প্রয়োজনে গুলিও চালাতে পারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী

    0
    228

    আমারসিলেট24ডটকম,২৮ডিসেম্বরঃ বিএনপির “মার্চ ফর ডেমোক্রেসি”র কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করেছে পুলিশ। রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে কেউ সহিংসতা ঘটানোর চেষ্টা করলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে গুলিও চালাবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। নিরাপত্তার জন্য রাজধানীতে পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবির ২০ হাজারের বেশি সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। এর সঙ্গে কয়েক হাজার গোয়েন্দা সদস্য সারা ঢাকায় দায়িত্ব পালন করবে। এরই মধ্যে সহিংসতা রোধে কি করা যায় সে বিষয় নিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকও করছেন বলে জানা যায়।

    আরও জানা গেছে, এবারের কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য পুলিশের তরফ থেকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। ফলে বিএনপি নেতারা ঘোষনা দিয়েছেন যে যেখানে পারেন সেখানে এই কর্মসূচি পালন করবেন। তাদের এই ঘোষণার ভিত্তিতে রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি থানা এলাকায় পৃথক নিরাপত্তা ব্যবস্থার আয়োজন করা হয়েছে। রাজধানীর কোন কোন থানা এলাকায় সহিংসতার ঘটনা ঘটতে পারে সে ধরনের তথ্যও পেয়েছে গোয়েন্দারা। সেই অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে বলে পুলিশের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার সূত্রে জানা গেছে।

    সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এই কর্মসূচি নিয়ে আজ দুপুরে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সে একটি সভা হয়েছে। সেই সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদ, র‍্যাবের মহা-পরিচালক মোখলেছুর রহমান, ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোঃ মনিরুল ইসলামসহ উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র জানায়, ওই বৈঠকে বিএনপির কর্মসূচির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার। তিনি বলেন, “মার্চ ফর ডেমোক্রেসি” উপলক্ষে কেউ যদি নাশকতার চেষ্টা চালায় তা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    আজকের এই সমাবেশ উপলক্ষে নাশকতা ঠেকাতে পুলিশের সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করবে বিজিবি ও র্যাব। গত ক’দিন ধরে পুলিশের সঙ্গে বিজিবি ও র‍্যাব মিলে যৌথভাবে রাজধানীসহ দেশের কয়েকটি অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছে। বিজিবির যেসব সদস্য যেৌথ বাহিনীর সঙ্গে কাজ করছেন তারই আজকের কর্মসূচিতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে কাজ করবেন।

    বিজিবি সূত্রে জানা যায়, আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সারা দেশে চার হাজারের মতো বিজিবি সদস্য দায়িত্ব পালন করছে। এর মধ্যে  রাজধানীতে চার শতাধিক বিজিবি সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।জানা যায়,’আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় বিজিবি কাজ করে যাচ্ছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারের তরফ থেকে যে ধরনের সহযোগিতা চাওয়া হবে তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে বিজিবি।
    কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে র‍্যাবের প্রতিটি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। সারা দেশে তাদের ৬ হাজারের বেশি সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। এর মধ্যে রাজধানীতে দায়িত্ব পালন করবে আড়াই হাজারের বেশি সদস্য। তারা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করবে। যে কোন পরিস্থিতি নাশকতা মূলক কর্মকাণ্ড প্রতিহত করার জন্য র্যাবের প্রতিটি সদস্যকে নির্দেশ দেওয়া হয়েজাবলে জানা যায়।
    পুলিশ সূত্রে জানা যায়, “মার্চ ফর ডেমোক্রেসি” কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকেই গোয়েন্দারা মাঠে নেমেছেন। তারা দেখছেন এই কর্মসূচির আড়ালে নাশকতার কর্মকাণ্ড ঘটাতে পারে কি না। গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য রয়েছে, এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটাতে পারে বিএনপি, জামায়াত শিবির কর্মীরা।এসব কারনেই রাজধানীতে তাদেরকে এই কর্মসূচির পালনের জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তরফ থেকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। রাজধানীর প্রতিটি মেস বাড়ি, হোটেলের উপর নজরদারী করা হচ্ছে। যৌথ বাহিনী শুক্রবার রাতে রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে দুই শতাধিক লোককে আটক করেছে। যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
    পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সূত্রে জানা যায়, বিএনপির এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যাতে সহিংসতার ঘটনা না ঘটে সে জন্য দেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রাজধানীর রেলস্টেশন, বাস ও সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া গুলশান বারিধারায় কূটনৈতিক পাড়ায়ও অতিরিক্ত নিরাপত্তার আয়োজন করা হয়েছে। এ কর্মসূচি উপলক্ষে পুলিশের প্রতিটি থানা, ইউনিটের পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের সড়ক দ্বিপে থাকা ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা দিয়ে নেতা-কর্মীদের গতিবিধি দেখা যাবে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও ছবি তুলবেন। দেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রাজধানীতে বসানো হয়েছে শতাধিক চেক পোস্ট। সেসব চেক পোষ্টে সন্দেহভাজনদের দেহ তল্লাশি করা হচ্ছে এবং কাল ও হবে বলে জানা যায়।