বিটিসিএল ইন্টারনেট সেবায় ঘন ঘন লোড শেডিং অভিযোগ

    0
    350

    মৌলভীবাজারের গ্রাহকরা বিটিসিএল’র ইন্টারনেট সেবাতে অতিষ্ঠ 

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,৩০জুলাই,জহিরুল ইসলামঃ বিটিসিএল-একমাত্র সরকারী আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) প্রতিষ্ঠান।এই প্রতিষ্ঠানের কাজ হলো বিটিআরসি থেকে লাইসেন্সধারী আইএসপি (ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার) কে বাল্ক ইন্টারনেট প্রোভাইড করা। বিটিসিএল একমাত্র সরকারী প্রতিষ্ঠান হলেও বেসরকারী আরও বেশ কয়েকটি আইআইজি রয়েছে। তবে যেখানে বিটিসিএল এর টেলিফোন এক্সচেঞ্জ আছে সেখান থেকেই বিটিসিএল এর আই্‌আইজি থেকে আইএসপিগুলো ইন্টারনেট সংযোগ নিতে পারে।
    উপজেলা,জেলা পর্যায়ে বা মফস্বল শহরে বেসরকারী আইআইজি এর সংযোগ না থাকাতে বিটিসিএল এর ইন্টারনেটই একমাত্র ভরসা। আর বেসরকারী আইআইজি থেকে মফস্বল শহরের আইএসপিগুলো যদি ইন্টারনেট কিনতেও চায় তাহলে সরকার নির্ধারিত দামের দ্বিগুনেরও বেশি দামে বাল্ক ইন্টারনেট কিনতে হয়।
    শুধুমাত্র চলিত জুলাই মাসের ইন্টারনেট ক্ষেত্রে বিটিসিএলের সেবার নমুনা তুলে ধরা হলো-তারিখ- ০৯.০৭.১৭ ডাউন রাত ৯.০০ টায়,আপ-রাত ১১.৩০ মিনিট,তারিখ-১০.০৭.১৭ ডাউন রাত ৭.০০ টায়,আপ-রাত ১০.৩০মিনিট,তারিখ-১৬.০৭.১৭ ডাউন রাত ২.১৫ টায়,আপ- দুপুর ১.১৫ মিনিট,তারিখ-১৯.০৭.১৭ বিকেল৩.০০টা থেকে সারাদিনই আসা যাওয়া করে।তারিখ- ২৪.০৭.১৭ ভোর থেকে ২৫.০৭.১৭ই ,সর্বশেষ গত ২৯.০৭.১৭ ইং ভোর থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত ইন্টারনেট বন্ধ থাকে। বন্ধ থাকার কারণে ধীর গতির (প্রায় ২৫% প্যাকেট লস) ইন্টারনেট পাওয়ার ।
    এই যদি হয় বিটিসিএল’র সেবার মান তাহলে কিভাবে গ্রাহকরা বিটিসিএল’র ইন্টারনেট ব্যবহার করবে।এতে করে গ্রাহকরা বিটিসিএল’র ইন্টারনেট লাইন ব্যবহার করা থেকে সরে যাচ্ছে। লোকসান গুল হচ্ছে বিটিসিএল ও প্রোভাইডার গুলো। ফলে মোবাইল কোম্পানীর মডেম ব্যবহারের দিকে জোঁকছে গ্রাহকরা।তাই সরকারের উচ্চপর্দস্থর বিটিসিএল’র কাছে গ্রাহক ও প্রোভাইডাররা দৃষ্টি আকর্ষণ করছে সমস্যা সমাধানের জন্য ।
    বিটিসিএল-একমাত্র সরকারী আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) ইন্টারনেট পাওয়ার ঘন ঘন বন্ধের কারনে অতিষ্ঠ গ্রাহকরা।
    শ্রীমঙ্গল ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার এস. আহমদ কম্পিউটার্স এন্ড প্রিন্টার্স’র মালিক সেলিম আহমেদ জানান,প্রতিদিন আমি বিটিসিএল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ফোনে অভিযোগ জানাই ও ইমেইলেও অভিযোগ জানাই। কিন্তু কখনই ফোনে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস পাওয়া যায় না, ইমেইলেরও কোন জবাব পাওয়া যায় না। উচ্চ পর্যায়ের কোন কর্মকর্তা বা প্রকৌশলীর সাথে কথা বলে সুনির্দিষ্ট কারণ জানারও কোন সুযোগ নেই। নামে মাত্র একটি সাপোর্ট (০২-৮৩৩২২০০) নাম্বার থেকে শুধু এটুকুই জানানো হয়“সিলেট লাইনে সমস্যা আছে”। জনশ্রুতি আছে যে বেসরকারী আই আইজি প্রতিষ্ঠানের বাল্ক ইন্টারনেট যাতে আইএসপি গুলো কিনতে বাধ্য হয় সে কারণে বিটিসিএল ইচ্ছাকৃতভাবে ইন্টারনেট লাইনে সমস্যা সৃষ্টি করে। আর এ কারণেই অধিকাংশ বড় আইএসপি বিটিসিএল এর ইন্টারনেটের পাশাপাশি বেসরকারী আইআইজি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ইন্টারনেট কিনছে।
    আমরা যেহেতু লাষ্ট মাইল পর্যায়ের অপারেটর তাই আমাদের জবাবদিহিতার মধ্যে থাকতে হয়। অর্থাৎ ইন্টারনেটের কোন ধরণের সমস্যার কারণে ব্যবহারকারী আমাদেরই দোষ দেখে এবং আমাদেরই জবাব দিতে হয়। যদিও এর কোন দায় আমাদের নেই।বিটিসিএল এর এই খামখেয়ালীপনার জন্য গ্রাহকরা আমাদের ঠিকমত মাসিক বিল প্রদান করেন না। প্রতি মাসে কয়েক হাজার করে টাকা আমাদের অনাদায়ী থেকে যায় যা আর কোনদিন তোলা সম্ভবপর হবে না। এমনকি কোন কোন গ্রাহকদের সাথে অনাকাঙ্খিত বাকবিতন্ডা ঘটে।
    মাসিক ইন্টারনেট চার্জ হিসেবে ইন্টারনেট সংযোগ প্রোভাইডারগুলো প্রতিমাসেই বিটিসিএলকে মোটা অংকের টাকা গুণতে হয়। প্রতি মাসেই ঘন ঘন বিটিসিএল এর ইন্টারনেট বন্ধ থাকলেও সে বাবদ টাকা বিল থেকে কমানোর কোন সুযোগই নেই অথচ গ্রাহকদের কাছ থেকে আমরা টাকা আদায় করতে পারি না।
    বিটিসিএল এর সেবার মান সন্তোষজনক থাকলেও বিগত কয়েক মাসে বিটিসিএল এর ইন্টারনেট সেবার মান পড়ে যাওয়াতে সেবার মানও আজকে প্রশ্ন্রে মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে। এই সমস্যা শুধু মৌলভীবাজার জেলাতে নয়। খবর নিয়ে জানা যায় বৃহত্তর সিলেট বিভাগে বিটিসিএল-সরকারী আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) প্রতিষ্ঠানের সমস্যা দিচ্ছে ।
    এ ব্যাপারে ঢাকাস্থ বিটিসিএল’র সাপোর্ট সহকারী প্রকৌশলী মেহেদি হাসানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে এই প্রতিবেদক কে তিনি জানান, গত সপ্তাহে নেটে সমস্যা ছিল বর্তমানের কোন সমস্যা নাই। আমরা খোঁজে খোঁজে সমস্যা গুলো বের করে সমাধানের চেষ্টা করছি।কি কারনে সমস্যা হচ্ছে আমি তা সঠিকভাবে জানি না।গ্রাহকদের ভোগান্তির স্বীকারের কথা বললে তিনি বলেন, আমার কিছুই করার নাই। নেট আপ ডাউনের ব্যাপারে প্রোভাইড সেন্টারে সমস্যাও থাকতে পারে ।

    শ্রীমঙ্গল শহরের একজন ব্যবসায়ী জানান,আমি বিটিসিএল ব্রডভ্যান্ডর ইন্টারনেট ব্যবহার করি। ঘন ঘন লাইন আপ ডাউন করে এই যদি হয় বিটিসিএল’র ইন্টারনেট সেবার নমুনা তাহলে সরকারের ডিজিটাললাইজ তাহলে চলমান কার্যক্রম ব্যাহত হবে।