বিয়ের দাবীতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অনশন !

    0
    236

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,২৬এপ্রিল,নিজস্ব সংবাদদাতাঃ   বিয়ের দাবীতে প্রেমিকের বাড়িতে গত তিন দিন ধরে অনশন করছেন প্রেমিকা সেলিনা আক্তার শারমিন। প্রেমিকাকে বিয়ের আশ্বাস দিলেও পরিবারের ভয়ে মেনে নিচ্ছে না প্রেমিক ময়নুল ইসলাম। বিয়ের দাবী মেনে না নিলে প্রেমিকের বাড়িতেই আত্মহননের হুমকি দিয়েছে প্রেমিকা শারমিন। ঘটনাটি ঘটেছে নবীগঞ্জের কামারগাঁও গ্রামে।

    জানা যায়, উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের কামারগাঁও পয়েন্টস্থ মঈনুল টেলিকম এন্ড ডিজিটাল স্টুডিওর স্বত্ত্বাধীকারী ও কামারগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল খালিকের পুত্র মঈনুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে নুরগাঁও গ্রামের ক্ষুদে ব্যবসায়ী হুশিয়ার আলীর কন্যা সেলিনা আক্তার শারমিনের সাথে প্রেমের সখ্যতা গড়ে ওঠে। প্রায় দুই বছর ধরে চলে তাদের প্রেম। প্রেমিকা শারমিনের সাথে আলাপকালে জানায়, এরই জের ধরে সে গত ২৩ এপ্রিল রোববার দুপুর ১টার দিকে প্রথমেই মঈনুলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আসে। সেখানে গিয়ে থাকে বিয়ের চাপ দিলে মঈনুল কোর্ট ম্যারেজের আশ্বাস দেয়। তবে এতে অস্মতি জানায় শারমিন।

    এ নিয়ে প্রেমিক প্রেমিকার মধ্যে দীর্ঘক্ষণ বাকবিতন্ডা হওয়ার পর অবশেষে মঈনুল তার এক ভাগিনাকে দিয়ে শারমিনকে তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। মঈনুল হয়তো ভাবছিল শারমিন তাদের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবী জানালেই তার অভিভাবকরা হয়তো মান সম্মানের ভয়ে শারমিনকে মেনে নিতে পারেন। কিন্তু ঘটনা ঘটেছে বিপরীত। উল্টো মঈনুলের অভিভাবকরা এ ঘটনায় যেন তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেন। পরিবারের এমন অবস্থা দেখে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় প্রেমিক মঈনুল। তবে অনড় থাকে প্রেমিকা শারমিন। বাড়িতে পাঠিয়েই মঈনুল ‘গা’ ঢাকা দিলেও মঈনুলের বাড়িতেই বিয়ের দাবীতে অনশন শুরু করে প্রেমিকা শারমিন।

    এনিয়ে গত সোমবার রাতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ এওলা মিয়াসহ স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গের সমন্বয়ে মঈনুলের বাড়িতেই সামাজিক সালিশ বৈঠক বসিলে মঈনুল শারমিনের সাথে তার প্রেমের সর্ম্পককে অস্বীকার করে। এবং শারমিনকে বিয়ে করবেনা বলেও সোজা জানিয়ে দেয়! এতে বিচারকরা পড়েন বিপাকে। সামাজিক বিচারে কোন সমাধান না হওয়াতে মধ্য রাতে বিচারকরা যার যার পথে চলে যান। এনিয়ে শারমিনের অভিভাবকরা পড়েন চরম হতাশায়। আইনের আশ্রয় নিতে শারমিনের মা ঝর্না বেগম ছুটে যান নবীগঞ্জ থানায়।

    এ ব্যাপারে ঝর্না বেগমের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, থানার ওসি সাহেব আমাকে বলেছেন এ বিষয়টি সুরাহা করার জন্য তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যান সাহেবকে বলে দিয়েছেন। এর পর তিনি মামলা না করেই বাড়িতে চলে আসেন। পুলিশ তাদের মামলা নেয়নি!

    এদিকে চেয়ারম্যান আবু সাঈদ এওলা মিয়া ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবিষয়ে কোন সুরাহা করতে না পারায় শারমিনের অভিভাবক ও আত্মীয় স্বজনরা রয়েছেন চরম দুঃচিন্তায়।

    এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ওসি এস.এম আতাউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখানে আইনী সহায়তার কোন পথ নেই। যদি মেয়েটিকে জোর পূর্বক কেহ আটক করে রাখতো তবে পুলিশ অবশ্যই উদ্ধার করতো। মেয়ে যেহেতু তার স্ব-ইচ্ছায় সেখানে অবস্থান নিয়েছে! এটাও তার জন্য সঠিক নয়। এর পরও যদি শারমিনের অভিভাবকরা মামলা করতে চায় তাহলে বিজ্ঞ আদালত খোলা রয়েছে সেখানে মামলা দায়ের করতে পারেন।

    শারমিনের মা ঝর্না বেগম আরো বলেন, আমার মেয়েকে বছরের পর বছর ধরে প্রতারনার মাধ্যমে ধোকা দিয়ে যাচ্ছে মঈনুল। এমনকি বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ফুসলিয়ে মঈনুল তার বাড়িতে নিয়ে আমার মেয়েকে তার লোকজন দ্বারা নির্যাতন করছে। যদি আমার মেয়ের কোন কিছু হয় তাহলে এ দায়বার তাদেরকেই নিতে হবে।