বাইক্কা বিল অভয়াশ্রমের প্রায় দুই কোটি টাকার মাছ লুট। ১৪৪ ধারা জারি

    0
    452
    বাইক্কা বিল অভয়াশ্রম
    বাইক্কা বিল অভয়াশ্রম
    মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার বাইক্কা বিল অভয়াশ্রমের মাছ লুট হয়েছে বলে জানা গেছে। গত বুধবার রাত থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত এলাকাবাসী বিলের মাছ লুট করে নিয়ে যায়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধারণা, তারা প্রায় দুই কোটি টাকার মাছ লুট করেছে।
    এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাইক্কা বিল দেখভালের কাজে নিয়োজিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা সংগঠন আরএমওর সদস্যসহ আশপাশের গ্রামগুলোর প্রায় দেড় হাজার মানুষ মাছ লুটের ঘটনার সঙ্গে জড়িত।
    গতকাল সকালে বাইক্কা বিলে গিয়ে দেখা যায়, পুলিশের উপস্থিতিতে অসংখ্য মানুষ কোচ, পলো, জাল প্রভৃতি নিয়ে বিলে মাছ শিকার করছে। মাছগুলো বস্তা ও চাঙ্গাড়িতে করে পাশের হাজিপুর, বরুণা, ভৈরববাজার এবং পৌরসভার বাজারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে রুই, কাতল, মৃগেল, বোয়াল, গনিয়া, গ্রাসকার্প, চিতল প্রজাতির মাছের সংখ্যাই বেশি। ৩০ থেকে ৪০ কেজি ওজনের মাছও এতে রয়েছে।
    হাজিপুর, বরুণা, পশ্চিম ভাড়াউড়া, পশ্চিম শ্রীমঙ্গল গ্রামের বাসিন্দারা জানান, গত বুধবার বিকেলে আরএমওর লোকজনই প্রথমে বাইক্কা বিলের মাছ ধরে বিক্রি করে। এরপর ওই দিন রাতে বাইক্কা বিলের চারপাশের গ্রামের কিছু লোক বিলে নেমে মাছ শিকার করে। গতকাল সকালে এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। সকালের দিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ, সমন্বিত রক্ষিত এলাকা সহ-ব্যবস্থাপনা প্রকল্প ও উপজেলা মৎস্য বিভাগের লোকজনকে অসহায়ভাবে লুটের দৃশ্য অবলোকন করতে দেখা যায়। 
    দুপুর ১২টার দিকে মৌলভীবাজার থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এ সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রণধীর কুমার দেব, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহামঞ্চদ আশফাকুল হক চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান তোফাজ্জুল হোসেন ও কালাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল মতলিব বাইক্কা বিলে যান। এ সময় পুলিশ মাইকে লোকজনকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিলে বিল থেকে লোকজন উঠে যায়।
    আরএমওর লোকজন লুটের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে সংগঠনটির সভাপতি মো. আবদুস সোবহান বলেন, ‘এ অভিযোগ মিথ্যা।’ তবে তিনি বিলের মরা মাছ এনে বাজারে বিক্রি করার কথা স্বীকার করেন।
    উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান খান জানান, বিলের পানি কমে যাওয়ায় লুটের ঘটনা ঘটেছে। প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। পরিমাণ এখনো টাকার অঙ্কে নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। তবে তিনি আবারও লুটের আশঙ্কা করছেন।
    আইপ্যাক সিলেট অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সমীর চন্দ্র সমাদ্দার জানান, প্রায় দুই কোটি টাকার মাছ তারা লুট করেছে। বিলের ২৫ ভাগ মাছ লুট হয়ে গেছে।
    শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ্ বলেন, লুট হওয়া কিছু মাছ পুলিশ জব্দ করেছে। হরতালের দায়িত্বে থাকায় বাইক্কা বিলে ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে পর্যাপ্ত পুলিশ পাঠানো সম্ভব হয়নি। তবে বর্তমানে দুই প্লাটুন পুলিশ বিলে মোতায়েন আছে।
    ইউএনও মোহামঞ্চদ আশফাকুল হক চৌধুরী বলেন, বিল পাহারায় দুটি পুলিশ চৌকি বসানো হয়েছে।
    নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আশফাকুল হক চৌধুরী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাইক্কা বিলে ফোজদারি কার্যবিধি ১৪৪ ধারা জারি করেছেন।