বায়তুল মোকাররমে মুসুল্লি-পুলিশ সঙ্ঘর্শে পুলিশসহ আহত অন্যারা

0
599
বায়তুল মোকাররমে মুসুল্লি-পুলিশ সঙ্ঘর্শে পুলিশসহ আহত অন্যারা

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ কুমিল্লায় একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআনুল কারিমের অবমাননার অভিযোগ তুলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্কতার মাঝেও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন ভাবে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ পাওয়া গেছে।
এদিকে ১৫ অক্টোবর শুক্রবার জুমার নামাজের পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম থেকে মিছিল বের করে মুসল্লিদের একটি অংশ। মিছিলটি কাকরাইলের নাইটিংগেল মোড়ে এলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।
এ সময় মুসল্লিরা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল ছুড়ে মারে। পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুমার নামাজের আগেই দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর পাশের একটি কেঁচি গেট বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় পুলিশ। ওই সময় একজন নিরাপত্তারক্ষী গেটটি বন্ধ করে দেন। এতে নামাজ পড়তে আসা একদল মুসল্লি উত্তেজিত হয়ে পড়ে।
নামাজ শেষে ওই গেটের তালা ভেঙে বেরিয়ে আসে একদল মুসল্লি। শুরুর দিকে অল্প কিছু মুসল্লিকে দেখা গেলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মুসল্লির সংখ্যা বাড়তে থাকে। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন। এরপর মুসল্লিরা রাস্তায় নেমে আসেন এবং একটি মিছিল বের করেন।

মিছিলটি কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড়ের কাছে এলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এ সময় মুসল্লি ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। মিছিলকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়েন এবং জবাবে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে মুসল্লিরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল আহাদ বলেন, “বিক্ষোভ মিছিলটি নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত যেতে দেওয়া হয়। কিন্তু তারা সেখানে গিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।“

মহানগর পুলিশের রমনা জোনের সহকারী কমিশনার বায়েজিদুর রহমান বলেন, “উত্তেজিত বিক্ষোভকারীদের একটি দল বায়তুল মোকাররম মসজিদ থেকে পল্টন হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড়ে আসে। এ সময় তাদের পুলিশ ব্যারিকেড দেয়। পুলিশি বাধা অতিক্রম করতে তারা ইট-পাটকেল ও লাঠি দিয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ চালায়। আক্রমণ প্রতিহত করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এতে পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন।“

পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এ সময় নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে তিনজন এবং পল্টন মোড় থেকে এক মুসল্লিকে আটক করে পুলিশ। সংঘর্ষের কারণে গুলিস্তান ও পল্টন এলাকায় আধা ঘণ্টার মতো গাড়ি চলাচল বন্ধ ছিল। সংবাদ লেখা পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান তিনি। তবে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের কড়া নজরদারি লক্ষ্য করা গেছে।
গত বুধবার ১৩ অক্টোবর দুর্গাপূজা চলাকালে কুমিল্লা শহরের একটি পূজামণ্ডপে মুর্তির উরুতে কোরআন শরিফ পাওয়ার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার জেরে কুমিল্লা-চাঁদপুরসহ দেশের কয়েকটি স্থানে পুলিশের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকার বিজিবি মোতায়েন করে। এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। এ ছাড়াও প্রাণ হানীর সংবাদ ও পাওয়া গেছে।
কুমিল্লার ঘটনা তদন্তে করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক তাদের শাস্তির মুখোমুখি করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা।