বেআইনী নোটিশে দলই চা-বাগান বন্ধ,শ্রমিকদের দুর্ভোগ

    0
    257

    “অবিলম্বে বাগান চালু করে মজুরি-রেশন পরিশোধের দাবি এবং ধলই চা-বাগান চালু না করা হলে সমগ্র চা-শিল্পে শ্রম অসন্তোষ সৃষ্টি হলে তার দায় মালিকপক্ষকে নিতে হবেঃট্রেড ইউনিয়ন সংঘ”

     অবিলম্বে কমলগঞ্জ উপজেলার দলই চা-বাগান চালু করে শ্রমিকদের মজুরি ও রেশন পরিশোধের দাবি করেছেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সভাপতি হাবিবউল্লা বাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম। ২৮ আগষ্ট গণমাধ্যমে পাঠানো একযুক্ত বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন করোনা মহামারিকালীন দুর্যোগের সময়ে ধলই চা-বাগান কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে শ্রমআইন লঙ্ঘন করে আকম্মিকভাবে কোন রকম পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই গত ২৭ জুলাই রাত থেকে অনির্দ্দিষ্টকালের জন্য বাগান বন্ধের নোটিশ প্রদান করেন।

    এরপর জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শ্রমঅধিদপ্তরের উদ্যোগে একাধিক বৈঠক হলেও মালিকপক্ষ তাদের আদেশ প্রত্যাহার করে বাগান চালু করেননি। প্রশাসনের মধ্যস্থতায় ১৯ আগষ্ট বাগান চালুর ব্যবস্থা করা হলেও পরদিন থেকে মালিকপক্ষ আরও একটি নোটিশ দিয়ে অনির্দিষ্ঠকালের জন্য বাগান বন্ধের ঘোষণা দেন। প্রশাসনকে আরও দৃড় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন দলই চা-বাগানের স্থায়ী অস্থায়ী মিলিয়ে হাজারো শ্রমিকের জীবন ও জীবিকা রক্ষার্থে প্রয়োজনে ধলই চা-বাগানের লিজ বাতিল করে বাংলাদেশ চা-বোর্ডের অধীনে নিয়ে বাগান চালু করা হোক।

    একই সাথে দলই চা-বাগানের মালিক রাগীব আলীকে চা-বাগান পরিচালনায় অনুপোযুক্ত ঘোষণা করে তার মালিকাধীন মালনীছড়া চা-বাগান, রাজনগর চা-বাগানসহ সকল চা-বাগানকে চা বোর্ডের আওতায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। দলই চা-বাগনের শ্রমিকরা এক মাস যাবত অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছে উল্লেখ নেতৃবৃন্দ বলেন প্রশাসনের উদ্যোগে সর্বশেষ ৩০ জুলাই শ্রমিকদের সাপ্তাহিক মজুরি পরিশোধ করা হলেও রেশন প্রদান করা হয়নি। এরপর থেকে দীর্ঘদিন যাবত শ্রমিকরা মজুরি ও রেশন না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

    কমলগঞ্জ ধলই চা বাগান থেকে শ্রীমঙ্গলে আসা নারী নেত্রীবৃন্দ,যাদের অভিযোগ করোনা মৌসুমে কচু ও পাহাড়ী শাকপাতা দিয়ে তাদের জীবন রক্ষা হয়েছে তবুও বাগান কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসেনি। 

    উল্লেখ্য বাগান কর্তৃপক্ষ গত ২৭ জুলাই রাত থেকে শ্রমআইনের ১৩ ধারা অনুয়ায়ী অনির্দ্দিষ্টকালের জন্য বাগান বন্ধের নোটিশ প্রদান করেন। অথচ ২৭ জুলাইও বাগান কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শ্রমিকরা অতিরিক্ত কাজ করেছেন। নেতৃবৃন্দ বলেন শ্রমিকদের বেআইনী ধর্মঘটের কারণে মালিকপক্ষ বাংলাদেশ শ্রমআইন-২০০৬ এর ১৩ ধারার অনুযায়ী তার প্রতিষ্ঠান আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে পারেন। কিন্তু যেহেতু দলই চা-বাগানের উৎপাদন অব্যাহত ছিল, এমন কি ২৭ জুলাইও শ্রমিকরা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নির্বিঘ্নে অতিরিক্ত কাজ করেছেন সেহেতু কর্তৃপক্ষ শ্রমআইনের ১৩ ধারার অপপ্রয়োগ করে শ্রমআইন লঙ্ঘন করেছেন। মালিকপক্ষের বেআইনী এই সিদ্ধান্তের জন্য তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে অবিলম্বে দলই চা-বাগান চালুর দাবি জানান।

    নেতৃবৃন্দ বলেন ধলই চা-বাগান চালু না করা হলে সমগ্র চা-শিল্পে শ্রম অসন্তোষ সৃষ্টি হলে তার দায় মালিকপক্ষকে নিতে হবে হুসিয়ার করেন। শ্রমিকদের ব্যবহার করে বাগান কর্তৃপক্ষ ও যেকোন স্বার্থান্বেশী মহলের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার অপচেষ্ঠার বিরুদ্ধে শ্রমিকদের সজাগ ও সর্তক থাকার আহবান জানিয়ে নেতৃবৃন্দ চা-বাগান রক্ষায় শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ থেকে মজুরি বৃদ্ধিসহ নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সুষ্ঠু আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানান।