বর্ষা’র আগমনে হারিয়ে যাচ্ছে চিরচেনা কদমফুল

    0
    231

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,২৪মে,শংকর শীল,চুনারুঘাট(হবিগঞ্জ)থেকেঃ জ্যৈষ্ঠ মাসে বর্ষার আগমনে যেন কদম ফুলের হাসি ফুটেছে। প্রকৃতি সাজে ভিন্ন রুপে। তবুও চিরচেনা অপরুপ সুন্দরের অধিকারী বনফুল কদম।

    এ বর্ষা’য় কদমফুল ফুটেছে চুনারুঘাট উপজেলা সহ গ্রামাঞ্চলের এলাকায়। আর সেই চিরচেনা কদমফুল এখন হারিয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি ধোয়া আষাঢ়ের বাতাসে কদম ফুলের ঘ্রান যেন স্বপ্নের রাজ্যে দোলা খাচ্ছে। গ্রামবাংলার প্রকৃতি আর বৃষ্টির প্রতিটি রিমঝিম ফোঁটা যেন সবাইকে সম্মাহিত করছে। গ্রাম্যঞ্চলের বর্ষার আগমন বার্তা কদমফুল চুনারুঘাট সদর  কিংবা গ্রামাঞ্চলের  এলাকায় যেন আপন মহিমায় আগমন ঘটেছে। গাছে গাছে ফুটেছে কদমফুল। একটি দূ্র্লভ ফুলের নাম কদম। তবুও কদমগাছ এখন কম চোখে পড়ছে। এক সময় ছিল বর্ষা’র কদমফুল’কে নিয়ে গ্রামবাংলা’য় চর্চা হতো কবিতা ও ছড়া-গান সাহিত্যে ও উপন্যাস।

    শিল্প সাহিত্যে’র ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে কদমফুলের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। কদমফুল আমাদের বর্ষা ও আষাঢ়  মাসের দূত। প্রাকৃতির বুকে যেন সৌরভ বাতাসে দুলছে কদমফুল। জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষে আষাঢ়ের শুরুতে ব্যাপক ভাবে কদমফুল ফুটে। কদমফুলের মৌ মৌ গন্ধে যেন দৃষ্টি কাটছে সবার। বর্ষার অনুভূতি ও অপরুপ সৌন্দর্য্য দাবিদার কদমফুল। তবুও আমরা যেন বাড়ীর উঠানে একটি করে কদমগাছের সৌরভ পেতে চায়। কিন্তু বাড়ীর আঙ্গিনায় রাস্তায় দুপার্শ্বে ও পুকুরপাড়ে কদমগাছ ছিল চোখে পড়ার মত।

    আষাঢ়ের কদমগাছ ফুলে ফুলে ভরে থাকতো। কদমফুল সৌন্দর্য্য পিপাসুদের তৃপ্তি দিতো। তরুন-তরুনী’রা কদমফুল তাদের প্রিয়জনকে উপহার হিসেবে দিতো। মেয়েরা পড়তো খোঁপায়। খেলায় মেতে উঠতো শিশুরাও। ফলে কদমফুলের গাছ ঘরবাড়ী ও আসবাপত্রে কাজে ব্যবহার হতো। ম্যাচ ফ্যাক্টারী’তে কদমগাছের চাহিদা সবচেয়ে বেশী। কদমগাছ কমে যাওয়ায় এখন মানুষ ঐতিহ্যে ভুলতে বসেছে। সবাই এখন বাড়ীর আঙ্গিনায় ফলমূল ও ফুলের গাছ লাগাচ্ছে। ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে কদমফুলের গাছ।

    চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিরাজাম মুনিরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যপূর্ণ একটি দেশ। এ জন্য প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় প্রচুর পরিমানে গাছ লাগানো প্রয়োজন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে রক্ষায় কদমফুলের অবদান রয়েছে। কদমফুল সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করে তুলে। ফলে সবার মন খুশি থাকে।

    চুনারুঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জালাল উদ্দিন সরকার জানিয়েছেন, আমরা সবকিছু ভুলে গিয়ে বাড়ীর আঙ্গিনায় ফুল ও বনাজী বৃক্ষের চারা লাগানোর পাশাপাশি সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির জন্য কদমগাছ লাগানো দরকার। এমনকি বিভিন্ন প্রজাতির পাখি কদমফুল খায়। ব্যক্তি পর্যায় ছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান , হাট-বাজার ও সরকারী বেসরকারী জায়গায় কদমগাছ লাগানো প্রয়োজন। তাহলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পাবে। সৌন্দর্য্য ও মন ভাল রাখতে হলে কদম ফুলের বিকল্প নাই।

    এ বর্ষা’য় আমাদের সবাইকে এমপক্ষে ১টি করে কদমফুলের গাছ লাগানো প্রয়োজন।