আমার সিলেট 24 ডটকম,২৯অক্টোবরঃদুই ম্যাচের গত টেস্ট সিরিজটি ০-০ ব্যবধানে সমতার পর তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজের প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। আজ মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হবে দিবা রাত্রির ওই ম্যাচটি। বাংলাদেশের জন্য এই ম্যাচ ২৭৪ তম। আর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দলের বিপক্ষে ২২তম। এর আগের নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ২১টি ম্যাচে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। তন্মধ্যে ৫টিতে জয় পেয়েছে, হেরেছে ১৬টিতে। বাংলাদেশের মাটিতে মোট ১০টি লড়াইয়ে সমতা রয়েছে। অর্থাৎ উভয় দল জয় পেয়েছে ৫টি করে ম্যাচে। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ৬বার তাদের বিপক্ষে খেলেছে টাইগাররা। সবকটিতেই পরাজিত হয়েছে বাংলাদেশ। অবশ্য দিবারাত্রির ম্যাচের বিচারে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। এ পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে চারটি দিবা-রাত্রির ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর সবকটিতেই জয় পেয়েছে টাইগাররা। অপরদিকে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে ৫বার মুখোমুখি হয়েছে দল দু’টি। যার সবকটিতেই জয়ী হয়েছে নিউজিল্যান্ড। তাছাড়া ২০১৩ সালে অর্থাৎ চলতি বছর দেশের মাটিতে প্রথম ওডিআই ম্যাচ খেলতে নামছে টাইগাররা। সর্বশেষ নিজেদের মাটিতে ওডিআই খেলেছিল ২০১২ সালের ৮ ডিসেম্বর।
মিরপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে শেষ ওডিআই ম্যাচে টাইগারদের প্রতিপক্ষ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজে। ওই ম্যাচে ২ উইকেটে জয়লাভ করেছিল মুশফিকরা । জয়ের সে সুখ স্মৃতি নিয়েই কাল মাঠে নামবে মুশফিকরা। এর আগে ২০১০ সালে এই নিউজিল্যান্ডকেই ৪-০ ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ জিতেছিল টাইগাররা। সবকিছু মিলিয়ে সুখ-স্মৃতি নিয়েই কাল কিউইদের মুখোমুখি হবে স্বাগতিক বাংলাদেশ। অতীতের সুখ স্মৃতি থাকলেও চলতি বছরের পারফর্মেন্স খুব একটা ভাল হয়নি টাইগারদের। এসময় তারা যে দুটি সিরিজ খেলেছে তা বিদেশের মাটিতে। বছরের শুরুতে শ্রীলংকায় এবং পরবর্তীতে জিম্বাবুয়ের মাটিতে তিন ম্যাচের দুটি ওডিআই সিরিজে অংশ নিয়েছে মুশফিক বাহিনী। শ্রীলংকার সিরিজটি ১-১ ব্যবধানে ড্র করলেও এবং জিম্বাবুয়ের সিরিজটি ২-১ ব্যবধানে হার মেনেছে তারা।
অন্যদিকে নিউজিল্যান্ড এ বছর ওডিআই ম্যাচ খেলেছে মোট ১২টি। তন্মধ্যে ৬ ম্যাচে জয় আর ৫ ম্যাচে পরাজিত হয়েছে। ফলাফল হয়নি একটিতে। সব দিক মিলিয়ে ভাল সময় পার করেছে নিউজিল্যান্ড এগিয়ে। শুধু মাত্র একটি দিকে তারা পিছিয়ে রয়েছে টাইগারদের চেয়ে। সেটি হচ্ছে দুই পক্ষের সর্বশেষ লড়াই। ২০১০ সালের সেই সিরিজে ৪-০ ব্যবধানের পরাজয়টি এখনো তাড়া করছে কিউইদের। ২০১০ অক্টোবর মাসে প্রথম ম্যাচে ৯ রানে, দ্বিতীয় ম্যাচে ৭ উইকেট, তৃতীয় ম্যাচে ৯ রানে আার শেষ ম্যাচে ৩ রানে জিতে বাংলাদেশ হোয়াইট ওয়াশ করেছিল সফরকারী নিউজিল্যান্ডকে।
বিষয়টা এখনো ভুলে যাননি উল্লেখ করে সফরকারী দলের অধিনায়ক ব্রানডন ম্যাককালাম বলেন, আগের সিরিজে স্বাগতিক বাংলাদেশের কাছে হারের স্মৃতি আমরা অবশ্যই ভুলিনি। একেবারে একতরফাভাবে ৪-০ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছিলাম। ওই সিরিজটি সেভাবে জেতার যোগ্য ছিল বাংলাদেশ। আমরা কিছু বাজে শট খেলেছিলাম এবং খুব ভালভাবে সিরিজটার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। যতটা না আমরা প্রস্তুতি নিয়েছিলাম তার বিপরীতধর্মী পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে চেয়েছিলাম। তবে আমরা নিজেদের সে পারফরমেন্স থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। শেষবার আমাদের সঙ্গে যা ঘটেছিল এবার আমরা যদি ছকটা পাল্টে দিতে পারি সেটা অনেক ভাল বিষয় হবে। তবে এটাকে আমি বড় কোন প্রেরণাদায়ক বিষয় মনে করি না। আমাদের অন্য আরও অনুপ্রেরণামূলক বিষয় আছে যা দিয়ে এবার সিরিজ জিততে চাই।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম মনে করেন, এবারের সিরিজেও টাইগাররা ভাল করবে। তিনি বলেন, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ের প্রভাবটি অবশ্যই পড়বে। কিউইদের সঙ্গে যদিও তিন বছর পর খেলছি। তারপরও অতীতের স্মৃতি মনের মধ্যে থাকবেই। কারণ আমাদের সঙ্গে সর্বশেষ সিরিজে হেরেছিল এবং এর ব্যবধানটাও বড়। সেই দিক থেকে বলতে গেলে আমরা অনেক আত্মবিশ্বাস পাব। তবে এটিও ঠিক তিন বছরে অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়। ওদের টিম কম্বিনেশন অনেক পরিবর্তিত হয়েছে। ওদের ওনেক ভাল খেলোয়াড় রয়েছে। আমাদের দলেও পরিণত খেলোয়াড়ের সংখ্যা বেড়েছে। সবকিছু মিলিয়ে বলা যায় সঠিক দিনে যে ভাল করবে সেই জিতবে। আগে কি হয়েছে সেটি দেখে লাভ নেই। টেস্ট যেটা হয়েছে সেটা দেখেও লাভ নেই। আমাদের সামনে এখন অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ। ওডিআই ম্যাচে ওদের হারানো সহজ হবে না। আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলে তবেই সেটি সম্ভব। সবকিছু মিলিয়ে আজ জমজমাট একটি লড়াইয়ের অপেক্ষায় রয়েছে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের খেলাটি।