বন্যপ্রাণীর শুভাকাঙ্ক্ষী তানিয়ার ইন্তেকাল

    0
    509
    প্রিতম পাল,শ্রীমঙ্গল থেকে: বন্যপ্রাণীর শুভাকাঙ্ক্ষী তানিয়া ইন্তেকাল  করেছেন “ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।” দু’দিন হলেও স্মৃতির পাতা থেকে জানা যায় তার দিনকাটতো বন্যপ্রাণীদের নিয়ে। এর বাইরে যেন তাঁর আর কোনো জগৎই ছিলোনা। কখনও উদ্ধার হওয়া আহত বন্যপ্রাণীর সেবা-শুশ্রূষায় ব্যস্ত থাকতেন, কখনও বা নতুন কোনো বন্য প্রাণীর খোঁজে বনবাদাড় চষে বেড়াতেন। ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন বন্যপ্রাণী সেবাকেন্দ্র ‘সোল’ (সেভ আওয়ার আনপ্রোটেক্টেড লাইফ)।
    অসুস্থ বন্যপ্রাণীদের উদ্ধারের পাশাপাশি নিজ ঘরে রেখে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তুলে আবারো তার আপন নিবাসে ফিরিয়ে দিতেন তিনি। কোন কোন প্রাণীর ক্ষেত্রে ৪/৫ মাস ঘরে রেখে চিকিৎসা দিতে হত। এখন পর্যন্ত ৩০/৩৫ প্রজাতির ৫ হাজারেরও অধিক পাখি এবং ৮/৯  প্রজাতির ৪ শতাধিক বন্যপ্রাণীকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তুলেছেন নিজের স্বেচ্ছাশ্রমে।
    তিনি আর কেউ নন বন্যপ্রাণী সেবক ও সংরক্ষক তানিয়া খান। পড়াশোনা করেছেন ইংরেজি সাহিত্যে। হয়েছেন বন্যপ্রাণী গবেষক ও সংরক্ষক। মূলত, ২০০৬ সাল থেকেই বন্যপ্রাণীদের নিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি ।
    বন্যপ্রাণীর এই পরমবন্ধু বুধবার(১৩ মার্চ) সকালে হঠাৎই অকালে পাড়ি জমালেন পরপারে। বুধবার সকালে এলাকাবাসী কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন তানিয়াকে। প্রাথমিকভাবে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
    এ ব্যাপারে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) শামসুল মুহিত চৌধুরী বলেন, ধারণা করা হচ্ছে তিনি ঘুমের মধ্যেই হার্টঅ্যাটাকে মারা গেছেন। উনার সাড়াশব্দ না পেয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লোকজন দরজা ভেঙে মৃত অবস্থায় পান উনাকে।
    এসময় তিনি আরও বলেন, তানিয়া খান ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার এম মুনির আহমেদের স্ত্রী। বৈবাহিক জীবনে তিনি ৩ মেয়ে এবং ১ ছেলে সন্তানের জননী।
    ২০১৫ সালে তার স্বামী দুর্ঘটনায় মারা যান। তারপর থেকে তিনি বন্যপ্রাণী গবেষণার কাজে মৌলভীবাজারেই থেকে যান।
    উল্লেখ্য, সম্প্রতি মৌলভীবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি চারদিন আইসিইউতে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছিলেন।