বাহুবলে গৃহবধূ মৃত্যু নিয়ে ধর্ষণ ও আত্মহত্যার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

    0
    257

    নূরুজ্জামান ফারুকী বিশেষ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জ জেলার বাহুবলে সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। পরিবারের দাবি ধর্ষণের পর হত্যা আর শ্বশুরালয়ের লোকজন বলছেন ‘আত্মহত্যা’।

    জানা যায়, গত ২২ নভেম্বর ঘটনাটি ঘটেছে হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার ফদ্রখলা গ্রামে। বিষয়টি জানাজানির পর এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। নিহত তানিয়া বাহুবল উপজেলার মির্জাটুলা গ্রামের সৌদি প্রবাসী নুরুল ইসলামের মেয়ে। অভিযুক্ত জানে আলম ফদ্রখলা গ্রামের হারুনুর রশিদের ছেলে। তার স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। এদিকে, মঙ্গলবার দুপুরে হবিগঞ্জের সিনিয়র এএসপি পারভেজ আলম আলম চৌধুরী ও বাহুবল মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ কামরুজ্জামানসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শন শেষে পুলিশ বলছে, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তাই এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।

    এদিকে প্রতিবেশীরা জানায়, অভিযুক্ত দেবর জানে আলম করোনার আগে দেশে ফেরার পর আর সৌদি যেতে পারেননি । সে প্রায়ই তানিয়াকে কুপ্রস্তাব দিতো। বিষয়টি শ্বশুর-শাশুড়িকে জানালেও কোনো সমাধান পাননি তানিয়া। এতে ক্ষিপ্ত হন জানে আলম। প্রতিশোধ নিতে ২২ নভেম্বর রাতে দরজা ভেঙে তানিয়ার ঘরে ঢুকে ধর্ষণ করে মুখে বিষ ঢেলে দেন তিনি। পরে স্থানীয়রা তানিয়াকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নেয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় পরদিন সকালে তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসকরা। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

    তানিয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে । এক পক্ষ দাবি করছে, তানিয়কে ধর্ষণের পর মুখে বিষঢেলে ও গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। আরেক পক্ষ বলছে, প্রবাসীর স্ত্রী তানিয়া বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন।

    নিহত তানিয়ার মামা আব্দুর রহিম বলেন ঘটনার সময় আমি সিলেটে ছিলাম। খবর পেয়ে পুলিশের সাথে ঘটনাস্থলে যাই।’ তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘তানিয়ার দেবর জানে আলমও সৌদি প্রবাসী। করোনা শুরুর আগে সে দেশে আসে। দেশে আসার পর থেকেই সে তার ঘরে স্ত্রী রেখেও তানিয়ার উপর কু-দৃষ্টি দেয়। একপর্যায়ে সে বার-বার কু-প্রস্তাব দিয়ে অতিষ্ট করে তুলে তানিয়াকে।
    সম্প্রতি বিষয়টি শ্বাশুড়ি সুফিয়া আক্তারকে জানায় তানিয়া। এরপর একে একে শ্বশুর হারুনুর রশিদ, ননদ বাপ্পি আক্তার ও জানে আলমের স্ত্রী ঝুমা আক্তার সহ পরিবারের সকলেই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হন। কিন্তু সব কিছু জেনেও তারা উল্টো দোষারোপ করেন তানিয়াকে। তিনি আরও বলেন, গত শনিবার রাতে তানিয়ার দরজার ছিটকিনি ভেঙ্গে রুমে প্রবেশ করে জানে আলম। এ সময় তাকে হয় ধর্ষণ করেছে না হয় ধর্ষণের চেষ্টা করেছে। ঘটনার সময় শোর-চিৎকার করে তানিয়া। শোর-চিৎকারের কারণে তাদের মান-সম্মান নষ্ট হয়েছে বলে তানিয়াকে মারধোর করেন শ্বশুর-শ্বাশুরি ও ননদ। একপর্যায়ে তাকে বাথরুমে আটকে রাখা হয়। পরে তাকে পরিকল্পিত ভাবে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়।’ তিনি জানান, এ হত্যাকান্ডের সাথে জানে আলমের পরিবারের সকলেই জড়িত।

    বাহুবল সার্কেলের সিনিয়র এএসপি পারভেজ আলম আলম চৌধুরী বলেন, প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের পর মুখে বিষ ঢেলে হত্যা করা হয়েছে- মর্মে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে,