বন্যা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে মৌলভীবাজারে হাজারো মানুষ:সংশ্লিষ্টদের খবর নেই !

    1
    255

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৩এপ্রিল,আলী হোসেন রাজনঃ খননের অভাবে নাব্যতা হারিয়েছে একসময়ের ঐতিহ্যবাহী খরস্রোতা মনু নদী। অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে বালু আর পলি উত্তোলনের ফলে ভেঙ্গেছে বাঁধের বিভিন্ন অংশ। আগত বর্ষা মৌসুমে বন্যা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন মৌলভীবাজারের নদীতীরের হাজারো মানুষ। তবে এই মুহুর্তে এ নিয়ে কোন মাথাব্যাথা নেই সংশ্লিষ্টদের।

    একসময়ের খরস্রোতা মনু নদী কালের আবর্তে হারিয়েছে তার প্রকৃত রূপ। গভীর ও বহতা মনু নদী হয়ে উঠেছে পলি ভরাট, হারিয়েছে নদীর নাব্যতা। যত্রযত্র অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে বালু আর পলি উত্তোলনের ফলে ফাঁটল ধরেছে উভয় তীরের নদী রক্ষা বাঁধে। ফলে আগত বর্ষা মৌসুম নিয়ে আতঙ্কে আছেন মৌলভীবাজারের নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। আশংকা করা হচ্ছে বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে নেমে আসা পানিতে ভয়াবহ বন্যার রূপ নিতে পারে মৌলভীবাজারে।
    লোকমুখে শোনা যায়, একসময় এ নদী দিয়েই নাকি চলেছে জাহাজ। মনুমুখ নৌবন্দর ছাড়াও মৌলভীবাজার শহরের পশ্চিমবাজারে ছিলো জাহাজঘাট, যা আজও জাহাজঘাট নামে পরিচিত। বৃটিশ আমলে মনু নদী দিয়ে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল করতো ভারতের আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্যে। আর এখন বালু উত্তোলনের জন্য ট্রাক নেমে যায় মনু নদীর মধ্যখানে।
    মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ , প্রশাসক আলহাজ্ব আজিজুর রহমান জানান অচিরেই খনন না করা হলে যে বর্ষা মৌসুমে বিপদের আশংকা রয়েছে ।
    অপরদিকে বর্ষা মৌসুমে মনু নদী হয়ে উঠে দুর্বার ও দুরন্ত। পলি ভরাটের কারণে কমে গেছে নদীর পানি ধারণের ক্ষমতা। ফলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ভেঙ্গে যায় নদীর বন্যা প্রতিরোধ বাঁধ। বন্যায় আক্রান্ত হয় জেলা সদর সহ পার্শ্ববতী উপজেলার বেশক’টি ইউনিয়ন। যথাসময়ে সংস্কার কাজ না করায় প্রতিবৎসর বাঁধ নির্মাণ ও মেরামত বাবত কোটি কোটি টাকা ভেসে যায় নদীর স্রোতে।
    তবে নদীর অতিরিক্ত বাঁক ও পলি ভরাটকেই নদী ভাঙ্গনের মূল কারণ হিসেবে দেখছেন মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফয়জুর রব । শীঘ্রই নদী খননের কোন পরিকল্পনা নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে বাঁধ সংস্কারের কাজ করার পরিকল্পনা প্রক্রিয়াধীন আছে।
    জানা গেছে, আভ্যন্তরীণ নৌ চলাচলের সুবিধার্থে ১৯৩৫ সনে একবার মনু নদীতে ড্রেজিং করা হয়েছিলো। ইতিমধ্যেই অনেকে হারিয়েছেন বাড়িঘর। তবে আর যাতে কাউকে সর্বস্বহারা না হতে হয় এমন পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে তীরবর্তী লোকজন। পরিকল্পিতভাবে বালু ও পলি উত্তোলন করা হলে হয়তো নদীর সমস্যাগুলো কিছুটা হলেও লাঘব হতো। এমন অভিমত প্রকাশ করেছেন অভিজ্ঞ মহল।