বিতর্কিত মৌলভীর বিরুদ্ধে হিন্দু সাজিয়ে প্রতারণার অভিযোগ

    0
    548

    বিশেষ প্রতিনিধিঃ ইসলামের নামে মাহফিল করে একের পর এক বানোয়াট ও ইসলামের সর্বজনশ্রদ্ধেয় নবী (আঃ),সাহাবী (রাঃ),অলি আওলিয়া (রাহঃ) সহ বিশিষ্ট ওলামায়ে দ্বীনদের বিরুদ্ধে অশালীন বক্তব্য রেখে যাচ্ছে কথিত ইসলামী বক্তা মিজান আযহারী।

    সম্প্রতি বিতর্কিত এই মৌলভীর বিরুদ্ধে এক মুসলিম পরিবারকে হিন্দু সাজিয়ে মুসলিম বানানোর প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে;বক্তা মিজান আজহারীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ছাড়া ও ইসলাম বিদ্বেষী নানা রকম বক্তব্যের অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় লোকদের ধারনা,মাওলানা সাইদিকে চাঁদে দেখার গল্পের মতই এই সকল গল্প তৈরির পাঁয়তারা যাতে সরল মনা মানুষ তাদের দিকে ঝুঁকে পরে।

    আযহারিকে মানুষের কাছে গ্রহণ যোগ্য আলেম বানাতে প্রতারকদের একজন আটক মনিরের পরিবারের অন্য সদস্যরা

    জানা গেছে,লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর পাটোয়ারী বাড়ির তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের আড়ালে নানা ধর্মীয় মানুষের মধ্যে মিজানুর রহমানের গ্রহণ যোগ্যতা বাড়াতে ভারত ফেরত ও পরিচয় গোপন রেখে একটি জামাতী সিণ্ডিকেট একই পরিবারের ১১ জন মুসলিমকে হিন্দু সাজিয়ে ধর্মান্তরের নাটক সাজানোর অভিযোগ তুলেছে এলাকাবাসী।অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

    স্থানীয়দের সুত্রে বিস্তারিতঃ লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর হাফেজ আয়াত উল্যার বাড়ি থেকে ধর্মান্তর হওয়া এক পরিবারের ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাতে তাদের আটক করা হয়।

    জানা যায়, আটককৃতরা এর আগে ভারতীয় নাগরিত্ব গোপন রেখে বাংলাদেশে মুসলমান হিসেবে নিবন্ধন করে বসবাস করছিলেন। এরপরেও পুনরায় কালেমা পাঠ করিয়ে তাদের মুসলমান বানায় একটি মহল।

    বিষয়টি নিয়ে উপজেলাসহ দেশব্যাপী সকল ধর্মালম্বীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে এবং এরূপ ঘটনার সাথে জড়িত মিজান আযহারি সহ সিন্ডিকেটের সকলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে অনলাইন ও অফলাইনে লোকজনকে সোচ্চার থাকতে দেখা গেছে।

    সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নারায়নপুর ডাক্তারবাড়ির মোসাম্মদ ফাতেমা বেগম ও আবদুল মজিদের ছেলে মনির হোসেন (৩৯) বিশ বছর পূর্বে অবৈধভাবে ভারতে চলে যায়।

    সেখানে গিয়ে সংকর নামে ভারতীয় নাগরিত্ব নিয়ে একটি বাসা ভাড়া করে বসবাস শুরু করেন। কয়েক মাস যেতে না যেতেই ভাড়া বাসার মালিকের মেয়ে রেখা অধিকারীকে বিয়ে করে। পরে রেখার জেঠাতো বোন সুজাতা অধিকারীকেও বিয়ে করেন।

    দুই সংসারে মিতালী, শ্যাফালী, রুপালী, কোয়েল, শ্যামলী, রাজা, সুমা, রাজেস নামে ৮ সন্তান রয়েছে। সম্প্রতি কয়েকমাস আগে সবাইকে নিয়ে বাংলাদেশে এসে নিজে মনির হোসেন নামে (১৯ অক্টোবর ২০১৯) রামগঞ্জ উপলোর ইছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জম্ম নিবন্ধন করেন তিনি। এবং ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ সালে ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার শুভাঢ্যা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মুসলমান হিসেবে দুই স্ত্রী ও সন্তানদের জম্ম নিবন্ধন করেন।

    এর আগে বড় মেয়ে শ্যাফালী বেগমকে উপজেলার চন্ডিপুরে তার বড় বোন পারভিন বেগমের ছেলে পারভেজ হোসেনের সাথে বিয়ে দেয়। সেখানে আবদুর রহমান নামে এক নাতি রয়েছে।

    মাহফিলে তাদেরসহ পরিবারের ১১ জনকে কালিমা পাঠ করিয়ে পূনরায় মুসলমান বানানো হয়। বিষয়টি নিয়ে উপজেলাব্যাপী মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে শনিবার রাতে তাদের আটক করা হয়।

    এলাকাবাসী জানান, মনির হোসেন মুসলমান ছিল। সে ছোটবেলায় ভারতে চলে যায়। গত কয়েক মাস আগে সে পরিবারের সবাইকে নিয়ে দেশে এসে মুসলমান হিসেবে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। তার দুই মেয়ে জান্নাত আক্তার ও আয়েশা আক্তার হরিশ্চর মাদ্রাসায় ৫ম শ্রেণিতে এবং ছেলে আব্দুল্লাহ নামে হরিশ্চর নুরানী মাদ্রাসায় অধ্যায়নরত।

    জামায়াতপন্থী একটি চক্র তাদের লোভ দেখিয়ে শুক্রবার মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিলে নিয়ে পূনরায় কালেমা পড়িয়ে ধর্মান্তর করেন।

    রামগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, ধর্মান্তর হওয়া ১১ জনের কাছে ভারতীয় পাসপোর্ট আছে। তারা নাগরিকত্ব গোপন করেছে। তাই তাদেরকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। বিষয়টি রাষ্ট্রিয়, আমাদের হাইকমান্ড বিষয়টি দেখছে।

    এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মনির হোসেন বলেন,আমি ভারতে থাকাবস্থায় সংকর অধিকারী পরিচয় দিতাম। দেশে ফিরে পূর্বের পরিচয় দিয়ে একটি অটোরিক্সা নিয়ে দুই স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে জীবন-যাপন করছি।

    উল্লেখ্য এক সময় তাবলীগ করতে গিয়ে ভারতে মনির হোসেন থেকে যায় এবং বিয়ে করে পরে আবার বাংলাদেশে ফিরে আসে বলে একটি সুত্রে জানা গেছে।