ে দুই লাখ ৪০ হাজার টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন।
    সরকারের বাস্তবায়ন সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে আগামী বাজেটে কর আদায় এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির লক্ষ্যমাত্রা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ বাড়িয়ে রাখার প্রস্তাব রয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনটির।
    নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে সারচার্জ আরোপ করা হলে যেন শুধু বিলাস পণ্যের ওপরই তা আরোপ করা হয়, সে প্রস্তাব দিতে যাচ্ছে এফবিসিসিআই।
    জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এফবিসিসিআইয়ের বৈঠক হওয়ার কথা। এনবিআরে অনুষ্ঠেয় ওই বৈঠকে এসব প্রস্তাব দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
    গতকাল এনবিআরের চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেটে নতুন করের চাপ আসছে না। আয়কর, শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর ফাঁকি রোধ করে বাড়তি রাজস্ব আদায় করার চিন্তা করা হচ্ছে। তিনি জানান, ৬ জুন বাজেট ঘোষণা করা হবে।
    এনবিআরের চেয়ারম্যান আরও জানান, বন্ডেড ওয়্যারহাউসের সুবিধার অপব্যবহার রোধ করা, বাড়ি ও গাড়ির মালিকদের করের আওতায় আনা সম্ভব হলে কর আদায় বাড়বে। কিছু আমদানিপণ্যে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বাড়তে পারে। এ ছাড়া পদ্মা সেতুর জন্য বাজেটে সারচার্জ আরোপ হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
    ব্যক্তিগত আয়ের ক্ষেত্রে দুই লাখ ৪০ হাজার থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ের ওপর ১০ শতাংশ, ছয় লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ, সাত লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ের ওপর ২০ শতাংশ আর অবশিষ্ট আয়ের ওপর ২৫ শতাংশ হারে কর ধার্য করার প্রস্তাব দেবে এফবিসিসিআই।
    প্রাতিষ্ঠানিক বা করপোরেট করের হার নির্ধারণে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দিলে ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ, ১০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিলে ২৫ শতাংশ আর ২০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিলে ২২ দশমিক ৫ শতাংশ আয়কর নির্ধারণের প্রস্তাব করবে এফবিসিসিআই। আর তালিকাভুক্ত নয়, এমন কোম্পানির ক্ষেত্রে যদি তা উৎপাদনশীল কোম্পানি হয়, তাহলে ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ আর তা না হলে ৩৫ শতাংশ আয়কর নির্ধারণের প্রস্তাব রয়েছে সংগঠনটির।
    শিল্পায়নের স্বার্থে শিল্পের মৌলিক কাঁচামালের ওপর অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহার চায় এফবিসিসিআই। তা না হলে বর্তমান হার ৫ শতাংশ কমিয়ে ৩ শতাংশ করার দাবি তাদের।
    এনবিআরে আলোচনার জন্য এফবিসিসিআই যে প্রস্তাব তৈরি করেছে, তাতে দেশীয় শিল্পের বিকাশ, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বাড়ানো এবং জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে মূলধনি যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশের ওপর ১ শতাংশ শুল্ক আরোপের অনুরোধ করা হয়েছে। তবে শতভাগ রপ্তানিমুখী শিল্পের ক্ষেত্রে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির শুল্ক তুলে দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে সংগঠনটির।
    চলতি বাজেটে মূলধনি যন্ত্রপাতির ওপর ১ শতাংশ আর যন্ত্রাংশের ওপর ৩ শতাংশ হারে শুল্ক ধার্য রয়েছে।
    শুল্কহার-সংক্রান্ত অসংগতি চিহ্নিত করা এবং শুল্কস্তর কাঠামোর প্রয়োজনীয় পুনর্বিন্যাস করার সুপারিশ প্রণয়নে এনবিআর ও এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেছে সংগঠনটি।